আলোর পথের দিশারি

নারী অর্ধেক আকাশ নাকি পুরো আকাশটাই। হাওড়ার বাউড়িয়া থানার খাসখামার গ্রামের পশ্চিমবঙ্গ সরকার দ্বারা রেজিস্ট্রিকৃত নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ধারক-বাহক রহিমা খাতুন–কে দেখলে তেমনটাই মনে হয়। হাওড়া অঞ্চলে জনপ্রিয় মুখ তিনি। পিতা মহম্মদ মইনুদ্দিনের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি এই সংগঠনের শুরুর ইতিহাস খুব ছোট নয়। সমাজে মেয়েদের অবস্থান বদলাতে এর ভূমিকা অপরিসীম। পিতার যোগ্য উত্তরসূরি সমাজসেবী রহিমা খাতুন সুবিশাল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বয়ে নিয়ে চলেছেন এই সংস্থার বহুবছরের সুনাম এবং ঐতিহ্যকে। লিখছেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী

Must read

তিনি নারী, তিনি একটি গোটা আকাশ। যে আকাশের ডানায় ভর করে উড়ে বেড়াতে সক্ষম আজকের নারী। তিনি হাওড়া জেলার বাউড়িয়ার খাসখামার গ্রামের নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের (NOSKK) জননী রহিমা খাতুন। জননী বলার কারণ যিনি সমাজের মানুষকে সন্তানের মতো করে লালন করেন তিনি মা-ই হন। মহিলা ও শিশুদের উন্নয়নে নিবেদিত প্রাণ রহিমা খাতুন । তাঁর এই বিস্তীর্ণ কর্মকাণ্ডের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছিল আজ থেকে ৭০ বছর আগে তাঁর বাবার হাত ধরেই। পিতার যোগ্য উত্তরসূরি হয়ে তিনি আজ সমগ্র হাওড়া জেলা জনপ্রিয় একটি মুখ।
মাস্টারমশাই শব্দটা শুনলেই মনে হয় যেন সেই চলে গেছি কোন যুগে। হ্যাঁ কোন যুগ তো বটেই— সাল ১৯৫২, আজ থেকে প্রায় ৭০ বছরেরও আগে হাওড়ার বাউড়িয়ার খাসখামার গ্রামের বাসিন্দাদের থেকে বই সংগ্রহ করে একটি লাইব্রেরি তৈরি করেছিলেন সেই গ্রামের মাস্টারমশাই। যে লাইব্রেরির নাম ছিল ‘তাজমহল লাইব্রেরী’। তিনি হলেন রহিমার বাবা মহম্মদ মইনুদ্দিন এলাকার জনপ্রিয় মাস্টারমশাই। তাঁকে আশপাশের গ্রাম অবধি একডাকে সবাই চিনতেন মাস্টারমশাই নামেই। তখন যুবা পুরুষ তিনি। সেই সময় থেকেই সামাজিক উন্নয়নে নিয়োজিত প্রাণ ছিলেন।

