ছোট থেকেই পায়ে বেড়ি সুতপার। সকাল থেকে রাত, চলতে হয় সংসারের নিয়ম মেনে। ইচ্ছেমতো কিছু করার উপায় নেই। না পারেন নিজের ইচ্ছায় খেতে, না পারেন নিজের ইচ্ছায় যেতে। ছোট ভাই ড্যাং ড্যাং করে বিদেশ ঘুরে এল। একা একাই। সুতপারও ইচ্ছে হয়। একা একা বিদেশ ঘোরার। এটা ঠিক, মহিলাদের একাকী ভ্রমণ আগে ভাবাই যেত না। বিদেশ ভ্রমণ তো বহু দূরের কথা। তবে ধীরে ধীরে বদলেছে সময়। বদলেছে পরিবেশ, পরিস্থিতি। সরে গেছে ভয়। এখন মেয়েরা ব্যাগপত্তর গুছিয়ে বেরিয়ে পড়েন। একা একাই। সঙ্গী ছাড়াই। উড়ে যান বিদেশে। কয়েকদিন বেড়িয়ে ঘরে ফেরেন। দিন দিন সংখ্যাটা বাড়ছে। সুতপাও স্বপ্ন দেখেন একা একা বিদেশ ঘোরার। সুতপার মতো অনেক মেয়েই এই স্বপ্ন দেখেন। একা একা বেড়ানোর ক্ষেত্রে কোন কোন দেশ মহিলাদের জন্য নিরাপদ, শুরুতেই দেখে নেওয়া যাক।
জাপান
সূর্যোদয়ের দেশ জাপান। ছবির মতোই সুন্দর। প্রযুক্তির তীর্থক্ষেত্র হলেও নিজেদের ঐতিহ্যগুলো টিকিয়ে রেখেছে সসম্মানে। জাপানে যে শহরেই যাওয়া হোক না কেন, কোয়াসান শহরটি কোনওভাবেই মিস করা যাবে না। শিল্প, স্থাপত্য ও সংস্কৃতি এখানে এক হয়েছে। ছোট এই শহরটি শুধু সুন্দর তা-ই নয়, জীবদ্দশায় সবচেয়ে সেরা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা দেবে। মূল আকর্ষণ বৌদ্ধ মন্দির। এখানে রাতে থাকা যায়। জাপানের রীতিনীতিগুলো সম্পূর্ণ পালন করা হয় মন্দিরগুলোয়। একা মহিলার জন্য নিরাপদ স্থান।
থাইল্যান্ড
আন্দামান সাগর এবং থাইল্যান্ড উপসাগরের তীরে অবস্থিত থাইল্যান্ড। অসংখ্য সুন্দর সৈকত, মনোমুগ্ধকর সংস্কৃতি। ক্রেতাদের স্বর্গরাজ্য হিসেবেও বিবেচিত হয়। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের এই দেশটিতে বেশকিছু স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে। ঘুরে দেখা যায় ব্যাংকক, ফুকেট, পাটায়া। একা মহিলা এই দেশে নিরাপদে ঘুরে বেড়াতে পারেন।
আরও পড়ুন-অনার-কিলিং কেন অনিচ্ছাকৃত হত্যার অভিযোগে বদলে গেল?
