সংঘরূপ নির্মাণে শ্রীমা সারদা দেবী

সংসার পথে টেনে আনার জন্য নয়, সারদা দেবী দক্ষিণেশ্বরে এসেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণকে ইষ্টপথে সহায়তা করার জন্য। দক্ষিণেশ্বর থেকে বেলুড় মঠ নির্মাণ পর্যন্ত যে অধ্যায় সেই অধ্যায়ের মূল কারিগর ছিলেন তিনিই। সেইসঙ্গে ঠাকুরের অপূর্ব সাধনার বীজ ধারণ করে, তাঁকে পালন করেছিলেন। হয়ে উঠেছিলেন সংঘজননী। লিখলেন পূর্বা সেনগুপ্ত

Must read

দক্ষিণেশ্বরে
সাল ১৮৭২। জয়রামবাটির রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে সারদা উপস্থিত হয়েছেন দক্ষিণেশ্বরে। স্বামী গদাধর চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। দক্ষিণেশ্বরে রানি রাসমণির মন্দিরে স্বামী সাধনায় মগ্ন! কিন্তু তাঁর মাতৃসাধনা প্রাকৃত লোকের কাছে উন্মাদের লক্ষণ রূপে গণ্য হয়েছে। তাই সারুর পাগলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে এই গুজবে বিস্মিত হয়ে সারদা ভেবেছেন, তিনি যদি অসুস্থ হয়েই থাকেন তবে তাঁকে সেবা করার দায়িত্ব আমার। তাই তাঁর দক্ষিণেশ্বরে আগমন।
দক্ষিণেশ্বরে উপস্থিত হয়ে সারদা আরও বিস্মিত। কই! তাঁর মধ্যে উন্মাদের বিন্দুমাত্র লক্ষণ নেই। বরঞ্চ তিনি আরও বেশি প্রেমময়। তাঁকে বললেন, ‘এতদিন পরে এলে? আর কি আমার মথুর (মেজ) বাবু আছে?’ ষোড়শী সারদার দক্ষিণেশ্বরে আগমন কোনও সাধারণ ঘটনা নয়। এ হল এক ধর্ম-আন্দোলনের সূচনাক্ষণ।

আরও পড়ুন-বিপ্লবের বহ্নি ও এক নিষ্কম্প দীপশিখা

সারদা দক্ষিণেশ্বরে এলেন, একদিন শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁকে একান্তে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তুমি কি আমায় সংসারপথে টেনে নিয়ে যেতে এসেছ?’ সারদা উত্তর দিলেন ‘তা কেন, আমি তোমার ইষ্টপথে সহায়তা করতে এসেছি।’ এই ‘ইষ্টপথ’ মানে কী? শ্রীরামকৃষ্ণের ইষ্টপথ হল যুগ অনুযায়ী নতুন ধর্মভাব, নব ধর্মান্দোলন প্রতিষ্ঠা, এক ‘নবীন আলোকে’র জন্মদান। দক্ষিণেশ্বর থেকে বেলুড় মঠ নির্মাণ পর্যন্ত যে অধ্যায় সেই অধ্যায়ের মূল কারিগর ছিলেন শ্রীমা সারদা দেবী। তিনি দক্ষিণেশ্বরে ষোড়শী পূজার দিনে যে দায়িত্ব লাভ করেছিলেন সেই দায়িত্বকে পালন করেছেন নীরবে নিভৃতে। কাশীপুরে শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁকে নিজের অঙ্গকে নির্দেশ করে বলেছিলেন, ‘এ আর কী করল, তোমাকে এর চেয়ে ঢের বেশি করতে হবে।’ সত্যই আমরা দেখি শ্রীমা ঠাকুরের অপূর্ব সাধনার বীজ ধারণ করে, তাকে পালন করছেন। মা যেমন এক গর্ভস্থ সন্তানকে গর্ভে লালন করে পরিপূর্ণ করে তোলে এবং সুগঠিত করে তাকে জন্ম দেয়, ঠিক তেমনই শ্রীমা পরিপূর্ণ রূপে এক শিশু-আন্দোলনের, এক শিশু-মঠের জন্ম দিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন-ক্ষতিগ্রস্ত দোকানিদের সাহায্য মন্ত্রী ও রাজ্যের