আরও পড়ুন-রথের চাকায় বাংলার যোগ

পাশের গ্রামেরই একটি স্কুলে শিক্ষকতার পাশাপাশি সমাজবসেবামূলক কর্মকেই নিজের জীবনের ব্রত করে নিয়েছিলেন। ভাবনা ছিল এক উন্নয়নশীল সমাজ গড়ার সর্বোপরি তাঁর লক্ষ্য ছিল নারী ও শিশু কল্যাণ। তাই মানুষের স্বার্থেই তিনি তখন গড়ছিলেন ‘তাজমহল গ্রামবিকাশ কেন্দ্র’ নামের একটি সমাজসেবামূলক সংগঠন। এই সংগঠনের অন্তর্গত ছিল ছোট ছোট স্কুল, বহুমুখী কর্ম সম্পাদিত হত এখানে যেমন ছিল সাপ্লিমেন্টারি এডুকেশন, ছিল বিধিমুক্ত শিক্ষা। মহিলাদের ছোট ছোট দল তৈরির কাজ হত এখন যেটাকে আমরা স্বনির্ভর গোষ্ঠী বলি। পরবর্তীকালে অনেক পরে ১৯৯০ সালে সেই মহিলা দলগুলি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর আকারে তাঁদের কাজ শুরু করতে পেরেছিল যার উৎসমুখ কিন্তু মাস্টারমশাইয়ের ওই উদ্যোগ। মানুষের জীবন ও জীবিকার বিষয় দৃষ্টিনিক্ষেপ, মেয়েদের ক্ষমতায়ন, তাঁদের স্বাস্থ্য , বিশেষ করে গার্ল চাইল্ড এডুকেশন এগুলোই ছিল ‘তাজমহল গ্রাম বিকাশ কেন্দ্র’র মূল লক্ষ্য। ছোট ছোট সংগঠন তৈরি করা সেই সংগঠনের অন্তর্গত বিভিন্ন কর্মসূচির রূপায়ণ। বিশেষ করে তিনি প্রাধান্য দিতেন মহিলা ও শিশুদের উন্নতিকে। মেয়েরা যাতে আলোকপ্রাপ্ত হয় সেই বিষয় জোর দিতেন কারণ মুসলিম সমাজে মেয়েদের প্রতি সবসময় একটু বেশি রক্ষণশীলতার বোঝা চাপানো হয়েছে— এটা ইতিহাসও বলে।

আরও পড়ুন-মেঘ ভাঙা বৃষ্টি অমরনাথ গুহার কাছে, মৃত একাধিক

তখনও মুসলিম পরিবারের মেয়েদের বাড়ির বাইরে বেশি বেরনোটা অপরাধ হিসেবে গণ্য হত। সেই জগদ্দলপাথর হটাতে একটি মেয়েদের স্কুলও প্রতিষ্ঠা করেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মাদ্রাসা বোর্ডের অন্তর্গত। সেই স্কুলে এখন এক হাজারের উপর ছাত্রী পড়াশুনো করে। কিন্তু আলাদা ভাবে তিনি শুধুমাত্র মহিলা এবং শিশুদের জন্য কিছু করতে চেয়েছিলেন। সেই ভাবনা থেকেই ১৯৭৯ সালে এই মাস্টারমশাইয়ের উদ্যোগেই তৈরি হয় নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র(NOSKK)। এর উদ্দেশ্য ছিল সমাজের নারীর অবস্থান পরিবর্তন এবং শিশুদের সার্বিক উন্নয়ন অর্থাৎ শুধু নারী এবং শিশুকল্যাণেই নিয়োজিত হবে এই সংস্থা। শিশু ও মহিলাদের অধিকার নিয়ে তাঁরা কাজ করবে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার দ্বারা রেজিস্ট্রিকৃত এই সংগঠন শুরু করল তাঁর কাজ। তখন ওই এলাকার মেয়েরা বেশি বাড়ির বাইরে বেরতেন না তাই প্রথমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়াশুনো শেখানো, স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি, ভোকেশনাল ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ছোট ছোট প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে বড় লক্ষ্যের দিকে এগিয়েছিল এই সংগঠনটি।

আরও পড়ুন-বৃষ্টির জলে ডুবল স্কুল বাস!