ইতালি
একা একা ইতালি যাওয়া যায়। প্রার্থনা ও সুন্দর মুহূর্ত কাটাতে রোম সেরা। তবে তার চেয়েও বেশি কিছু চাইলে যেতে হবে টুস্ক্যানিতে। এই শহরের বাতাসে আছে অদৃশ্য এক শান্তি, যা মনকে জাগতিক জটিলতা থেকে দূরে নিয়ে যায়। এই শহরটি অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় মানুষ বেশি পছন্দ করেন। ফ্লোরেন্স থেকে অল্প কিছু সময়ের দূরত্ব। তাই ফ্লোরেন্স ও তুস্কানি শহরে একসঙ্গে বেড়ানোর সুযোগও থাকবে। বাড়তি পাওনা হতে পারে এলাকার মানুষের বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার।
গ্রিস
ঘুরে আসা যায় গ্রিসের মিকোনোস। একে গ্রিসের পার্টি আইল্যান্ডও বলা হয়ে থাকে। সুন্দর সুন্দর সমুদ্রসৈকতে সাজানো এই দ্বীপ। রাতের দৃশ্যগুলো সবচেয়ে বেশি উপভোগ্য। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তদের জন্য ইনস্টাগ্রাম ফ্রেন্ডলিও বলা যায়। উপভোগ করা যায় সি ফুড। মূল শহরটিও খুবই আকর্ষণীয়। আছে বুটিক, আর্ট গ্যালারি, বইয়ের দোকান, নানা প্রদর্শনীর দোকান আর অবশ্যই ক্যাফে ও বারে ভর্তি। এছাড়াও আছে বেশ কিছু চার্চ। একা একা ঘুরে বেড়ানো যায়।
সুইজারল্যান্ড
সৌন্দর্যের রানি। চোখজুড়ানো সবুজ। সুইজারল্যান্ডের যে-কোনও শহরই মুগ্ধ করবে। পাহাড়ের পাদদেশে, নদীর ধারে বিন্যাস করে সাজানো এখানকার ঘরবাড়িগুলো। বাড়ির চারপাশেও অবারিত সবুজ আর ফুল-ফল। সুইজারল্যান্ডে তুলনামূলক ভাবে খরচ বেশি হলেও, টাকা উশুল হয়ে যাবে বলা যায়। এই দেশে ভ্রমণে নিজেকে একা লাগবে না। রাস্তায় প্রায়ই দেখতে পাবেন ভিন্ন ভাষাভাষীর লোক। বুঝেশুনে বন্ধুত্বও করে নিতে পারেন।
কোস্টারিকা
পর্যাপ্ত সূর্যের আলো। মাঝেমধ্যে বৃষ্টি-বাদল। প্রকৃতি যেন নিজ হাতে সাজিয়েছে দেশটিকে। কোস্টারিকার বৈচিত্র মুগ্ধ করবেই। রোমাঞ্চ ও অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়দের জন্য এই দেশটি হতে পারে প্রথম পছন্দ। রেইন ফরেস্ট থেকে শুরু করে সমুদ্রবিলাস সবই উপভোগ করা যায়। সৈকতগুলো দেবে প্রশান্তি। কোস্টারিকার খাবারও বেশ উপভোগ্য। একা মহিলা আনন্দের সঙ্গে ভ্রমণ করতে পারবেন।
দেশ নির্বাচন না হয় হল। কিন্তু হুট করে একা একা বেরিয়ে পড়লেই তো হল না। তার আগে মানসিক প্রস্তুতি দরকার। জেনে নিতে হবে অনেককিছু। বিদেশ ভ্রমণে একাকী মহিলার কোন কোন সতর্কতা প্রয়োজন, জানতে হবে সেই বিষয়েও। সেগুলো কী কী?
