প্রতিবেদন : যোগীরাজ্যে সরকারের আজব ফরমানে এবারে পুলিশের নির্লজ্জ গেরুয়াকরণ। এই অপচেষ্টা অবশ্য নতুন কোনও ঘটনা না হলেও এতদিন পর্যন্ত তা ছিল অলিখিত। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পুলিশকে নিজেদের খেয়ালখুশি মতো অপব্যবহার করে আসছিল গেরুয়া সরকার। কিন্তু এবারে একেবারে লজ্জাঘেন্নার মাথা খেয়ে পুলিশের গায়ে পুরোহিতের পোশাক পরিয়ে দিল বিজেপি সরকার। বেনারসের কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের গায়ে আর দেখা যাবে না চিরপরিচিত খাকি উর্দি। তার বদলে তাঁদের পরনে থাকবে গেরুয়া ধুতি-পাঞ্জাবি, কপালে তিলক এবং গলায় ঝুলবে রুদ্রাক্ষের মালা।
আরও পড়ুন-আজ নেত্রীর জনসভা ডাবগ্রামে, অভিষেকের রোড শো কোচবিহারে
এই পোশাকেই গর্ভগৃহে ভিড় সামলাবে পুলিশ। প্রশাসনের অদ্ভুত যুক্তি, পুলিশ গেরুয়া পোশাকে থাকলে গর্ভগৃহে শৃঙ্খলারক্ষা নাকি অনেক সহজ হবে। মানুষ তাঁদের কথা শুনবেন। এখানেই শেষ নয়, এই পোশাক পরে পুলিশ নাকি সতর্কতার বিষয়ে সচেতনও করবে পুণ্যার্থীদের। যোগী সরকারের এই অদ্ভুত নির্দেশে সমালোচনার ঝড় উঠেছে দেশজুড়ে। বিস্মিত আমজনতাও। প্রশ্ন উঠেছে, কোন যুক্তিতে পুলিশের গায়ে গেরুয়া পোশাকের ফরমান। এর তীব্র নিন্দা করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব। পূজারি বা পুরোহিতের পোশাকে পুলিশকর্মীদের ভিডিও তিনি পোস্টও করেছেন সামাজিক মাধ্যমে। প্রশ্ন তুলেছেন, পুলিশের ঠিক কোন নিয়মে পুলিশকর্মীদের পূজারির পোশাক পরতে বাধ্য করা হচ্ছে? কার নির্দেশে এই ঘটনা? যদি কোনও সরকারি আধিকারিক এই নির্দেশ দিয়ে থাকেন তবে তাঁকে এখনই চিহ্নিত করে বরখাস্ত করার দাবি তুলেছেন অখিলেশ। তাঁর যুক্তি, এভাবে চলতে থাকলে যে কোনও দিনই কোনও অপরাধীরা এই ধরনের পোশাক পরে বিভ্রান্ত করতে পারে মানুষকে। বিপর্যস্ত হতে পারে মন্দিরের গোটা নিরাপত্তা ব্যবস্থাই। তখন কী জবাব দেবে রাজ্য সরকার? প্রশাসনই বা কী বলবে?
সবচেয়ে বড় কথা, পুলিশকর্মীদের সকলেই যে হিন্দু তা তো নয়। রয়েছেন অন্যন্য ধর্মাবলম্বীরাও। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে কেন তাঁদের গেরুয়া পরতে বাধ্য করা হবে? প্রশ্নটা এখানেই।