এইভাবেই শুরু হয়েছিল ধাপে ধাপে এগনো। একটা সময় সেই ছোট্ট পায়ে এগিয়ে আজ চাঁদের পাহাড় স্পর্শ করেছেন মাস্টারমশাইয়ের কন্যা রহিমা খাতুন। ১৯৯৫ সালে এই নারী ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের দায়িত্ব পান তিনি। বাবার সুনাম, পরিচিতির দায়ভার রক্ষা করবার উত্তর দায়িত্ব তো তাঁর ছিলই, সেই সঙ্গে ছিল সমাজকে আলোর লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাবার ক্রমান্বয়ে চেষ্টা। বাবার স্বাধীন, সমাজ সচেতন মানসিকতা, পরিবারে উদার মুক্ত পরিবেশে রহিমা খাতুনের শৈশব, কৈশোর প্রতিপালিত হয়েছে। চোখের সামনে বাবার কর্মকাণ্ড দেখে ছোট থেকেই মনের কোথাও লালিত হয়েছিল বাবার মতো হওয়ার ইচ্ছে। ছোট থেকেই তিনি দেখেছিলেন পরিবারের যে কোনও সিদ্ধান্তে মেয়েদের সবার আগে গুরুত্ব পায় এই পরিবারে ফলে সেই সময় স্বাধীনসত্তা, মতাদর্শ গড়ে উঠেছিল। ইসলামিক হিস্ট্রি অ্যান্ড কালচার-এ স্নাতকোত্তর করে, বি-এড করেন। ছোট থেকেই বাবার সঙ্গে ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করতেন। একটি প্রি-প্রাইমারি এডুকেশন সেন্টারে পড়াতেন কচিকাঁচাদের। ১৯৯৫-তে ‘তাজমহল গ্রাম বিকাশ কেন্দ্রে’র হয়ে চিনের বেজিংয়ে চতুর্থ বিশ্ব নারী সম্মেলনে প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৯টি সংগঠন এই সম্মেলনে ভাগ নেয় তার মধ্যে ‘তাজমহল গ্রাম বিকাশ কেন্দ্র’ ছিল অন্যতম। সেখান থেকে ফিরে পাকাপাকি ভাবে নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দায়িত্ব নেন।

আরও পড়ুন-সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ-এর ৬ বছর পূর্তি: কী বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক?

এরপর শুরু করেন নানা ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মসূচি। যার মধ্যে বড় একটি কাজ হল মেয়েদের স্বনির্ভরতার জন্য নানা ভোকেশনাল ট্রেনিং বা প্রথাগত শিক্ষা দান। যার মধ্যে সেলাই শেখানো, বিউটিশিয়ান ট্রেনিং, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, জরি ট্রেনিং— সবকিছু ছিল। একটি স্যানিটারি ন্যাপকিনের ইউনিট খোলেন। শুধু রহিমা খাতুন নয় তাঁর বোনেরাও যুক্ত হয়েছিলেন এই সব কর্মসূচিতে। আজ থেকে অত বছর আগে প্রচুর বাধাবিঘ্ন এসেছে এই কাজ করতে গিয়ে। মাস্টারমশাই নিজে এবং মেয়ে রহিমা প্রায়শই প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছেন। তাঁর পরিবারের মেয়েরা বাইরে বেরিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছে এটা তখন মেনে নেওয়া কঠিন ছিল। একজন মহিলা সমাজকর্মী হিসেবে পদে পদে সমস্যায় পড়তে হয়েছে তখন। পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে সেই বাধা কাটতে শুরু করে।

আরও পড়ুন-সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ-এর ৬ বছর পূর্তি: কী বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক?

শুধু রাজ্য সরকারি কর্মসূচি নয় ভারত সরকারের হয়ে বেশ কিছু কাজ করেন তাঁরা। যেমন স্মল ফ্যামিলি নর্মস, প্রজনন ও শিশু স্বাস্থ্য এবং নানান কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্প রূপায়ণে এগিয়ে আসেন তিনি এবং তাঁর নারী ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র।
এরপর একটা বড় অ্যাজেন্ডায় শামিল হন। চেঞ্জিং স্ট্যাটাস অফ মুসলিম উইমেন ইন পঞ্চায়েতি রাজ এই বিষয়টির উপর বেশ কয়েকটা জেলা নিয়ে স্টাডি করলেন। হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া এই জেলাগুলির উপর ছিল তাঁর সেই সমীক্ষা। তার উপর ভিত্তি করে শুরু করেন বিভিন্ন ধরনের কাজ। এই কাজের অভিজ্ঞতার খুবই ভাল। সেই অভিজ্ঞতাকে ভাগ করে নিতে ২০০৭-এ লাহোরেও গিয়েছিলেন রহিমা একটি প্রেজেন্টেশনের জন্য। সফল হয় সেই সেমিনার। এরপর মিনিস্ট্রি অফ টেক্সটাইলের সঙ্গে কাজ করেন।

