কেন পালিত হয় জাতিসংঘ দিবস?

প্রতি বছর ২৪ অক্টোবর বিশ্বের প্রতিটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রে পালিত হয় জাতিসংঘ দিবস। বিশ্ববাসীর কাছে জাতিসংঘের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য তুলে ধরাই মূল উদ্দেশ্য। দিনটি সূচিত হয়েছে কবে? কীভাবে পালিত হয়? উদ্দেশ্য পূরণে এসেছে সাফল্য? অতীত ও বর্তমানের পাতা ঘেঁটে জানালেন অংশুমান চক্রবর্তী

Must read

জাতিসংঘ কী
একটি আন্তঃসরকারি সংস্থা হল জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রপুঞ্জ। এটাই বিশ্বের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক সংস্থা। আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা, জাতিসমূহের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা, মানবাধিকার রক্ষা, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিনিময় এবং জাতিসমূহের কর্মকাণ্ডকে সমন্বয় করার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ এই সংস্থা নিষ্ঠার সঙ্গে করে চলেছে। অতীতের পাতা ঘেঁটে জানা যায়, ১৯৪৫ সালের ২৪ অক্টোবর, ৫১টি রাষ্ট্র জাতিসংঘ সনদ স্বাক্ষর করার মাধ্যমে জাতিসংঘ সূচিত হয়। এটা ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং পরবর্তীতে বিলুপ্ত ‘লিগ অব নেশনস’-এর স্থলাভিষিক্ত হয়েছিল। এর পিছনে ছিল একটি বিশেষ কারণ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে বিজয়ী মিত্রশক্তি পরবর্তীকালে যাতে যুদ্ধ ও সংঘাত প্রতিরোধ করতে পারে— সেই উদ্দেশ্যেই হয়েছিল জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠা। তখনকার বিশ্ব রাজনীতির পরিস্থিতি জাতিসংঘের সাংগঠনিক কাঠামোতে বর্তমানেও প্রতিফলিত হচ্ছে।

আরও পড়ুন-তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে যোগ বিজেপি-র ২ বুথ সভাপতির

সনদ অনুমোদনের দিনে
প্রতি বছর ২৪ অক্টোবর বিশ্বের সকল স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রে জাতিসংঘ দিবস পালিত হয়। সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুসারে জাতিসংঘ সনদ অনুমোদনের দিনে ১৯৪৮ সালে এই দিনটি পালনের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছিল। দিনটি জাতিসংঘ সপ্তাহ, যা ২০ থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত চলে। জাতিসংঘ দিবসে সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের সভা-সমাবেশ, আলোচনা-অনুষ্ঠান এবং প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়ে থাকে। যাতে বিশ্ববাসীর কাছে জাতিসংঘের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য তুলে ধরা যায়। প্রসঙ্গত, জাতিসংঘ দিবস পালনের পাশাপাশি একই দিনে বিশ্ব উন্নয়ন তথ্য দিবস পালন করা হয়।
উদ্দেশ্য অনেকটাই সফল
মূলত সাতটি লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য রয়েছে জাতিসংঘের। সেগুলো হল বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা, বিভিন্ন জাতি তথা দেশের মধ্যে সম্প্রীতি স্থাপন, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের মধ্যে সহযোগিতা গড়ে তোলা, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান গড়ে তোলা, বিভিন্ন দেশের মধ্যে বিদ্যমান বিবাদ মীমাংসা করা, প্রত্যেক জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের স্বীকৃতি ও তার সমুন্নত রাখা, উদ্দেশ্যসমূহ বাস্তবায়নের জন্য জাতিসংঘের কার্যধারা অনুসরণ করা৷
উদ্দেশ্যগুলো বাস্তবায়নের জন্য জাতিসংঘ তার ছ’টি শাখার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে। অনেকটাই সফল হয়েছে উদ্দেশ্য।

