প্রতীক্ষার অবসান। নিরাপদে পৃথিবী ছুঁল মহাকাশযান অ্যাক্সিয়ম-ফোর ড্রাগন। নাসা ও অ্যাক্সিয়মের লাইভে গোটা বিশ্ব সেই চরম উত্তেজনার মুহূর্তের সাক্ষী থাকলেন। লক্ষ্ণৌতে প্রতীক্ষারত ভারতীয় ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শুভাংশু শুক্লার (Shubhanshu Shukla) পরিবার মহাকাশযানের পৃথিবী ছোঁয়ার মুহূর্তে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। অন্যদিকে পৃথিবী ছোঁয়ার আগের মুহূর্তে কীভাবে উত্তেজনায় নিঃশব্দে অপেক্ষা করছিলেন চার মহাকাশচারী, সেই ছবিও দেখল গোটা বিশ্ব। প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে অ্যাক্সিয়মের ড্রাগনের অবতরণ হতেই রাতের অন্ধকারে শুরু হয় মহাকাশচারীদের উদ্ধারকাজ। আপাতত এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণে থাকবেন চার মহাকাশচারী।
দেশের প্রথম মহাকাশচারী হিসাবে ২০ দিন মহাকাশে ও ১৮ দিন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে কাটিয়ে মঙ্গলবার পৃথিবীতে ফিরলেন শুভাংশু শুক্লা। ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলের কাছে প্রশান্ত মহাসাগরে সব পরিকল্পনা মাফিক অবতরণ সম্পূর্ণ হয়। বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে ঘর্ষণে জ্বলতে থাকা ড্রাগনকে ঠাণ্ডা করে বের করে আনা হয় চার মহাকাশচারীকে। প্রথমেই বেরিয়ে আসেন মার্কিন কমান্ডার পেগি হুইটসন। তারপরেই হাসিমুখে বেরিয়ে আসেন ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট শুভাংশু শুক্লা। এরপর একে একে পোল্যান্ডের স্লাওস উজনানস্কি ও হাঙ্গেরির টিবর কাপু। উল্লেখযোগ্যভাবে, ড্রাগন ক্যাপসুলের বাইরে বেরিয়ে আসতেই চারজন নভোশ্চর পায়ে হেঁটে গবেষণাগারের ভিতরে যান।
আরও পড়ুন-বসন্তকুঞ্জের জয় হিন্দ কলোনিতে আসে না মানবাধিকার কমিশন! প্রতিবাদে গর্জে উঠল তৃণমূল
ঘরের ছেলেকে সুস্থভাবে হাসি মুখে মহাকাশযানের বাইরে বেরিয়ে আসতে দেখে বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। শুভাংশুর হাসি মুখে স্বস্তি ও হাসি ফিরিয়ে দেয় তাঁর মায়ের মুখেও। তাঁদের মুখে একদিকে যেমন গর্ব তেমনই স্বস্তির ছাপ ছিল স্পষ্ট।
অ্যাক্সিয়ম ফোর এই সফরে মহাকাশে মোট ৬০টি গবেষণা সম্পূর্ণ করে চার মহাকাশচারীর মাধ্যমে। ২০ দিনের মহাকাশ সফরে সম্পূর্ণ করেন ৮.৪ মিলিয়ম মাইল যাত্রা। পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ৩২০টি প্রদক্ষিণ সম্পূর্ণ করেন চার মহাকাশচারী। চার মহাকাশচারীর মধ্যে একমাত্র মার্কিন হুইটসন আগে দুবার মহাকাশে পাড়ি দেওয়ার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। আর ভারতের মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা তাঁর অ্যাক্সিয়ম সফরের অভিজ্ঞতাকে এবার ইসরো-র গগনযান নিয়ে মহাকাশে মানুষ নিয়ে পাড়ি দেওয়ার মিশনে সহযোগিতা করবেন।