আগামী ৩০ অক্টোবর নদিয়ার শান্তিপুরে হতে চলেছে উপনির্বাচন। একুশের বিধানসভা ভোটে রাজ্যজুড়ে বিজেপির বিপর্যয় হয়েছিল কিন্তু এই কেন্দ্রে গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী জগন্নাথ সরকার জয় পেয়েছিলেন। নিজপেই ক্ষমতায় আসতে পারেনি তাই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন জগন্নাথবাবু। তার ফলেই এই উপনির্বাচন।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যজুড়ে পরিস্থিতি অন্যরকম ছিল। অনেকেই ভেবেছিলেন বিজেপি সরকার গঠন করবে। ফলাফল বের হলেই দেখা যায় তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত কয়েকমাসে শান্তিপুরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সমীকরণ অনেকটাই বদলে যায়। এবার এই কেন্দ্রে তৃণমূলের জয়ের সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। একইসঙ্গে গোষ্ঠি কোন্দলের জেরে উপনির্বাচনের আগে বিজেপির একটি বড় অংশ শিবির বদলে তৃণমূলে যোগ দিয়েছে। ফলে শান্তিপুরে বিজেপির পালে হাওয়া নেই।
আরও পড়ুন-ডাকাতি কেসের আসামি নিশীথ, বিজেপির প্রচারে তার উপস্থিতি ভোট বাড়বে তৃণমূলের, জানালেন উদয়ন গুহ
পুজো শেষ হতেই জোর কদমে প্রচার শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। এই কেন্দ্রে খাতায় কলমের চতুর্মুখী লড়াই। এখানে বামেদের পাশাপাশি প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেসও।
শান্তিপুর ধরে রাখতে মরিয়া চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী শান্তিপুরে গিয়ে নন্দীগ্রাম স্টাইলে প্রচার করে এসেছেন। হিন্দু-মুসলিম ধর্মীয় ভাবাবেগকে তুলে ধরে শান্তিপুরের ভোট বৈতরণী পার হতে চাইছেন শুভেন্দু।
শুভেন্দু বলেন, বাংলাদেশের ঘটনার জন্য তিন গুণ ভোটে জিতবে বিজেপি। এখানে সনাতন ধর্মীরা বাংলাদেশের ঘটনার জবাব দেবেন ভোট বাক্সে, দাবি শুভেন্দুর।
শুভেন্দুর এই উস্কানিমূলক মন্তব্যকে তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। শাসক শিবিরের দাবি, একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে উস্কানিমূলক মন্তব্য করে রাজ্য সম্প্রীতি নষ্ট করতে চাইছে তিনি।
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুনাল ঘোষ এই নিয়ে বলেন, “শুভেন্দু যেখানে যাবে সেখানে হারবে বিজেপি। শুভেন্দুকে ওর দলের লোকেরাই বিশ্বাস করে না। বিধানসভা নির্বাচনের আগে অবিভক্ত মেদিনীপুরের ৩৫ টি আসনে শুভেন্দু কুৎসিত ভাষায় প্রচার চালিয়ে ছিল। মানুষ তার বক্তব্য গ্রহণ করেনি ২৬ টি আসনে তৃণমূল প্রার্থীরা জিতেছেন। এবার শুভেন্দু শান্তিপুরে গিয়েছে, সেখানেও হারবে বিজেপি। ৪-০ ফলাফলের উপনির্বাচন জিতবে তৃণমূল।”
আরও পড়ুন-Breaking : উত্তরবঙ্গ সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
কুণাল ঘোষ আরও বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী বলেছে বাংলাদেশের ঘটনায় বিজেপির ভোটে লাভ হবে। তার মানে এই কুৎসিত ঘটনার beneficiary বিজেপি। তাহলে benefit নেওয়ার জন্য কাদের কী ভূমিকা ছিল, তদন্ত হোক। এর আগেও পেগাসাস অধিকারী বলেছিল ওদের কাছে ফোন রেকর্ড পৌঁছে যায়। তারপরেই পেগাসাস কেলেঙ্কারি জানা গেছিল।’’ তাহলে ভোটের কথা ভেবে বাংলাদেশের ঘটনার পিছনেও কি বিজেপির হাত রয়েছে? এই ঘটনা কী পেগাসাস অধিকারীদের পূর্ব পরিকল্পনা? প্রশ্ন তোলেন কুণাল!
বাংলাদেশের ঘটনা নিয়ে এর আগে একটি টুইটে কুণাল ঘোষ লিখেছিলেন, “বাংলাদেশে যা হচ্ছে, তা দুর্ভাগ্যজনক। তবে বাংলাদেশের মানুষ ওই ঘটনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষ যখন প্রতিবাদ করছেন, তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চুপ কেন? ভোটের আগে বাংলাদেশে গিয়ে প্রচার করেন নরেন্দ্র মোদি। ভোটের আগে বাংলাদেশের মন্দিরে গিয়ে মোদি নাটক করেন।”