বছরশেষেও ফাঁকা বুলিই সম্বল, জ্বলন্ত সমস্যা নিয়ে নীরব প্রধানমন্ত্রী

Must read

নয়াদিল্লি: ইংরেজি বছরের শেষলগ্নে দাঁড়িয়েও সত্য গোপন করার চিরাচরিত বদভ্যাস ছাড়তে পারলেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ রবিবারের ‘মন কি বাত’ (mann ki baat) রেডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রীর মুখে শোনা গিয়েছে উন্নয়ন আর সাফল্যের বস্তাপচা বুলি৷ সুযোগ বুঝে আরও একবার তিনি অপারেশন সিঁদুরের জয়গান করতে পিছপা হননি৷ ভারতীয় সেনার কৃতিত্বে সরকারের ভাগ বসানোর চেষ্টাতেও কসুর করেননি তিনি৷ ক্রীড়াক্ষেত্রে দেশের সাফল্য, আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে পাড়ি দেওয়া প্রথম ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লার বিষয়ে প্রভূত প্রশংসাও শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়৷ অথচ দেশের আমজনতার দৈনন্দিন জ্বলন্ত সমস্যাগুলি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কোনও শব্দ খরচ করেননি৷

বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলা নারী নির্যাতন, সংখ্যালঘু মুসলিম এবং খ্রিস্টানদের উপরে লাগাতার হামলা, জঙ্গি অনুপ্রবেশ, বছরে ২ কোটি বেকারের চাকরির প্রতিশ্রুতিভঙ্গ, নীরব মোদি-বিজয় মালিয়া- মেহুল চোকসিদের মতো আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে দুষ্ট অপরাধীদের দেশে প্রত্যাবর্তনে ব্যর্থতা, সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তোলা মূল্যবৃদ্ধির মতো ইস্যু নিয়ে রবিবার পুরোপুরি নীরব থেকেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ কয়েক সপ্তাহ আগে ইন্ডিগো বিমান পরিষেবার বিভ্রাটে দেশবাসী নাজেহাল হয়েছে, কোটি কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে৷ সেই বিষয় নিয়েও এদিন পুরোপুরি নীরব থেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ রাজধানী দিল্লির ভয়াবহ বায়ুদূষণ নিয়েও তিনি পুরো মৌনতা বজায় রেখেছেন৷

কীভাবে পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় নৃশংস হামলা চালানো জঙ্গিরা ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল, কীভাবে এখনও লাগাতার ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করছে পাকিস্তানের মদতপ্রাপ্ত জঙ্গিরা, সেইসব বিষয় নিয়ে এদিন প্রধানমন্ত্রীর মুখে শোনা যায়নি একটিও শব্দ৷ কীভাবে দেশের কোটি কোটি বেকাররা সরকারি চাকরি পাবেন, সেই বিষয়ে কোনও দিশা দেখানোর চেষ্টাই করেননি নরেন্দ্র মোদি৷

আরও পড়ুন-কাজ না করলে অপসারণ, পুরপ্রধানদের কড়া বার্তা

প্রধানমন্ত্রীর এই নীরবতাকে নিশানা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানকে কাঠগড়ায় তুলে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার ডেপুটি লিডার সাগরিকা ঘোষ বলেন, বায়ুদূষণ সংকট এবং ইন্ডিগো বিমান পরিষেবা সংকটের কোনও সমাধান করতে পারেনি মোদি সরকার৷ এরা দেশ চালাতে পুরোপুরি অক্ষম৷ আসলে মোদি সরকার দেশের ধনী অপরাধীদের জন্য একটি ট্রাভেল এজেন্সি হিসেবে কাজ করছে৷ ২০২৫ সালে মোদির তথাকথিত ‘আচ্ছে দিন’ মিথ্যা বলে প্রকাশিত হয়েছে। তোপ সাগরিকার। একই সুরে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে কলকাতা দক্ষিণের তৃণমূল সাংসদ মালা রায় বলেন, মোদি সরকারের ভিত্তিটাই মিথ্যের উপরে প্রতিষ্ঠিত৷ যে সরকার নিজেদের দেশের সীমান্ত পাহারা দিতে পারে না, যে সরকার বেকারদের চাকরি দিতে পারে না, মহিলাদের নিরাপত্তা দিতে পারে না, গরিবদের চোখের জল মুছতে পারে না, দেশের বেহাল অর্থনীতিকে দিশা দেখাতে পারে না, বিদেশে গচ্ছিত কালো টাকা ফেরাতে পারে না, তারা মিথ্যাচার ছাড়া আর কী করবে?

Latest article