শ্রী মহালক্ষ্মী মন্দির, কলকাতা
কলকাতার ডায়মন্ড হারবার রোডে খিদিরপুর সেন্ট থমাস স্কুলের কাছে অবস্থিত শ্রী মহালক্ষ্মী মন্দির। প্রায় ২৫,০০০ বর্গফুট বিস্তৃত। ৭৫ ফুট উঁচু। বিশাল মন্দিরটি ‘বাস্তু শাস্ত্র’ অনুসারে নকশা করা হয়েছে। ভারতীয় মন্দির স্থাপত্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মন্দিরের নকশা উত্তর ভারতের প্রাচীন স্থাপত্য শৈলী দ্বারা অনুপ্রাণিত। ভক্ত এবং দর্শনার্থীরা মন্দিরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মা লক্ষ্মীকে সম্মান জানাতে প্রতীকী ভঙ্গিতে মন্দিরে প্রবেশ করে। প্রাঙ্গণ প্রাচীরটি সূক্ষ্ম ত্রিশূল দিয়ে সাজানো। মন্দিরের মন্দিরের ভিতরে বয়স্ক বা অসুস্থ ভক্তদের জন্য স্থাপন করা হয়েছে একটি লিফট। গর্ভগৃহের সুন্দরভাবে সাজানো পার্শ্ব দেয়ালগুলোও সাদা মার্বেল দিয়ে তৈরি। শ্রী মহালক্ষ্মীর সুন্দর খোদাই করা মূর্তিটি গর্ভগৃহের কেন্দ্রে অবস্থিত। খাঁটি এবং মূল্যবান সাদা মার্বেল দিয়ে তৈরি। সূক্ষ্মভাবে খোদাই করা। অপূর্ব পদ্মফুলের উপর দাঁড়িয়ে আছেন দেবী। ভক্তদের সম্পদের পাশাপাশি সমৃদ্ধির আশীর্বাদ করছেন। নামেই বোঝা যাচ্ছে, এই মন্দিরের অভ্যন্তরে পূজিতা হন মা লক্ষ্মী। এছাড়াও আছেন ভগবান গণেশ এবং ভগবান হনুমান। শ্রী মহালক্ষ্মী মন্দির কলকাতার বৃহত্তম মা লক্ষ্মীর মন্দির। প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়। মঙ্গলবার এবং শুক্রবার ভোর ৫.৪৫ থেকে ৬.৪৫ পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য বিশেষ পুজো অনুষ্ঠিত হয়। তখন এখানে প্রচুর ভিড় দেখতে পাওয়া যায়। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ এখানে অনুষ্ঠিত সমস্ত উৎসব উদযাপন করতে আসেন, যার মধ্যে রয়েছে দুর্গাপুজো, নবরাত্রি, লক্ষ্মী পুজো, দীপাবলির মহা উৎসব এবং আরও অনেক কিছু।
লক্ষ্মী মন্দির, বীরভূম
প্রায় দেড় হাজার বছর আগের কথা। স্বপ্নাদেশ পেয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বীরভূমের ময়ূরেশ্বরে ঘোষ গ্রামের মা লক্ষ্মী। সেই থেকে এই গ্রামের আরাধ্যা দেবী মা লক্ষ্মী। এই গ্রামের কোনও বাড়িতেই লক্ষ্মী পুজো হয় না। মন্দিরেই মা লক্ষ্মীর আরাধনা করেন গ্রামবাসীরা। কথিত আছে, হর্ষবর্ধনের আমলে সাধক কামদেব ব্রহ্মচারী সেখানে এসেছিলেন। মায়ের সাধনার আসনের সন্ধানে বীরভূমের রাঢ় অঞ্চলে ঘুরতে ঘুরতে তিনি একচক্র ধাম বীরচন্দ্র পুরে গর্ভবাসে এসে পৌঁছন। জানা যায়, ভরা বর্ষায় যমুনায় সাঁতরে তিনি ঘোষ গ্রামে পৌঁছান। রাত্রি