প্রতিবেদন : যত দিন যাচ্ছে ব্যর্থতার তালিকা ততই দীর্ঘায়িত হচ্ছে কেন্দ্রের। পেট্রোল-ডিজেল-গ্যাস, ভোজ্যতেল-সহ নানা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বেলাগাম মূল্যবৃদ্ধির পরে এবারে ব্যাপকহারে দাম বাড়তে চলেছে চালের। বাড়তে শুরু করেছে অনেক আগেই। খোলাবাজারে খুদের দাম কেজি প্রতি ১৬ টাকা থেকে বেড়ে ২২ টাকা হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন-পঞ্চায়েতে অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা
এবারে চালের দামবৃদ্ধি অতিক্রম করতে চলেছে বিপদসীমা। নেপথ্যে অবশ্যই কেন্দ্রের ভ্রান্ত কৃষিনীতি। যার অবশ্যম্ভাবী পরিণাম এবারে প্রতিফলিত হয়েছে ধানের বপনপর্বেই। খরিফ মরশুমে ধানের বপন কম হওয়ার ফলে ৬০ থেকে ৭০ লক্ষ টন ধান কম উৎপাদন হয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে এক বড় ধাক্কা। কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দেশের অর্থনীতি। অনিশ্চয়তার কালো মেঘ কৃষিজীবীদের পরিবারে। একদিকে সার এবং কৃষি যন্ত্রাংশের দাম বাড়ানো হচ্ছে অযৌক্তিকভাবে, অন্যদিকে কিন্তু ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পাচ্ছেন না কৃষকরা। ফলে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। চালের দাম বাড়লে তার প্রভাব বাজার অর্থনীতিতে পড়তে বাধ্য। লাগামছাড়া দামবৃদ্ধির আশঙ্কা অন্যান্য খাদ্যসামগ্রীরও।
আরও পড়ুন-সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার নিয়ে আইন ও রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্ক
স্বাভাবিকভাবেই চরম সঙ্কটের মুখোমুখি হবেন আমজনতা। কারণ, দেশের মোট ধানের ৮৫ শতাংশই উৎপাদিত হয় খরিফ মরশুমে। দেশে ধানের ফলন নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধির আরও একটি বড় কারণ, আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা। জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝে অনিয়মিত বৃষ্টিপাত এবং দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু এখনও বিদায় না নেওয়ায় গভীর সঙ্কটের মুখোমুখি দেশে ধানের ফলন। প্রশ্ন উঠেছে, দেশে খাদ্যাভাব দেখা দিলে কেন্দ্র তা সামাল দেবে কীভাবে? প্রকৃতির প্রতিকূলতা যাতে ধানের ফলনে ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে না পারে তারজন্য আগাম ব্যবস্থা কেন্দ্র নেয়নি কেন?
আরও পড়ুন-কাল খুলছে টালা ব্রিজ
এখন তো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির দৌলতে অনেক আগেই কেন্দ্র জানতে পারছে আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি। তা হলে সেই অনুযায়ী আগাম সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে না কেন? পর্যাপ্ত পরিমাণে চাল আগে থেকে মজুত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাই বা নেয়নি কেন কেন্দ্র? প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বীজ বপনের এবং রোপনের জন্য কৃষিজীবীদের আধুনিক প্রযুক্তিগত সহায়তা জরুরি ভিত্তিতে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়নি কেন? লক্ষ্যণীয়, গত খরিপ মরশুমে সারা দেশে ধানের চাষ হয়েছিল ৪০৩.৫৮ লক্ষ হেক্টর জমিতে। এবারে এখনও পর্যন্ত চাষ হয়েছে ৩২৫.৫১ লক্ষ হেক্টর জমিতে। অত্যন্ত উদ্বেগজনক ইঙ্গিত দেশের অর্থনীতির পক্ষে। এই সঙ্কট থেকে উদ্ধারের পথ জানা আছে কি গেরুয়া শিবিরের?