মূল মন্ত্র
সংগঠক রূপে বা সংঘগঠনের মূল হোতারূপে শ্রীমা এই গঠন কার্যে কোন বিষয়টিকে মন্ত্রস্বরূপ মনে করেছেন? শ্রীমা এক ভক্তকে বলেছিলেন, ‘ভাঙতে সকলেই পারে, গড়তে পারে ক’জন?’ সংগঠকরূপে শ্রীমা সেই গঠনের প্রক্রিয়ার বার্তাবাহক। তিনি গঠন করেছেন, নির্মাণ করেছেন, কখনও তিনি ভাঙেননি। কোনও আচার, কোনও ভাবনাকে তিনি আঘাত করেননি কোনওভাবে। দক্ষিণেশ্বর থেকে বেলুড় মঠ— এই রূপনির্মাণে তিনি ছিলেন এক গঠনমূলক আধ্যাত্মিক আরাধনার, জীবনচর্যার ও দৃষ্টবাদের উপর দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত এক বৈপ্লবিক সত্তা। তাঁর পথচলায় ছিল না কোনও ভাঙাচোরার কাহিনি, তিনি যে পথ চলেছিলেন তা ছিল বন্ধুর, কিন্তু তিনি সেই বন্ধুর পথকে সুগম করেছেন এক বিচিত্র পদ্ধতিতে! খারাপ অবস্থায় থেকে ভাল আছি বলার যে কৌশল তা তিনি যাপন করে দেখিয়ে গিয়েছেন। কোন লক্ষ্যে তিনি এই ইতিবাচক মন্ত্রে আন্দোলনকে পরিচালিত করেছিলেন?

আরও পড়ুন-মেঘালয়ে বিপ্লব, উই কার্ডে ৯ দিনে নাম ৬০ হাজারের

মূল লক্ষ্য
মূল মন্ত্রের কথা আমরা জানলাম। সঙ্গে সঙ্গে এই প্রসঙ্গও উত্থাপিত হয়, তবে মূল লক্ষ্য কী? এই ক্ষেত্রে আমরা প্রথমেই একটি ঘটনার উল্লেখ করব। দক্ষিণেশ্বরে শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে প্রায়শই উপস্থিত হতেন লক্ষ্মীনারায়ণ মাড়োয়ারি। একবার তিনি ঠাকুরের সেবার জন্য কিছু টাকা দিতে আগ্রহী হন। ঠাকুর তখন শ্রীমাকে বলেন, দেখ, লক্ষ্মীনারায়ণ মাড়োয়ারি আমাকে টাকা দিতে চায় কিন্তু সে তো আমি নিতে পারব না। তুমি বরং নাও?’ একথা শুনে শ্রীমা উত্তর দিলেন, ‘এ কখনওই সম্ভব নয়, আমি নিলে তোমার জন্যই খরচ করব, তাতে তোমারই নেওয়া হবে। এ কোনওমতেই নেওয়া যাবে না।’ অর্থাৎ শ্রীমা আমাদের বলেছেন, এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য শ্রীরামকৃষ্ণ। তাঁকে লাভ করা, তাঁর কথা অনুযায়ী জীবনযাপন করা ও প্রতিটি বিষয় তাঁর অভিমুখী করে তোলা। তিনিই আমাদের লক্ষ্য। যেকোনও গঠনের লক্ষ্য শ্রীরামকৃষ্ণ। এই আন্দোলনের যা কিছু, একটি দূর্বা থেকে বিরাট মন্দির সবই তাঁর জন্য। শ্রীরামকৃষ্ণের জন্য। শুধু কি সেই কামারপুকুরনিবাসী ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায়ের পুত্র গদাধর চট্টোপাধ্যায়ের জন্য? না, ভাবরূপী শ্রীরামকৃষ্ণের জন্য। স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর রচিত শ্রীরামকৃষ্ণ প্রার্থনা সংগীতে শ্রীরামকৃষ্ণরূপ যেভাবে অঙ্কন করেছেন কথামালা দিয়ে, শ্রীমা সেই ভাবকে বাস্তবে প্রতিফলিত করে শ্রীরামকৃষ্ণ ভাবপ্রাণা হয়ে উঠেছেন। আমাদের আলোচনার ক্ষেত্র এই শ্রীরামকৃষ্ণগতপ্রাণা শ্রীমা সারদাদেবী, যিনি শ্রীরামকৃষ্ণ লক্ষ্যে পৌঁছবার জন্য এক সংঘ নির্মাণ করেছিলেন, গোপনে, সকলের অগোচরে।
তাহলে আমরা শ্রীমায়ের সংগঠন পদ্ধতির দুটো দিক নির্দেশ করতে সক্ষম হলাম। আমাদের মন্ত্র, গঠন আর লক্ষ্য শ্রীরামকৃষ্ণ। সব কিছুই শ্রীরামকৃষ্ণার্পণমস্তু। শ্রীমা দক্ষিণেশ্বরে কী গঠন করেছিলেন? তিনি গঠন করেছিলেন দুই হাতে, একহাতে রামকৃষ্ণ সংঘ, আরেক হাতে নারী সংঘ। তিনি আড়ালে ছিলেন, কিন্তু অস্তিত্বময়ী হয়ে। সর্বত্র যাঁর অধিষ্ঠান।