আরও পড়ুন-জীবনবিমা-স্বাস্থ্যবিমায় জিএসটি প্রত্যাহারের সুপারিশ মন্ত্রিগোষ্ঠীর

স্থায়ী সদস্য কোন কোন দেশ
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ৫টি স্থায়ী সদস্য হল— মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া ও চিন। এরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয়ী দেশ। অক্টোবর, ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রের সংখ্যা ১৯৩। যার মধ্যে ২টি পর্যবেক্ষক। সাংগঠনিকভাবে জাতিসংঘের প্রধান অঙ্গ সংস্থাগুলো হল— সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ, সচিবালয়, অছি পরিষদ ও আন্তর্জাতিক আদালত। এছাড়াও রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনেস্কো, ইউনিসেফ ইত্যাদি। জাতিসংঘের প্রধান নির্বাহী হলেন এর মহাসচিব। সব কাজের মূল উদ্দেশ্য হল জনসাধারণ ও সমাজের উপকার এবং জীবনমানের উন্নতি সাধন করা।
ইস্ট নদীর তীরে সদর দফতর
জাতিসংঘের সদর দফতর নিউ ইয়র্ক শহরে অবস্থিত। এছাড়া জেনেভা, নাইরোবি, ভিয়েনা ও হেগ শহরে সংস্থাটির অন্যান্য দফতর রয়েছে। সদর দফতরটি ১৬ একর জমিতে নির্মিত। ১৯৪৯ থেকে ১৯৫০ সালের মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছে। ভবনটি ইস্ট নদীর তীরে অবস্থিত। সদর দফতর স্থাপনের জমি কেনার জন্য জন ডি রকফেলার জুনিয়র ৮.৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেন। তিনি জাতিসংঘকে এই জমি দান করেন। সদর দফতরের মূল ভবনটির নকশা প্রণয়ন করেন লে করবুসিয়ে, অস্কার নিয়েমেয়ার-সহ অনেক খ্যাতনামা স্থপতি। নেলসন রকফেলারের উপদেষ্টা ওয়ালেস কে হ্যারিসন এই স্থপতি দলের নেতৃত্ব দেন। আনুষ্ঠানিকভাবে সদর দফতরের উদ্বোধন হয় ১৯৫১ সালের ৯ জানুয়ারি। সদর দফতরটি নিউ ইয়র্কে হলেও জাতিসংঘের বেশ কিছু অঙ্গ সংগঠনের প্রধান কার্যালয় সুইজারল্যান্ডের জেনেভা, নেদারল্যান্ডসের হেগ, অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা, কানাডার মন্ট্রিয়ল, ডেনমার্কের কোপেনহেগেন, জার্মানির বন ও অন্যত্র অবস্থিত।
দাফতরিক ভাষা
জাতিসংঘের ছয়টি দাফতরিক ভাষা হল ইংরেজি, আরবি, চিনা, ফরাসি, রুশ, এবং স্পেনীয়। জাতিসংঘের সচিবালয়ে যে দুটি ভাষা ব্যবহৃত হয় তা হল ইংরেজি ও ফরাসি। জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষাগুলোর মধ্যে ইংরেজি ৫৪টি সদস্য দেশের সরকারি ভাষা।
ফরাসি হল ২৯টি দেশের, আরবি ২৪টি দেশের, স্পেনীয় ২১টি দেশের, রুশ ১০টি দেশের এবং চিনা ভাষা ৪টি দেশের সরকারি ভাষা।
এছাড়াও জাতিসংঘে কিছু প্রস্তাবিত দাফতরিক ভাষা হল বাংলা, হিন্দি, জার্মান, পর্তুগিজ, মালয়, তুর্কি, জাপানি, সোয়াহিলি ইত্যাদি।

আরও পড়ুন-আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেল বাংলার ‘সুন্দরিনী’, অভিনন্দন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