হয়ে যাওয়ায় তিনি নিম গাছের নিচে বসে ঘুমিয়ে পড়েন। সেখানে স্বপ্ন দেখেন ত্রেতা যুগে রাম, লক্ষ্মণ, হনুমান বনবাসের জন্য কিছু দিন এই গ্রামে কাটিয়েছিলেন। ঘোষ গ্রামে ওই নিম গাছের তলায় তিনি সাধনা শুরু করেন বলে কথিত আছে। দীর্ঘ দিন কঠোর সাধনা করার পর তিনি মা লক্ষ্মীর স্বপ্নাদেশ পান। কথিত আছে, তাঁকে মা লক্ষ্মী স্বপ্ন দিয়ে বলেন, ‘যেখানে তুই সাধনা করছিস সেখানে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজোর ব্যবস্থা কর।’ এই কাজে তাঁকে সাহায্য করেন গ্রামের সজল ঘোষ নামে এক কৃষক। একদিন কৃষি কাজে ওই কৃষক মাঠে গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছেলে। দয়াল কৃষি কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এমন সময় একটি শ্বেত পদ্ম ভাসতে দেখে ফুল তোলার জন্য বাবার কাছে সে বায়না ধরে। ছেলের বায়না রাখতে দয়াল ঘোষ শ্বেত পদ্মটি তুলতে গেলে সেটি সরে যায়। ব্যর্থ হয়ে তিনি বাড়ি ফিরে যান। এরপর রাতে তিনি স্বপ্ন পান, কোনও সাধক পুরুষই শ্বেতপদ্ম তুলতে পারবে। এরপর ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে ব্রহ্মচারীর কাছে ছুটে যান। সেদিন ছিল কোজাগরী পূর্ণিমা তিথি। ব্রহ্মচারী দয়ালকে সঙ্গে নিয়ে শ্বেতপদ্ম ও ভাসমান কাষ্ঠখণ্ড তুলে নিয়ে এসে গঙ্গার মাটির রঙ দিয়ে লক্ষ্মীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেছিলেন। সেই থেকে আজও ঘোষ গ্রামে কোনও বাড়িতে লক্ষ্মী পুজো হয় না। গ্রাম্য দেবী মা লক্ষ্মী তাঁদের আরাধ্য দেবতা। মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দির রাজা কৃষ্ণচন্দ্র খবর পেয়ে মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। কোজাগরী রাতে ৯টি ঘট ভরে নবঘটের পুজো করা হয়। ১০৮টি ক্ষীরের নাড়ুর নৈবেদ্য দেওয়া হয়। লক্ষ্মীপুজোর দিন সকাল থেকেই গ্রামের মানুষ ভিড় করে সেখানে। শুধু কোজাগরী লক্ষ্মী নয়, প্রতি বছর পৌষ মাসে বৃহস্পতিবার ধুমধাম করে পুজো হয়, মেলাও বসে।
আরও পড়ুন-বিষ খাইয়ে জুবিনকে খুন ম্যানেজারের বিরুদ্ধে, বিস্ফোরক ব্যান্ডসদস্য
মহালক্ষ্মী মন্দির, কোলহাপুর
মহারাষ্ট্রে কোলহাপুরের করবীরপুর শক্তিপীঠের মহালক্ষ্মী মন্দির অম্বাবাই মন্দির নামেই জনপ্রিয়। দুর্গা সপ্তশতী অনুসারে, দেবী মহালক্ষ্মী এখানে চতুর্ভুজা সিংহবাহিনী। দেবী তাঁর এক হাতে গদা, অন্য হাতে যথাক্রমে সুরাপাত্র, লেবু বা শ্রীফল এবং খেটক বা ঢাল ধারণ করেছেন। ইতিহাস বলছে, ৬৩৪ খ্রিস্টাব্দে পঞ্চগঙ্গা নদীর তীরে কর্নাটকের চালুক্য