জায়গা সম্পর্কে ধারণা
যে দেশে যাচ্ছেন, সেই দেশ নিয়ে আগে গুগল সার্চ করুন। পরিচিত কারও অভিজ্ঞতাও শুনতে পারেন। জেনে নিন জায়গার ঐতিহাসিক ভিত্তি, আবহাওয়া, নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আর্থসামাজিক অবস্থা কিংবা খরচাপাতি কেমন, জানুন। এই জানাশোনা ভ্রমণকে সহজ করবে। একেবারে কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না? ভ্রমণ শুরুর আগে যে হোটেল বুকিং করেছেন, তাদের
সঙ্গে চ্যাট করুন। কোনও স্থানে ঘুরতে গেলে অন্তর্জাল ঘেঁটে তথ্য জেনে নিন। সেই দেশের সংস্কৃতি, গণ পরিবহণ, দর্শনীয় স্থান,
মানুষজন সম্পর্কে ধারণা থাকলেই শুধু হবে না, নিরাপত্তার দিকটাও খতিয়ে দেখতে হবে।
কোন ধরনের যানবাহন চলে আগাম জানা
থাকলে চট করে বিপদে পড়ার ভয়
থাকবে না।
ভাষা
মনে রাখতে হবে, পৃথিবীর সমস্ত দেশই কিন্তু ইংরেজি বোঝে না। ফলে বিপদে পড়লে সমস্যার কথা বোঝানো যেমন কঠিন হবে, তেমন নিজেকেও প্রতিপদে সমস্যায় পড়তে হবে। ভিন দেশের ভাষা চট করে শিখে ফেলা সম্ভব নয় ঠিক কথা, কিন্তু জরুরি কিছু বাক্য, ওষুধের নাম, খাবারের নাম সেই দেশের ভাষায় কী বলে জেনে নিলে ভাল হয়। এর জন্য এইআই টুল কাজে লাগানো যেতে পারে।
আরও পড়ুন-মার্কিন ভিসা বাতিল ৫০ শতাংশ পড়ুয়ারই
হস্টেল
একা গেলে খরচ একটি বড় বিষয়। সে ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য কোনও হস্টেল আছে কি না, দেখে নেওয়া যায়। হস্টেল বুক করার আগে তার সম্পর্কে বিশদে জেনে নিতে হবে। এখন সমাজমাধ্যমে যে কোনও থাকার জায়গার ‘রিভিউ’ পাওয়া যায়। সেগুলি পড়ে নিতে পারলে জায়গাটা সম্পর্কে বোঝা যাবে।
পারিপার্শ্বিক পরিবেশ
বাইরে বেরোলে চোখ-কান খোলা রাখতেই হবে। পাসপোর্ট, টাকা খুব সাবধানে রাখা দরকার। পাসপোর্ট কোনও কারণে হারিয়ে গেলে দেশে ফেরা ভীষণ সমস্যার হবে। বিদেশ ভ্রমণে গেলে সঙ্গে সব সময় পাসপোর্ট সামলে রাখার পাশাপাশি হোটেলের ব্যাগে পাসপোর্টের প্রথম এবং শেষ পাতার রঙিন প্রতিলিপি, পরিচয়পত্র, ছবিও রাখা দরকার। কোনও কারণে পাসপোর্ট খোয়া গেলে নথিগুলি দারুণভাবে কাজে আসবে।
জরুরি নম্বর
যে দেশে যাচ্ছেন সেই দেশের পুলিশ-প্রশাসন, পর্যটন সংক্রান্ত কোনও হেল্পলাইন নম্বর, বিদেশে অবস্থিত নিজের দেশের দূতাবাসের নম্বর সংগ্রহে রাখাটা সব সময়ই ভাল। বিপদে পড়লে সুবিধা হতে পারে। পাশাপাশি বিদেশ থেকে দেশের কার সাহায্য পাওয়া যাবে সেটাও মাথায় রেখে ফোন নম্বর, ই-মেইল সঙ্গে রাখুন। সবটুকু মোবাইল বন্দি না করে পুরনো পন্থায় ফিরে ডায়েরিতেও টুকে রাখা যেতে পারে। কোনও কারণে মোবাইল অচল হলে বা খোয়া গেলে এই পন্থাই কিন্তু কাজে আসবে। ভ্রমণের সব নথির এক সেট ছাপা ও এক সেট সফট কপি তৈরি করুন। ভ্রমণের আগেই সব নথির সফট কপি নিজের মেইলে রাখার পাশাপাশি এমন একজন বিশ্বস্ত পরিচিতজনের মেইলে দিয়ে রাখুন, যিনি নিয়মিত ই-মেইল চেক করেন এবং ভিনদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ই-মেইল আদান-প্রদানে যথেষ্ট পারদর্শী। কী জন্য? ধরুন ভ্রমণে গিয়ে সব খোয়া গেল। তখন আপনার সমস্যা জানার সঙ্গে সঙ্গে ওই পরিচিতজন অনলাইন ঘেঁটে সংশ্লিষ্ট দেশের পুলিশ, দূতাবাস ও ফরেন মিনিস্ট্রির সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের প্রয়োজনীয় নথির সফট কপি পাঠাতে পারবেন।