আরও পড়ুন-কোর্ভিভ্যাক্সে ছাড়পত্র, সাবধানি পদক্ষেপ রাজ্যের

বিস্তার
এক সন্ধ্যায় মা ঠাকুরকে রাতের খাবার দিতে চলেছেন, এমন সময় একটি মেয়ে যার অতীত গৌরবজনক ছিল না, সেই মেয়েটি ‘আমাকে দাও মা’ বলে শ্রীমায়ের হাত থেকে নিয়ে ঠাকুরের কাছে দিলেন। এদিকে ঠাকুর আর সেই অন্ন স্পর্শ করতে পারেন না। তিনি বিরক্ত হয়ে শ্রীমাকে বললেন, ‘তুমি ওর হাতে দিলে কেন? বল আর কোনওদিন দেবে না?’ শ্রীমা উত্তর দিলেন, ‘তা তো আমি পারব না ঠাকুর, কেউ যদি মা বলে আমার কাছে কিছু চায় তবে তাকে না দিয়ে পারব না। আর তুমি তো কেবল আমার ঠাকুর নও, তুমি সবার।’ আনন্দিত হলেন শ্রীরামকৃষ্ণ। যে শ্রীরামকৃষ্ণ অন্ন স্পর্শ করতে অক্ষম ছিলেন তিনিই সানন্দে অন্নগ্রহণ করলেন। দ্বিতীয় ঘটনাটি উল্লেখ করব, বাবুরাম মহারাজ, পরবর্তীকালের স্বামী প্রেমানন্দ রাতে চারটে করে রুটি খেতেন। কারণ, শ্রীমা তাকে দিতেন। একদিন শ্রীরামকৃষ্ণ জানতে পারলেন, বাবুরাম মহারাজ চারটে করে রাতে রুটি খান। একথা শুনে শ্রীরামকৃষ্ণ স্বাভাবিকভাবেই রুষ্ট হলেন, বাবুরাম মহারাজ জানালেন, শ্রীমা-ই এর জন্য দায়ী। ঠাকুর চটি পরে ছুটলেন নহবতে, ‘তুমি ছেলেদের চারটে করে রুটি দাও? ওরা ঈশ্বর লাভের জন্য এসেছে!’ শ্রীমা শান্ত কণ্ঠে বললেন, ‘সে আমি দেখব।’ এর পরিষ্কার অর্থ হল, আধ্যাত্মিক উন্নতি যাতে ব্যাহত না হয় তিনি তা দেখবেন। কিংবা, আধ্যাত্মিক উন্নতিতে কোনও বাধা যাতে না হয় সেটা উনি দেখবেন।— এই দুটোর নিহিত অর্থ শ্রীরামকৃষ্ণ যে যুবক পার্ষদদের সাধনসাম্রাজ্যের রাজা করে গড়ে তুলতে আগ্রহী তিনি তাঁদের আধ্যাত্মিক উন্নতির বিষয়টি দেখতে পারেন! মনে রাখবেন, আমরা কিন্তু সারদাজীবনে এমন কোনও সাধনার নিদর্শন পাইনি যার ফলে তিনি আধ্যাত্মিক সাম্রাজ্যের অধীশ্বর শ্রীরামকৃষ্ণকে এই কথা বলতে পারেন। বা আমরা তাঁকে শ্রীরামকৃষ্ণের সমকক্ষ ভাবতে পারি।