আরও পড়ুন-উত্তরাখণ্ড: নদীতে গাড়ি উল্টে মৃত ৯

তাঁর এই কর্মকাণ্ডে স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্য সরকারের ভীষণ সাহায্য পেয়েছেন রহিমা খাতুন। এরপরেই ছোট ছোট দল গঠন করে উইমেন এমপাওয়ারমেন্টের উপর কাজ শুরু করেন। আসলে পুরোটাই সার্বিক উন্নয়নের কাজ, শিক্ষা-স্বাস্থ্য, বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা যা নিয়ে মেয়েদের প্রতিনিয়ত ভুগতে হয় যেমন নাবালিকা অবস্থায় বিয়ে, মেয়েদের উপর পারিবারিক হিংসা ইত্যাদি কর্মসূচি। ধীরে ধীরে বিস্তারলাভ করে তাঁর কর্মক্ষেত্র। সুইডেনের একটি প্রজেক্ট রূপায়ণে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেন তিনি এবং তাঁর এই সংগঠন। ২০১১ সালে শুরু হয় ইউনিসেফের সঙ্গে রুটিন ইমিউনাইজেশন অ্যান্ড পালস পোলিও প্রোগ্রাম। তখন শেষ পোলিও কেস পাওয়া যায় হাওড়ার একটি গ্রামে। তারপরেই রাজ্যসরকারের সঙ্গে মিলে ইউনিসেফ হাই রিস্ক এরিয়াতে এই কাজটা শুরু করেন। সরকারের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে তার সঙ্গে সোশ্যাল মোবিলাইজেশন করার দায়িত্বে থাকেন রহিমা খাতুন এবং তাঁর সংগঠন। যেমন, মানুষকে বোঝানো, তাঁদের সচেতন করা, তাঁদের পোলিও কেন্দ্রে নিয়ে আসা, উৎসাহিত করা ইত্যাদি। এই কর্মসূচির মাধ্যমেই পোলিও নির্মূলকরণ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন এবং মুর্শিদাবাদ, হাওড়া জেলার বিভিন্ন ব্লকে সফল করতে সক্ষম হয়েছেন প্রজেক্টটিকে। এরপর রুটিন ইমিউনাইজেশন, এনসি অর্থাৎ এন্টি নেটাল কেয়ার, ইনস্টিটিউশনাল ডেলিভারি প্রজেক্টের উপরেও কাজ করেন তিনি। শুধু সরকারি প্রকল্পগুলোর রূপায়ণ নয় এইসব প্রকল্পের সুবিধা মানুষ কীভাবে পাবে, কী করতে হবে, যেখানে বাধা রয়েছে কীভাবে এগবে এই বিষয় যথাযথ গাইড লাইন দেন তাঁর নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র।

আরও পড়ুন-ফায়ার অ্যান্ড সেফটি কোর্স থেকে চাকরি

এই বহুমুখী কাজের সূত্র ধরে রহিমা খাতুন এবং তাঁর সংগঠনটি বিভিন্ন কমিটির সদস্য হন। যেমন, জেলাস্তরে স্বাস্থ্য দফতরের কমিটিতে এনজিও প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর সংগঠন সদস্যপদ পেয়েছে। চাইল্ড প্রটেকশন সমিতি এবং স্টেট লেভেল চাইল্ড প্রটেকশন সমিতিরও সদস্য এই নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। মিনিস্ট্রি অফ মাইনরিটি অ্যাফেয়ারের প্রাইম মিনিস্টার ফিফটিন পয়েন্ট প্রোগ্রামে সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনের সদস্য তিনি। বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট কমিটির সদস্য পদে রয়েছেন।
অ্যাডোলসেন্স হেল্থের উপর একটি বৃহৎ প্রকল্প চালু রয়েছে যে প্রকল্পে হাওড়ার তিনটে ব্লকের দায়িত্বে রয়েছেন রহিমা। ওই তিনটি ব্লক হল উলুবেড়িয়া মিউনিসিপ্যলিটি, পাঁচলা এবং সাকরাইল। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের টিবি নির্মূলকরণ প্রোগ্রামের সঙ্গে যুক্ত নারীও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র।
যেটা সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় তা হল এই নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র পুরোটাই একটি মহিলাদের সংগঠন। যে সংগঠনের ৯ জন বোর্ড মেম্বার এবং সাধারণ সদস্য রয়েছেন ৪০ জন। সংগঠনের সেক্রেটারি রহিমা খাতুন। কোভিডকালে প্রচুর কাজ করেছে রহিমা খাতুন এবং তাঁর সংগঠন।