সন্দেহ হলে সচেতন
অনেক সময়ই মনে কাউকে নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। মনে হয় আদৌ সেই মানুষটি ঠিক তো! মন কিন্তু নানা কারণে আগাম সতর্ক হয়। সেই ব্যাপারটি অবহেলা না করাই ভাল। ভ্রমণে রোমাঞ্চ থাক, তবে সতর্কতাও খুব জরুরি।
লোকাল ম্যাপ সংগ্রহ
ইউরোপ-আমেরিকার বৃষ্টিকে বিশ্বাস নেই। এসব দেশে গেলে ছাতা সঙ্গে রাখুন। হোটেল বুকিং করুন শহরের প্রাণকেন্দ্রে, যেখানে লোকসমাগম বেশি থাকে। পৌঁছেই একটা লোকাল ম্যাপ সংগ্রহ করুন। এই ম্যাপ হেঁটে শহর ঘোরায় কাজে লাগবে। যে ভৌগোলিক অঞ্চলে যাচ্ছেন, ওখানকার একজন হোস্ট নির্বাচন করুন। চেনাজানা কেউ না থাকলে হোটেলের কর্মকর্তাকেই হোস্ট নির্বাচন করতে পারেন। যেকোনও পরিস্থিতিতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার ঠিকানা, নম্বর সব সময় সঙ্গে রাখুন। হোস্ট নির্বাচনে নিজের বুদ্ধিবৃত্তিক কৌশলগুলো কাজে লাগান।
আরও পড়ুন-বিজেপিকে চরম হুঁশিয়ারি সংঘের
আর্থিক বিষয়াদি
ভ্রমণে একটি আর্থিক উৎসের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হওয়া উচিত হবে না। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে যে কোনও সময় ব্যাঘাত ঘটতে পারে। নগদ অর্থও সঙ্গে রাখুন। নাহলে বিদেশে সমস্যায় পড়বেন।
পোশাক ও প্রসাধন
ভ্রমণের সময় পোশাক ও প্রসাধনের বাহুল্য পরিহার করা উচিত। শীতকালে ভ্রমণে গরম কাপড় সঙ্গে নিন। তরল দ্রব্য ১০০ মিলিগ্রামের বেশি হলেই বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন তা ফেলে দেবে। তাই লোশন, সানস্ক্রিন, পারফিউম চেক-ইন লাগেজে রাখুন। সানগ্লাস-টুপি ভ্রমণ সহায়ক। সঙ্গে রাখুন কয়েকটি প্লাস্টিকের ব্যাগ। ভেজা কাপড় সংরক্ষণ করতে সহায়ক হবে। সুচ-সুতো রাখুন। সমতল শহরে হেঁটে বেড়ানোর জন্য এক জোড়া স্পঞ্জ দারুণ আরাম দেবে। তবে পাহাড়ি এবং পাথুরে অঞ্চলের জন্য কেডস বেশি আরামদায়ক।
দরকারি ওষুধ
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, গ্যাস্ট্রিক, হাঁপানি, বমির সমস্যা থাকলে সেই অনুযায়ী ওষুধ সঙ্গে নিন। প্রয়োজনের চেয়ে কিছু ওষুধ বেশি নিন। ফিরতে দেরিও তো হতে পারে। আমেরিকা বা ইউরোপে গেলে আমাদের দেশের ওষুধের নাম শনাক্ত করা কঠিন। ইউরোপ-ল্যাটিন অঞ্চলে ভাষাও একটা বড় বাধা। তাই দেশ থেকেই ওষুধ কিনে নিন। আফ্রিকা ও লাতিনের কিছু অঞ্চলে কীটপতঙ্গের ঝুঁকি আছে। অ্যান্টিমসকুইটো স্প্রে বা ক্রিম সঙ্গে নিন। মাইনাস আবহাওয়ার দেশে হঠাৎ আপনার শরীর ঠান্ডা মানিয়ে নিতে নাও পারে। স্যানিটারি ন্যাপকিন সঙ্গে রাখবেন। ডলার-পাউন্ড যেমন প্রতিদিন নিজের সঙ্গে রাখবেন, তেমনি ন্যাপকিনও সঙ্গে রাখুন। স্যালাইন, অ্যান্টিসেপটিকও থাকুক।
