শেখ হাসিনা কতদিন ভারতে থাকবেন তা তিনিই ঠিক করবেন

শেখ হাসিনা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্যর্পণের আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের অবস্থান জানালেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

Must read

নয়াদিল্লি: শেখ হাসিনা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্যর্পণের আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের অবস্থান জানালেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। শনিবার তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে থাকাটা তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, যা তাঁকে এই দেশে আসার জন্য বাধ্য করা পরিস্থিতির দ্বারা প্রভাবিত। সম্প্রতি ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের সাজার পর তাঁকে প্রত্যর্পণের জন্য ভারতকে আনুষ্ঠানিক আবেদন করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এই প্রেক্ষাপটে জয়শঙ্করের এদিনের মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

আরও পড়ুন-চরম বিশৃঙ্খলা, যাত্রী- হয়রানি, বেলাগাম টিকিটমূল্য: মনিটরিং কোথায় কেন্দ্রের?

গত বছর আগস্ট মাসে গণ-অভ্যুত্থানের পরিস্থিতিতে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন হাসিনা। বর্তমানে দিল্লির এক অজ্ঞাতবাসে আছেন তিনি। গতবছরের হিংসাত্মক আন্দোলনে শত শত মানুষ নিহত ও হাজার হাজার আহত হওয়ার মতো অশান্ত পরিস্থিতিতে হাসিনা ভারতে পালিয়ে আসেন। গত মাসে ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল তাঁর সরকারকে গত বছর ছাত্র-নেতৃত্বাধীন প্রতিবাদ বিক্ষোভের উপর নির্মম দমন-পীড়নের জন্য ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে’ অভিযুক্ত করেছে। পাশাপাশি ৭৮ বছর বয়সি হাসিনাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ ছাড়াই মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। এরপর দফায় দফায় বাংলাদেশ সরকারের তরফে শেখ হাসিনার ভারতবাস নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। এই অবস্থায় হাসিনা যতদিন চান ততদিন ভারতে থাকতে স্বাগত কিনা, শনিবার হিন্দুস্তান টাইমস লিডারশিপ সামিটে এই প্রশ্ন করা হয় জয়শঙ্করকে। বিদেশমন্ত্রী বলেন, দেখুন, এটা একটা ভিন্ন বিষয়, তাই না? তিনি (শেখ হাসিনা) একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এখানে এসেছেন, এবং আমি মনে করি সেই পরিস্থিতি স্পষ্টভাবে তাঁর ভাগ্যে কী ঘটবে তার একটি কারণ। কিন্তু আবারও বলছি, এটা এমন একটা বিষয় যেখানে তাঁকে নিজেকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। হাসিনা ইস্যুতে এর বেশি মন্তব্য করতে চাননি জয়শঙ্কর। উল্টে তিনি নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে সম্পর্কের দিকে দৃষ্টি-আকর্ষণ করে প্রতিবেশী দেশটিতে একটি বিশ্বাসযোগ্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর ভারতের অবস্থানকে জোর দেন।
বাংলাদেশের অতীত রাজনৈতিক সমস্যাগুলির উল্লেখ করে জয়শঙ্কর বলেন, আমরা শুনেছি যারা এখন ক্ষমতায় আছে, তাদের আগের নির্বাচন কীভাবে পরিচালিত হয়েছিল তা নিয়ে আপত্তি ছিল বাংলাদেশের মানুষের। এখন, যদি বিষয়টি নির্বাচনই হয়, তবে প্রথম কাজ হবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করে জয়শঙ্কর তাঁর বক্তব্য শেষ করেন এবং প্রতিবেশী দেশের প্রতি ভারতের গণতান্ত্রিক পছন্দের উপর জোর দিয়ে বলেন, যতদূর আমাদের প্রশ্ন, আমরা বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করি। আমরা মনে করি একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে, যে কোনও গণতান্ত্রিক দেশই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন দেখতে পছন্দ করে। ভারতের বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, আমি আত্মবিশ্বাসী যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে যা কিছুই বেরিয়ে আসুক না কেন, সম্পর্কের বিষয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও পরিণত দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে এবং আশা করি পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে।

Latest article