কাগজে-কলমে বর্ষা শেষ। পা রেখেছে শরৎ। ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে প্রকৃতি। কখনও ঝলমলে রোদ্দুর, কখনও ঝিরঝির, ঝমঝম বৃষ্টি। এই সময়টা কিন্তু রীতিমতো উপভোগ্য। অনেকেই ঘরবন্দি না থেকে বেরিয়ে পড়তে চান। কেউ যান সমুদ্রে, কেউ পাহাড়ে।
আরও পড়ুন-সবুজ বাজির ক্লাস্টার
এখন পাহাড় সেজে উঠেছে অন্যরকম সাজে। হাতে দু-তিনদিনের ছুটি পেলে ঘুরে আসতে পারেন কোনও হিল স্টেশনে। কোথায় যাবেন ভেবে পাচ্ছেন না? তাহলে বলি, ঘুরে আসুন উত্তরবঙ্গের শিরিষে গাঁও। একটি অফবিট বেড়ানোর জায়গা।
কালিম্পং থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ছোট গ্রামটি। শিলিগুড়ি ও নিউ জলপাইগুড়ি থেকে যথাক্রমে ৮০ ও ৮৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। শিরিষে গাঁও কালিম্পং-এর বুরমেকের অন্তর্গত। খুব কম জনবসতি নিয়ে গড়ে উঠেছে এই গ্রাম। শহরের কোলাহলমুক্ত একটি শান্ত নিরিবিলি পাহাড়ি জনপদ।
আরও পড়ুন-তিনবার পেনাল্টির দাবি নাকচ, ক্ষোভ রোনাল্ডোর
চোখে পড়বে রকমারি গাছ। তাতে ফুটে আছে নানা রঙের ফুল। নরম হাওয়ায় মাথা দোলায়। ভোরের আলো ফোটার আগেই গাছের ডালে এসে বসে পাখির দল। চলে তাদের নামতা পড়া। কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে ওঠে এলাকা।
আকাশ পরিষ্কার থাকলে এই পাহাড়ি অঞ্চলে বসে পেতে পারেন কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা। বরফাবৃত দৃশ্য দূর করে দেবে শরীর ও মনের ক্লান্তি। শুদ্ধ বাতাসে মন খুলে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এখান থেকে দেখা যায় দূরের রামধুরা গ্রাম। ছায়াছবির মতো। হাতে সময় থাকলে ঘুরে আসতে পারেন। গ্রামটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও অসাধারণ। আশেপাশে আছে আরও কিছু বেড়ানোর জায়গা। শিরিষে গাঁও থেকে সামান্য দূরে জঙ্গলের রাস্তা ধরে হেঁটে পৌঁছে যেতে পারেন স্ট্রবেরি ফার্মে। এখানে জৈব পদ্ধতিতে স্ট্রবেরির চাষ হয়। চাইলে এখান থেকে স্ট্রবেরি কিনে নিতে পারেন ঘরের জন্য। ভোরবেলা এবং বিকেলের দিকে পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখতে পারেন গ্রামটি। বৃষ্টিদিনে শিরিষে গাঁও হয়ে ওঠে সদ্য-যৌবনা নারীর মতো। সতেজ হয়ে ওঠে গাছপালা, ফুল-পাতা। ভেজা প্রকৃতির সঙ্গে রচিত হতে পারে নিবিড় বন্ধুতা। কবিতার মতো সুন্দর গ্রাম আপনাকে বানিয়ে দিতে পারে কবি। দেরি না করে এই অগাস্টে অথবা সেপ্টেম্বরের মুখে ঘুরে আসতে পারেন শিরিষে গাঁও। চিরসবুজ পাহাড়ি জনপদ আপনার অপেক্ষায়।
আরও পড়ুন-এবার শিল্প সম্মেলনে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু
কীভাবে যাবেন?
কালিম্পং থেকে শিরিষে গাঁও পৌঁছনোর জন্য নিতে পারেন শেয়ার গাড়ি। আছে বিকল্প ব্যবস্থা। পৌঁছে যান শিলিগুড়ি অথবা নিউ জলপাইগুড়ি। এই দুই জায়গা থেকে যাওয়া যায় টানা গাড়িতে। খরচ একটু বেশি। ৪০০০-৪৫০০ টাকার মতো। দলবেঁধে গেলে সমস্যা নেই। ট্যুর জমে যাবে।
আরও পড়ুন-এবার শিল্প সম্মেলনে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু
কোথায় থাকবেন?
শিরিষে গাঁও একটি অফবিট বেড়ানোর জায়গা। তাই এখানে থাকার জন্য খুব বেশি অপশান পাওয়া যাবে না। অতি-সম্প্রতি পর্যটকদের আসা-যাওয়া শুরু হয়েছে। তাই এখানে থাকার জন্য হোমস্টে খুব বেশি নেই। পারু হ্যাং হোমস্টের কথা পর্যটকদের মুখে শোনা যায়। খরচ একদিন মাথাপিছু ১২০০ টাকার মতো। যাওয়ার আগে খোঁজ নিয়ে যাবেন। হোমস্টের রুম বা ভিউ পয়েন্টে বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। ভিউ পয়েন্ট থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে মন ভরে দেখতে পারেন।