অঙ্গসংগঠনের সংখ্যা
জাতিসংঘের প্রধান অঙ্গসংস্থা বা অঙ্গসংগঠন রয়েছে মোট ৬টি। সেগুলো হল সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ, অছি পরিষদ, আন্তর্জাতিক আদালত, সচিবালয়।
জাতিসংঘের সকল রাষ্ট্রই সাধারণ পরিষদের সদস্য। প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রের ১টি ভোটাধিকার রয়েছে। সাধারণ সভায় ৫ জন প্রতিনিধি প্রতিটি সাধারণ সভায় একটিদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার সাধারণসভার বার্ষিক অধিবেশন শুরু হয়।১০টি অস্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র নির্বাচন এবং ECOSOC-এর ৫৪ জন সদস্য নির্বাচন করে। সভাপতির কার্যকাল এক বছর।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ১১টি। অস্থায়ী সদস্য নির্বাচিত হয় ২ বছরের জন্য। নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্থাব বাস্তবায়নের জন্য ৯টি সদস্যরাষ্ট্রের সম্মতির প্রয়োজন। ৫টি স্থায়ী ও ৪টি অস্থায়ী সদস্যরাষ্ট্র। নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হয় ১ মাসের জন্য। ভেটো শব্দটি ল্যাটিন; এর শব্দগত অর্থ ‘আমিমানিনা’। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য (ভেটো ক্ষমতা সম্পন্ন) দেশ রয়েছে ৫টি। এগুলো হল— মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চিন। নিরাপত্তা পরিষদের আরও ১০টি অস্থায়ী সদস্য রয়েছে।
এবার আসা যাক অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ প্রসঙ্গে। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদকে জাতিসংঘ পরিবার বলা হয়। বর্তমান সদস্য ৫৪ এবং সদস্য রাষ্ট্রের মেয়াদ তিন বছর। প্রতি বছর ১৮টি দেশ অবসর গ্রহণ করে এবং নতুন ১৮টি দেশ অন্তর্ভুক্ত হয়। বছরে ২ বার অধিবেশন বসে। জেনেভাতে। এই পরিষদের ৫টি আঞ্চলিক কমিটি আছে।
নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী রাষ্ট্র জাতিসংঘের অছি পরিষদের সদস্য। ট্রাস্ট বা সাহায্য ভুক্তসমূহের রক্ষণাবেক্ষণ এদের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়। জাতিসংঘের মাধ্যমে নাউরু, নিউগিনি, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, ক্যামেরুন স্বাধীনতা পায়। ১৯৯৪ সালে পালাউ-এর স্বাধীনতা প্রাপ্তির মাধ্যমে সকল অছিভুক্ত দেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক আইল্যান্ড একমাত্র অছি পরিষদভুক্ত অঞ্চল। ১৯৯৪ সালের পর অছি পরিষদের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।
জাতিসংঘ দ্বারা পরিচালিত আন্তর্জাতিক আদালত ১৯৪৬-এর ৩ এপ্রিল থেকে কাজ শুরু করেছে। ১৫ জন বিচারপতি নিয়ে জাতিসংঘের আওতায় এর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বিচারকদের কার্যকাল ৯ বছর। একটি দেশ থেকে কেবল একজন বিচারক একই সময়ে বিচারক নিযুক্ত হতে পারে।
রোজালিনহ্যাগিন্স (টক) এই আদালতের প্রথম মহিলা বিচারপতি। সভাপতির মেয়াদকাল ৩ বৎসর। নেদারল্যান্ডের দ্য হেগে এর প্রধান সদর দফতর।
সকল প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয় মহাসচিব। নিযুক্তির ক্ষেত্রে পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে মহাসচিব ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হন। এর ইউরোপীয় সদর দফতর জেনেভা। জাতিসংঘ সচিবালয় যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে অবস্থিত। এর প্রধানের উপাধি হল সেক্রেটারি জেনারেল বা মহাসচিব। এর দফতর-সংখ্যা ৮টি।

