বিজিবিএসের পরিবর্তে এবার শপিং ফেস্টিভ্যাল

তিন মাস ব্যাপী ভোটের কারণেই, শিল্প সম্মেলনের প্রস্তুতিতে বাধা

Must read

প্রতিবেদন : বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের (বিজিবিএস) পরিবর্তে এবার শপিং ফেস্টিভ্যাল (Shopping Festival)। বাংলার শিল্প-মানচিত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নয়া উদ্যোগ। যা বাংলার অর্থনীতিতে নতুন দিশা দেখাবে। বৃহস্পতিবার নবান্ন সভাঘরের শিল্প বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ঠিক হয়েছে চলতি বছরের ২০-২৬ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ের ধাঁচে এই শপিং ফেস্টিভ্যাল (Shopping Festival) হবে। ধীরে ধীরে বাংলার জেলাগুলিতেও ফেস্টিভ্যাল ছড়িয়ে যাবে। এই বাণিজ্য পসরায় বিভিন্ন প্রথম সারির ব্র্যান্ড যোগ দেবে। এদিনের বৈঠকে আরও একটি বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সাফ কথা, এরাজ্যে শিল্পবান্ধব পরিবেশ গড়ে উঠেছে। শিল্পক্ষেত্রে কোথাও কোনওরকম গন্ডগোলের চেষ্টা কেউ করলে তা রেয়াত করা হবে না। প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

আরও পড়ুন- ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন মাইকিংয়ে সতর্কতা খোলা হয়েছে শিবির

কিন্তু বিজিবিএস কেন এবছর করা গেল না? সে প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপি ও কমিশনের চক্রান্তে সাত দফার ভোট তিন মাস ধরে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এতে সবকিছুই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। বিজিএসের মতো এত বড় মাপের একটি শিল্প সম্মেলন করতে গেলে অনেক আগেই প্রস্তুতি সেরে রাখতে হয়। সেই সময় বা সুযোগ পাওয়া যায়নি নির্বাচনের কারণে। তাই এবছর বিজিবিএস নয়, হবে শপিং ফেস্টিভ্যাল। মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে শিল্পমহল। তারাও এবিষয়ে সহমত পোষণ করেছে যে লম্বা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার কারণে সব থমকে গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী বড় শিল্পের সঙ্গে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকেও গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। এই ক্ষেত্রটি যাতে আলাদা গুরুত্ব পায় তার জন্য তিনি নানা স্কিম তৈরি করেছেন। এই শপিং ফেস্টিভ্যালে এমএসএমই সেক্টরে সমান গুরুত্ব পাবে। কলকাতার পাশাপাশি সবক’টি জেলাতেও শপিং ফেস্টিভ্যাল (Shopping Festival) ছড়িয়ে দেওয়া গেলে বাংলার অর্থনীতির চালচিত্রটাই বদলে যাবে। তার কারণ, যত বেশি ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প সংস্থা বা ব্র্যান্ড এতে যুক্ত হবে তত বেশি করে রাজ্যের প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছনো যাবে। স্বাভাবিকভাবে অর্থনীতির নিময় মেয়ে টাকা রোলিং হবে। আরও চাঙ্গা হবে বাংলার অর্থনীতি। একদিকে যেমন মানুষের হাতে পণ্য আসবে একইসঙ্গে উৎপাদন ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িতে লক্ষ লক্ষ কর্মী উপকৃত হবেন। এই প্রস্তাবে সায় দিয়েছে বণিকসভাগুলিও। কারণ, এই ধরনের ফেস্টিভ্যালে জেলাভিত্তিক বণিকসভার গুরুত্ব অপরিসীম। এতে ব্যবসা বাড়বে। নতুন উদ্যোগপতি তৈরি হবে। কর্মসংস্থান বাড়বে। আখেরে লাভবান হবেন এরাজ্যের অজস্র যুবক-যুবতী।
সেপ্টেম্বরের বিশ্ববাণিজ্য মেলাপ্রাঙ্গনে এই শপিং ফেস্টিভ্যালের প্রস্তুতিতে এখনই নেমে পড়ছে রাজ্য সরকার। ডব্লুবিডিআইস তার মতো করে ভূমিকা পালন করবে। সেইসঙ্গে রাজ্যের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র গোটা প্রক্রিয়াটির সঙ্গে জুড়ে থেকে সব দিক লক্ষ্য রাখবেন। কারণ শিল্পমহলের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সর্বজনবিদিত।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিকশনারিতে না বলে কোনও শব্দ নেই। দীর্ঘ নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও সময়ের অভাবে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মতো মেগা শিল্পসম্মেলন করা সম্ভব না হলেও বাংলার শিল্প-মানচিত্রে নতুন দিগন্ত খুলে দিলেন তিনি। সেইসঙ্গে তাঁর চিরাচরিত প্রথা মেনে তিনি এক্ষেত্রে জড়িয়ে দিলেন গোটা বাংলাকেই।

Latest article