ডিভাইস
ভ্রমণে মোবাইল, ল্যাপটপ, ক্যামেরা সঙ্গে থাকে। সেগুলো রিচার্জ করার জন্য সঠিক অ্যাডাপ্টর সঙ্গে নিয়েছেন তো? দেশভেদে ইলেকট্রিক প্লাগ, সকেট, ভোল্টেজ ভিন্ন ভিন্ন হয়। ভ্রমণ একটি দীর্ঘ চলমান প্রক্রিয়া। ভ্রামণিকেরা বারবার দেশান্তরী হবেন। তাই বিভিন্ন দেশ-মহাদেশের
অ্যাডাপ্টর সংগ্রহ করার চেষ্টা করুন আর আজীবন তা সংগ্রহে রাখুন।
খাবারদাবার
ভাবুন কোনও দূর দ্বীপে বেশ রাতে গেছেন। ততক্ষণে দোকানপাট সব বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু শুকনো খাবার সঙ্গে রাখুন। অল্প পরিমাণে রান্নার কিছু মৌলিক উপাদান যেমন চাল, ডাল, মশলা নিয়ে নিতে পারেন। হস্টেল বা ডর্মে রান্নার ব্যবস্থা থাকে। সামান্য খিচুড়ি রেঁধে নিজের পেটকে ওই মুহূর্তে সামাল দেওয়া যাবে। ফ্লাইটে পচনশীল খাবার বহন দণ্ডনীয়, এমন কিছু তাই নেওয়া যাবে না। প্রতিটি ভ্রমণই আনন্দের। তাই ছোটখাটো বিষয় নিয়ে যাতে বড় সমস্যা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
আরও পড়ুন-নৈহাটি ব্রাত্যজনের নাট্যোৎসব
আত্মবিশ্বাসী হতে সাহায্য করে
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ৩৫ বছরের কম যেসব মহিলার বয়স, তাঁরাই বেশি একা একা বেড়াতে যান। ৩৫ বছরের বেশি বয়সি মহিলারা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যেতে পছন্দ করেন। অনেকেই মনে করেন, মহিলাদের একা একা বেড়াতে বেরনো অত্যন্ত দরকারি। কারণ এই ভ্রমণ তাঁদের স্বাধীনতা, আত্ম-আস্থা এবং আত্ম-অনুসন্ধানকে উৎসাহিত করে। নতুন সংস্কৃতি এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করতে এবং জীবনের উপর নিয়ন্ত্রণ নিতে সাহায্য করে। একা ভ্রমণকালে, মহিলারা নিজেদের পরিকল্পনা এবং আগ্রহ অনুসরণ করতে পারে। এটা তাঁদের নতুন বন্ধু তৈরি করতে এবং বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতেও সাহায্য করে। তাঁদের জীবনকে নিজেদের মতো করে সাজাতে এবং তাদের ইচ্ছামতো কাজ করার স্বাধীনতা দেয়। নতুন পরিবেশে একা ভ্রমণ করতে গিয়ে মহিলারা নিজেদের সম্পর্কে আরও ভালভাবে জানতে পারেন। একা ভ্রমণ নতুন সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, এবং মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ করে দেয়। একা ভ্রমণ মহিলাদের আত্ম-নির্ভর হতে এবং নিজেদের উপর আস্থা রাখতে সাহায্য করে। একা ভ্রমণ শেষে, মহিলারা একটি বিশেষ ধরনের সাফল্যের অনুভূতি লাভ করেন, যা তাঁদের আত্মবিশ্বাসী হতে সাহায্য করে। ছিঁড়ে গেছে বেড়ি। আত্মবিশ্বাস বাড়াতে আরও বেশি সংখ্যক মহিলা একা একা বিদেশ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ুন। পৃথিবী তাঁদের চায়।