বিকাশ ভবনে (Bikash Bhawan Agitation) চাকরিহারা বিক্ষোভকারীদের বিশৃঙ্খলার প্রতি ৭ ঘণ্টা সংযম দেখিয়েছে পুলিশ। কিন্তু যখন বিকাশ ভবনের কর্মীদের বাড়ি যেতে বাধা দেন আন্দোলনকারীরা। তখন সেই কর্মীদের স্বার্থে বলপ্রয়োগ করতে বাধ্য হয় পুলিশ। বৃহস্পতিবার, বিকাশভবনের সামনে চাকরিহারাদের বিক্ষোভ সম্পর্কে শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানান রাজ্য পুলিশের এডিজি জাভেদ শামিম, এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার।
জাভেদ শামিম বলেন, কিছু সংবাদ মাধ্যমে দেখানো হচ্ছে পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল। কিন্তু বিষয়টি আদৌ তা নয়। পুলিশ সংযম দেখিয়েছে। গত ৯ দিন ধরে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছিলেন চাকরিহারারা। তাতে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছে পুলিশ। এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার বলেন, “চাকরিহারা বিকাশ ভবনে ১০ দিন শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছিলেন। গতকাল অবস্থান অন্যরকম তেহারা নেয়। দু-আড়াই হাজার লোক চলে আসেন। ব্যারিকেড ভাঙেন। পুলিশ অনুরোধ করলেও শোনেননি। পুলিশকে ধাক্কাধাক্কি করে অবস্থান বিক্ষোভ করেন। কাউকে বেরতে দেবেন না বলেন। পুলিশ সচেতনভাবে কিছু করেনি। পূর্ণ সম্মান দেখিয়ে, ধৈর্য দেখিয়েছে পুলিশ। অ্য়াকশন নিলে গেট ভাঙার সময় করা যেত। ৭ ঘণ্টা ধরে পুলিশ বুঝিয়েছে। বিকাশ ভবনে ৫৫টি দফতর, ৫০০-৬০০ কর্মী রয়েছেন। সন্ধের পর তাঁরা বেরতে চান। কিন্তু আন্দোলনকারীরা এককাট্টা বেরতে দেবেন না। পুলিশ তা সত্ত্বেও কিছু করেনি। বুঝিয়েছেন। মাইকিং করা হয়।”
সুপ্রতীম সরকারের কথায়, “বিকাশ ভবনের (Bikash Bhawan Agitation) ভিতরে অনেকে প্যানিক করতে শুরু করেন। ফোন করেন। একজন সন্তানসম্ভবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাড়ি ফিরতে চান। একজনের মা অসুস্থ। তিনি অসহায়ভাবে ঝাঁপ দেন। তাঁর পা ভেঙে গিয়েছে। বারবার চেষ্টা করেছি। উচ্ছৃঙ্খল বাধা এসেছে। তারপরেও আমরা বারবার মাইকিং করি। শান্তিপূর্ণ অবস্থানে কোনও বাধা নেই। কিন্তু যাঁরা বিনা দোষে বিকাশ ভবনে আটকে আছেন তাঁদের বেরতে দেওয়ার কথা বলা হয়। নিরাপদে কর্মীদের ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়। তখন আন্দোলনকারীরা পুলিশের উপর আক্রমণ করে। ধাক্কাধাক্কি করে।”
আরও পড়ুন- ফল প্রকাশ উচ্চ মাধ্যমিকের বৃত্তিমূলক পরীক্ষার, উত্তীর্ণদের শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর
পুলিশের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কোনও বাধা নেই। তবে সরকারি অফিস ভাঙচুর করা হলে সেটি আন্দোলন শান্তিপূর্ণ নয়। ”যদি আন্দোলন করার অধিকার থাকে, তবে সারাদিন চাকরির পর বাড়ি ফেরার অধিকার রয়েছে কর্মীদের। যাঁরা বেরচ্ছিলেন তাঁদের প্রাণ সংশয়ের ঝুঁকি ছিল। বের করার জন্য় যতটা বলপ্রয়োগ করার ততটুকু হয়েছে। তা স্বীকার করতে কোনও দ্বিধা নেই।”
আন্দোলনকারী শিক্ষকদের উপর লাঠিচার্জ নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে এডিজি দক্ষিণবঙ্গ বলেন, “কীসের প্রোটোকল মানা হয়নি। ভিডিও, অডিও রয়েছে। বারবার অনুরোধ করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও শোনেননি। ধৈর্য ও সংযমের চূড়ান্ত পরিচয় দিয়েছে পুলিশ। যেটা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বলে মনে করেছি। সেটা হয়েছে। ১৯ জন পুলিশ জখম হয়েছেন।” এই ঘটনার নেপথ্যে কারও উস্কানি রয়েছে বলেই সন্দেহ পুলিশের। জাভেদ শামিম জানান, যারা উস্কানি দিয়েছে তাঁদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।