ক্ষুদ্রশিল্প-রাস্তা-জলপ্রকল্প-চাষে নজর, বাঁকুড়ায় তোপ মুখ্যমন্ত্রীর

বিজেপি আসলে ‘ভোট পাখি’। ভোটের আগে আসে আর তারপরে তাদের আর পাত্তা পাওয়া যায় না। উন্নয়নে পাশে থাকে রাজ্য সরকারই।

Must read

মণীশ কীর্তনিয়া বাঁকুড়া: বাংলায় আমরা উচ্ছেদ করি না, পাট্টা দিই। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে উচ্ছেদের নামে বুলডোজার চালায় বিজেপি। দু’দিন আগেই উচ্ছেদ করতে গিয়ে মা-মেয়েকে পুড়িয়ে মেরে ফেলেছে। এই বেলায় কেন্দ্রীয় দল কোথায়? কই সেখানে তো কোনও সেন্ট্রাল টিম যায়নি! আর বাংলায় কিছু না-হতেই খালি টিম পাঠাচ্ছে! এভাবেই শুক্রবার বাঁকুড়ার বলরামপুরের প্রশাসনিক সভা থেকে উচ্ছেদ ও বুলডোজারের রাজনীতিকে একহাত নিয়ে বিজেপিকে ধুয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন-সমবায় ভোটে জিতল তৃণমূল

একইসঙ্গে মহিলাদের ক্ষমতায়নে যে বাংলা এক নম্বর সেকথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি মহিলাদের ক্ষমতায়নে সারা বিশ্বে বাংলা এক নম্বর। মেয়েরাই একদিন দেশ চালাবে। বাংলায় আমরা মহিলাদের ক্ষমতায়নে প্রথম থেকে জোর দিয়েছি। তাদের এগিয়ে দিয়েছি। এদিন বিজেপিকেও একহাত নিয়ে তীব্র কটাক্ষে ‘বসন্তের কোকিল’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, বিজেপির নেতারা সব ভোটের আগে আসে। ভোট নিয়ে পালিয়ে যায়। বিজেপি বাঁকুড়া থেকে সাংসদ বিধায়ক— সব পেয়েছে। কিন্তু এখানকার মানুষের জন্য বিজেপি কিচ্ছু করেনি। বিজেপি ১০০ দিনের কাজের টাকা, বাংলা আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে। মনে রাখতে হবে বাংলার মানুষ ভিক্ষা চায় না এটা তাদের অধিকার। সাফ কথা মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি এদিন আবারও বলেন, আমি ম্যাজিশিয়ান নই। টাকার জোগাড় করতে হয় আমায়। এর মধ্যেও সব উন্নয়ন প্রকল্প ও সরকারি স্কিমের পরিষেবা দিচ্ছি। এটা বাংলার মানুষের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা। শুক্রবার বাঁকুড়ার প্রশাসনিক সভা থেকে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার মানুষের কাছে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা পৌঁছে গেল। মোট ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭২টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। উন্নয়নের খতিয়ান দিতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন— ৩২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ পর্যন্ত রাস্তা তৈরি হচ্ছে যা বাঁকুড়ার ওপর দিয়ে যাবে।

আরও পড়ুন-৫ বছরে মেঘালয়ে দুর্নীতির তদন্তের কথা বলেননি কেন শাহ-নাড্ডা? প্রশ্ন অভিষেকের

বিজেপি আসলে ‘ভোট পাখি’। ভোটের আগে আসে আর তারপরে তাদের আর পাত্তা পাওয়া যায় না। উন্নয়নে পাশে থাকে রাজ্য সরকারই। সাফ কথা মুখ্যমন্ত্রীর। তাঁর কথায়, বিজেপি উচ্ছেদ করে। আর আমরা জমি থেকে উচ্ছেদ করি না পাট্টা দিই। কিন্তু ভোটের পরে ভোট পাখিদের আর দেখা পাওয়া যায়নি বাঁকুড়ায়। বিজেপি সাংসদদের হাত ধরে এলাকায় উন্নয়নের ছিটেফোঁটাও আসেনি। যা উন্নয়ন হয়েছে, তা রাজ্য সরকারই করেছে। বিজেপি শুধু বিভাজন করে। বিবাদ বাধায়— তোপ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এরপরই তিনি বলেন, আগে মাওবাদীদের জন্য আমরা জঙ্গলমহলে আসতে পারতাম না। কিন্তু গত ১১ বছরে একটাও মাওবাদী হানা বা মাওবাদী-সংক্রান্ত ঘটনা ঘটেনি। এখন জঙ্গলমহলে শুধুই উন্নয়ন।

আরও পড়ুন-বাংলার মুকুটে নয়া পালক, এবার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে একাধিক কেন্দ্রীয় পুরস্কার

এদিনের সভার শুরু থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাত্র-ছাত্রী ও মহিলাদের উৎসাহিত করতে থাকেন। তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মহিলাদের ক্ষমতায়নের বিষয়ে উদ্যোগী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২৩-’২৪-এর রাজ্য বাজেটেও তার ছাপ রয়েছে। কন্যাশ্রী থেকে লক্ষ্মী ভাণ্ডার হয়ে বার্ধক্যভাতা, সঙ্গে বিধবা পেনশন— মহিলাদের আজীবন আর্থিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরুলিয়ার মতো বাঁকুড়াতেও জলের সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্যা মেটাতে রাজ্য সরকারের ২২টি চেক ড্যাম-সহ একাধিক জলপ্রকল্পের কাজ চলছে। এ ছাড়াও জলস্বপ্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২৪ সালের মধ্যে এই জেলার সব বাড়িতে নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছে যাবে। ইতিমধ্যেই ৩ লক্ষ বাড়িতে নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছে গিয়েছে। এদিনের সভায় ছিল উপচে-পড়া ভিড়। বিশেষ করে ছাত্র-যুব এবং মহিলাদের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো।

Latest article