বাংলায় কথা বলা মানেই বাংলাদেশি বলে মনে মনে করেছে ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনুমতি ছাড়াই বাঙালিদের পুশব্যাক করা হচ্ছে। কিন্তু কেন? অসম, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের দোষ কোথায়? সেখানে তাঁদের হেনস্থা করা হচ্ছে। এসব নিয়ে নীরব প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার দুর্গাপুরে আসছেন। সেখানে সভা করবেন। সেই সভায় একাধিক প্রশ্নের জবাব চেয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা (Shashi Panja)।
সাংবাদিক বৈঠকে শশী পাঁজা (Shashi Panja) বলেছেন,”দুর্গাপুরে মোদিজির সভা রয়েছে। দুর্গাপুরের সভা করে আবার দিল্লিতেও ফিরবেন। প্রশ্ন হচ্ছে, আগে যখন মোদিজি বাংলায় আসতেন তখন বাংলায় কথা বলার চেষ্টা করতেন, এবার কি আপনি বাংলায় বলবেন? বাংলা বলাটা কি অপরাধ? বাংলা বলাটা অপরাধ এটা তো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি দেখেই বোঝা যাচ্ছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা, অপদস্ত করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে না জানিয়ে পুশব্যাক করে দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত নীরব। দুর্গাপুরে আপনার ভাষণে বাংলা বলাটা অপরাধ কিনা মানুষ তা শুনতে চায়, তা আপনি বলবেন। দুর্গাপুর থেকে আপনি দিল্লি ফিরবেন। দিল্লিতে একবার ঘুরে আসুন বসন্ত কুঞ্জ কলোনি, আজাদ হিন্দ কলোনি, জয় হিন্দ কলোনিতে। যেখানে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের কীভাবে অপদস্ত করা হচ্ছে তা সেখানে দেখা যাবে। গতকাল দেখেছি উত্তরপ্রদেশে মিষ্টির দোকানে পুলিশ পৌঁছে গিয়েছে বাংলা ভাষায় কথা বলা হচ্ছে কি না তা দেখতে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন চিহ্নিত করতে যে কারা বাংলা বলছেন কারা বাংলা লেখেন। তাঁরা সকলে বাংলাদেশি। এই ফরমান দেওয়ার অধিকার কি প্রধানমন্ত্রী আপনি দিয়েছেন? কেন্দ্রকে এবার জবাব দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে বলতে হবে হ্যাঁ আপনারা সহমত প্রকাশ করেছেন যে বিজেপি শাসিত রাজ্যে ওড়িশা, ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, অসমে এই ফরমান জারি করার কথা। কবিগুরু, নজরুলের বাংলায় মোদিজে স্বাগতম জানাই কিন্তু উত্তর আপনাকে দিতেই হবে। জাতীয় সঙ্গীত কি তাহলে কাল থেকে গাওয়া বন্ধ করে দেবেন? পাঞ্জাবিতে কথা বললে সে খালস্তানি, কেন? ”
আরও পড়ুন-ফের গাফিলতি রেলের! জনশতাব্দীর ধাক্কায় তিন হাতির মৃত্যু ঝাড়গ্রামে
মন্ত্রী আরও বলেছেন,”দ্বিতীয়ত, পহেলগাঁও হামলার ৮৮ দিন পার। উগ্রবাদীরা পহেলগাঁও এসে পর্যটকদের মেরে চলে গেল আজ অবধি জঙ্গিদের ধরা গেল না। দায়বদ্ধতা কার? লেফটেন্যান্ট জেনারেল মনোজ সিনহা বলছেন, আমি দায় নিচ্ছি। কেন্দ্র কেন কিছু বলছে না? আমরা দাবি করছি সংসদে পহেলগাঁও নিয়ে বিশেষ অধিবেশন হোক, এ বিষয়েও নীরব প্রধানমন্ত্রী, কেন?”
মন্ত্রীর আরও সংযোজন,”আমরা জানি ২০২৬ সালে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। আপনি পর্যটক। আপনি ভোটের প্রচার করতে এসেছেন।”
তৃণমূল কংগ্রেসের তরফেও প্রধামন্ত্রীর কাছে একাধিক প্রশ্নের জবাব চেয়েছে। ১) বাংলা বলা কি অপরাধ? ২) বাংলা বলা অপরাধ হলে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে তিনিও কি সেই অপরাধে দোষী? ৩) সেটা না হলে বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলা বলার অপরাধে বঙ্গভাষীদের আটক করে হেনস্থা করা হচ্ছে কেন? ৪) কোন আইনে ভাষার ভিত্তিতে সরকার মানুষকে শাস্তি দিচ্ছে? ৫) বিজেপি কি সত্যিই বিশ্বাস করে এভাবে বাংলায় ক্ষমতা দখল করা সম্ভব?