আরও পড়ুন-নন্দীগ্রামে বিরোধীরা ধূলিসাৎ, ১২-০-তে জয় সমবায় ভোটে, মাটি সরে যেতেই দলবদলুদের গুন্ডামির চেষ্টা

কিন্তু আমরা দেখি শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁর এই উত্তরে সন্তুষ্ট। তিনি আনন্দিত হয়ে নহবত থেকে ফিরে এলেন। সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাসের বুকে সেই সংবাদ স্বাক্ষরিত করে গেলেন, শ্রীমা ক্ষমতাময়ী, অধ্যাত্ম ক্ষেত্রে তাঁরই মতো ঐশ্বর্যশালিনী। এই ঐশ্বর্যের বিস্তার অপার, যা মাতৃত্বময়ী শক্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সীমাহীন এক ভাবতরঙ্গ, যে ভাবপ্রবাহের লক্ষ্য শ্রীরামকৃষ্ণ। তাই শ্রীরামকৃষ্ণ ভাববিস্তারের কোনও সীমা নেই, তা সীমাহীন শ্রীরামকৃষ্ণ অনুধ্যান। শ্রীরামকৃষ্ণ সংঘে তাই শ্রীমা এক মাধুর্যপূর্ণ মূল শক্তি অর্থাৎ আমরা সংঘনির্মাণে শ্রীমা সারদা দেবীর ভূমিকা নির্ণয়ে তিনটি ক্ষেত্রকে বিশ্লেষণ করলাম। এই সংঘের মূল মন্ত্র, মূল লক্ষ্য, বিস্তারের পরিধি। এবারে আমরা শেষ যে বিষয়টিকে চিহ্নিত করব তা হল, মূল শক্তি। এই সঙ্ঘের মূল কোন শক্তিকে শ্রীমা নির্দেশ করেছেন। এই সংঘের মূল ভিত্তি হল আধ্যাত্মিকতা। আমরা মূল লক্ষ্য যখন শ্রীরামকৃষ্ণকে নির্দেশ করলাম তখন মূল শক্তিরূপে আধ্যাত্মিকতা চলে আসবেই।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

এর অর্থ হল, ওই সংঘ গঠনের পিছনে রয়েছে তিতিক্ষা, তপস্যা, কৃচ্ছ্রতা, ত্যাগ। শ্রীমা তা নিজের জীবন দিয়ে দেখিয়ে গিয়েছেন। শ্রীরামকৃষ্ণের পঞ্চবটির তলায় সাধনক্রমগুলি আমরা জানি মাত্র। তার সাক্ষী ছিলেন সেই মহাবটবৃক্ষ, হৃদয়, মথুরবাবু আর দক্ষিণেশ্বরের অবুঝ কিছু মানুষ, আর মন্দিরের অসহিষ্ণু কিছু পুরোহিত। কিন্তু শ্রীমায়ের দক্ষিণেশ্বরে আগমনের পরে এই জ্বলন্ত আধ্যাত্মিক উপলব্ধির উপর ধীরে ধীরে মঠ ও মিশন নির্মাণের পলেস্তারা পড়তে শুরু করল। একধাপ, একধাপ করে সেই রূপনির্মাণ এগিয়ে চলল, বিচিত্র ছন্দে। দক্ষিণেশ্বরে পঞ্চবটির সাধনা শেষ হলে শুরু হল নহবতের নতুন সাধন পর্ব। এ এক দীপ থেকে আরেক প্রদীপ প্রজ্বলনের ইতিহাস। দরমার বেড়া ফাঁক করে কীর্তন দেখেন সারদা, দেখেন কীরকম ভক্তসঙ্গে কীর্তনানন্দে মাতোয়ারা শ্রীরামকৃষ্ণ। শ্রীমা নিজ মুখে স্বীকার করেছেন, ঠাকুর তাঁকে ষটচক্র এঁকে দিয়েছিলেন। আর তাঁর নহবতের জীবন ছিল শুক-সারির ইতিকথা। তিনি ও লক্ষ্মীদি! দু’জনেই সাধিকা।