আরও পড়ুন-গুলিবিদ্ধ জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী: ব্যাথিত মোদি

অতিমারির প্রভাবে এলাকায় আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়া মানুষদের সহায়তা দান, স্যানিটাইজেশন নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রাম করা আরও বিবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন যা ফলপ্রসূ হয়। মেয়েদের অধিকার সংক্রান্ত আইন নিয়েও সচেতনতা বৃদ্ধির প্রোগ্রাম করে এই সংগঠন। নন ট্রাডিশনাল লাইভলি হুড প্রোগামে মেয়েদের শিখানো হয়েছে টোটো চালানো, ট্যাক্সি ড্রাইভিং, মোবাইল রিপিয়ারিং, সিকিউরিটি গার্ডের প্রশিক্ষণ এবং আরও অনেক কিছু। বর্তমানে মহিলাদের ক্ষমতায়ন কাজ, কাউন্সিলিং সেন্টার, মেয়েদের উপর হিংসা, নারী ও শিশু পাচার, শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন, বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদের মাইগ্রেন্ট লেবার বা পরিযায়ী শ্রমিকদের দের নিয়ে প্রোগ্রাম, বিভিন্ন স্বাস্থ্য সচেতনতা কর্মসূচি নিয়ে জোরকদমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

আরও পড়ুন-গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু পথচারীর

তাঁর এই বৃহৎ কর্মজীবনে পেয়েছেন বহু স্বীকৃতি। তৃণমূলস্তরে মেয়েদের নিয়ে কাজ করার জন্য রাজ্য সরকারের নারী ও শিশুকল্যাণ দফতর থেকে পুরস্কৃত এবং সম্মানিত হন। পেয়েছেন পাবলিক হেল্থ অ্যাওয়ার্ড ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফ থেকে। পশ্চিমবঙ্গের মাইনরিটি ডিপার্টমেন্ট থেকে পেয়েছেন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ অ্যাওয়ার্ড। পেয়েছেন আরও বহু ছোট-বড় স্বীকৃতি। অংশ নিয়েছেন দেশ বিদেশের সেমিনার এবং কনফারেন্সে পাড়ি দিয়েছেন সূদুর চিন, থাইল্যান্ড, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, সুইডেন এবং মার্কিনমুলুকে।

আরও পড়ুন-মহানায়কের বায়োপিক অচেনা উত্তম

এহেন সংগঠনের যিনি পূরভাগে সেই রহিমা খাতুন সমাজসেবীর পাশাপাশি সংসার করেন চুটিয়ে। যৌথ পরিবারের বউ তিনি। এতবড় কর্মযজ্ঞে তিনি পাশে পেয়েছেন শ্বশুরবাড়ি, বাপের বাড়ি, স্বামী এবং দুই সন্তানকে। তা না হলে হয়তো এতটা এগনো একটু কঠিন হত। স্বামীও একটা সমাজসেবামূলক সংগঠনের সঙ্গেই যুক্ত, কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি করছেন রহিমার খাতুনের পুত্র। কন্যা দ্বাদশ শ্রেণিতে পাঠরত। সবকিছুর মাঝে মানুষের জন্য যৎসামান্য করতে পারাটাই তাঁর কাছে অমূল্য প্রাপ্তি বলেই তিনি মনে করেন।

Latest article