আরও পড়ুন-পূর্ণিমার কোটালের জলোচ্ছ্বাসে ভাসল দিঘার সৈকত

জাতিসংঘ তার সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মাঝে নির্দিষ্ট লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শুভেচ্ছা-দূত নিয়োগ করে থাকে। শুভেচ্ছা-দূতের মধ্যে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নেতা, খেলোয়াড়, চলচ্চিত্র তারকা প্রমুখ পেশাজীবীদেরকে সম্পৃক্ত করা হয়। জাতিসংঘ শান্তির বার্তাবাহক, খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, এইচআইভি ও এইডস কর্মসূচি, পরিবেশ কার্যক্রম, ইউএনডিপি, ইউনেস্কো, ইউনোডিসি, ইউএনএফপিএ, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন, ইউনিসেফ, ইউনিডো, ইউনিফেম, বিশ্ব খাদ্য সংস্থা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রমুখ প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাগুলো তাদের কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য শুভেচ্ছা দূত হিসেবে সময়ে সময়ে এইসব বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের নিয়োগ করে থাকে।
এবারেও ২৪ অক্টোবর, সারা পৃথিবীতে পালিত হবে জাতিসংঘ দিবস। আলোচনা হবে জলবায়ু পরিবর্তন, শান্তি বিনির্মাণ এবং স্থিতিশীল উন্নয়নের মতো বৈশ্বিক সমস্যা নিয়ে। জোরকদমে চলছে তোড়জোড়।

জাতিসংঘ ও সাধারণ পরিষদ
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বিতর্ক সভায় পারে নিজের মতামত প্রকাশ করতে। জাতিসংঘ সনদের ১০ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সাধারণ পরিষদ জাতিসংঘের সনদের অন্তর্ভুক্ত যে-কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারে। পরবর্তীতে বিভিন্ন শাখায় পাঠাতে পারে সুপারিশ।
বিশ্বশান্তি এবং নিরাপত্তা রক্ষা করাও সাধারণ পরিষদের কাজ। তাই যে-কোনও রাষ্ট্র বা সদস্য রাষ্ট্র কর্তৃক শান্তি ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে-কোনও বিষয় সাধারণ পরিষদে পাঠানো যায়। পাঠানো বিষয়গুলো পরিষদ কর্তৃক পর্যালোচনা করার পর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাঠানো হয়।
আন্তর্জাতিক আইন প্রণয়ন করতে পারে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। এমনকী বিভিন্ন রাষ্ট্রের আচার-আচরণ অনুসন্ধান ও পর্যালোচনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইনের প্রসার ঘটাতে পারে।
সাধারণ পরিষদ বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করে। তাই যে কোনও রাষ্ট্র বা সদস্য রাষ্ট্র কর্তৃক শান্তি ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে-কোনও বিষয় সাধারণ পরিষদে পাঠানো যায়। ওই বিষয়ে সাধারণ পরিষদে পর্যালোচনা করার পর নিরাপত্তা পরিষদে পাঠায়।
জাতিসংঘের অন্যান্য শাখার কাজের অনুসন্ধান ও নিয়ন্ত্রণ সাধারণ পরিষদ করে। অন্যান্য শাখাগুলো সাধারণ পরিষদের কাছে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রদান করে এবং সাধারণ পরিষদ ওই প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।

আরও পড়ুন-দুর্গমতম মাউন্ট ভানোতি জয় করলেন শিলিগুড়ির দুই যুবক

নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশক্রমে যে-কোনও রাষ্ট্রকে নতুন সদস্যরূপে গ্রহণ করতে পারে। পাশাপাশি পুরনো যে-কোনও সদস্য রাষ্ট্রকে সাময়িক কিংবা স্থায়ীভাবে বহিষ্কারও করতে পারে।
পরিষদটি কিছু কিছু অর্থ-সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করে। জাতিসংঘের বাজেট পাশ করা এর অন্যতম কাজ। এছাড়াও, সংস্থার বাজেট পরীক্ষা-নিরীক্ষা-সহ অনুমোদন করে। পাশাপাশি সদস্যভুক্ত রাষ্ট্রসমূহের বার্ষিক চাঁদার পরিমাণ স্থির করে।
নির্বাচন-সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড সম্পাদন করাও প্রধান কার্যসমূহের একটি। জাতিসংঘের মহাসচিব, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জন্য ১০ জন অস্থায়ী সদস্য, আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের সদস্য এবং অছি পরিষদের কতিপয় সদস্য নির্বাচন করা এর অন্যতম দায়িত্ব।
বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার লক্ষ্যে সাধারণ পরিষদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। পারস্পরিক সম্প্রীতি ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক কোনও কারণে ছিন্ন হলে সংস্থাটি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা করে। ইতিমধ্যেই সংস্থাটি সাফল্যের সঙ্গে বহু সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হয়েছে।

Latest article