আরও পড়ুন-নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে গাড়ি, সিকিমে মৃত ১৬ জওয়ান

ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণ শেখাচ্ছেন, এখানে যা কিছু আলোচনা হল তোরা ঘরে গিয়ে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবি। জাবর কাটবি। অলস হয়ে বসে থাকা নয়, শিকে বানানোর জন্য পাট এনে দিলে তা দিয়ে শিকে বানানো হল, আর ফেঁসোগুলো দিয়ে বালিশ। নহবতের সেই ছয়কোনাকৃতি ঘরে, ভক্ত নারীদের আগমন রাত্রিবাস। অহরাত্রি ঈশ্বর আলোচনা। একটা জীবনপদ্ধতি রচনার জাল বুলে চলেছেন শ্রীমা। প্রাচীনকালে যেমন গুরুগৃহে আশ্রমজীবন যাপিত হত, শ্রীমায়ের জীবন যেন ঠিক তারই প্রতিফলন। কলকাতার নব্যসমাজ থেকে মেয়েরা এসে নতুন ভাবে কৃচ্ছ্রতাপালন শিখছেন। কেবল উপবাস আর কান্না মেটানোর আশ্রয় নয় ঠাকুরঘর, সে হল নিজেকে তৈরির একটি প্রতিষ্ঠান। এখানে উপবাসের কৃচ্ছ্রতা নেই, শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তমেয়েদের উপবাসে ক্লিষ্ট মুখটি দেখতে অত্যন্ত অপছন্দ করতেন। শ্রীমাও তাই! তার ফলে দিনের বেশির ভাগ সময় ভক্তদের জন্য রান্নাকরা, পানসাজা চলছে।

আরও পড়ুন-জেল-মুক্ত সিরিয়াল কিলার চার্লস শোভরাজ

কিন্তু তার সঙ্গে চলছে লক্ষসংখ্যা জপ! রাতের গভীরে ধ্যানের নিবিষ্ট অনুভবে স্নাত হওয়া, মেছুনিদের সঙ্গে গল্প আর তার সঙ্গে মিশে আছে জ্যোত্স্নারাতে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা। তোমার মতো নির্মল করে দাও। চাঁদেরও কলঙ্ক আছে, তোমার জ্যোৎস্নার মতো নিষ্কলঙ্ক কর। অন্তরস্থানে শুদ্ধ হওয়ার কামনাই তো আধ্যাত্মিকতা। শ্রীমা সেই আধ্যাত্মিকতা আমাদের দেখিয়েছেন। তার সঙ্গে নারী মঠ গঠনের বীজও রোপিত হয়েছে নহবতের সেই ছোট্ট কুটুরিতে। শ্রীমা নহবতে থাকাকালীন, শ্রীরামকৃষ্ণ সকাশে উপস্থিত হয়েছিলেন তাঁর ত্যাগী শিষ্যবৃন্দ। শ্রীমায়ের সঙ্গে তাঁদেরও নানা লীলা তাঁকে সংঘজননী রূপে প্রতিষ্ঠিত করার দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।

Latest article