শাসনামলে রাজা কর্ণদেব এই মন্দির নির্মাণ করেন। একাধিক পুরাণে এই মন্দিরের উল্লেখ আছে। কোঙ্কণ রাজা কামদেও, চালুক্য , শিলাহারা, দেবগিরি রাজবংশের যাদবেরা এই শহরে এসেছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। আদি শঙ্করাচার্যও মন্দির দর্শন করেছিলেন। ছত্রপতি শিবাজি এবং ছত্রপতি শম্ভাজি যখন এই এলাকা শাসন করতেন, তখন তাঁরা নিয়মিত মন্দিরে দেবীদর্শন করতেন।
লক্ষ্মী দেবী মন্দির, ডোড্ডাগড্ডাভল্লি
দেশের অন্যতম বিখ্যাত লক্ষ্মী দেবীর মন্দিরটি রয়েছে কর্নাটকের ডোড্ডাগড্ডাভল্লিতে। হাসান জেলা থেকে প্রায় কুড়ি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই স্থানটি হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র তীর্থস্থান। বলা হয় দ্বাদশ শতকে রাজা বিষ্ণু বর্ধনের রাজত্বকালে এক ধনী বণিক কুল্লানা রাহুতা এবং তাঁর স্ত্রী সহজ দেবী এই মন্দির নির্মাণ করেন। মন্দিরের অপূর্ব সুন্দর স্থাপত্য ভাস্কর্যে দ্রাবিড়িয় সংস্কৃতির ছাপ স্পষ্ট। এছাড়াও এতে মহারাষ্ট্র এবং উত্তর ভারতের শিল্প শৈলির প্রভাবও পড়েছে। মূলত চারটি বড় মন্দির নিয়ে তৈরি এই কমপ্লেক্সের পূর্ব দিকের মন্দিরে রয়েছেন দেবী লক্ষ্মী। উত্তরের মন্দিরটি কালী-দুর্গা, পশ্চিমেরটি শিবকে উৎসর্গ কর হয়েছে। দক্ষিণের মন্দিরটি খালি। সম্ভবত এটি বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করার কথা ছিল। মন্দিরের জ্যামিতিক নকশা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এছাড়াও মন্দির কমপ্লেক্সে আরও পাঁচটি ছোট মন্দির বর্তমান। লক্ষ্মী দেবী মন্দিরটি হোয়সালা শৈলিতে নির্মিত প্রাচীনতম মন্দিরগুলির মধ্যে একটি।
অষ্টলক্ষ্মী মন্দির, চেন্নাই
চেন্নাইয়ের এলিয়টস বিচের কাছে অবস্থিত অষ্ট লক্ষ্মী মন্দির। এখানে রয়েছে দেবীর আট অবতার। মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৪ সালে। এই মন্দিরে অষ্টলক্ষ্মী অর্থাৎ দেবী লক্ষ্মীর আটটি রূপের পুজো হয় নয়টি পৃথক গর্ভগৃহে। এই গর্ভগৃহগুলি চারটি স্তরে বিরাজমান। লক্ষ্মী-নারায়ণ মন্দিরটি দ্বিতীয় স্তরে রয়েছে। সেখান থেকেই পুজো শুরু হয়। সিঁড়ি ধরে পথটি তৃতীয় তলে যায়। সেখানে রয়েছে সন্তানলক্ষ্মী, বিজয়লক্ষ্মী, বিদ্যালক্ষ্মী এবং গজলক্ষ্মীর মন্দির। আরও কয়েকটি ধাপ পরে আছে ধনলক্ষ্মীর মন্দির। এটা চতুর্থ তলের একমাত্র মন্দির। মূল মন্দির থেকে বেরিয়ে প্রথম স্তরে আদিলক্ষ্মী, ধান্যলক্ষ্মী এবং ধার্যলক্ষ্মীর মন্দির রয়েছে। মন্দিরে দশাবতার বা বিষ্ণুর অবতার, গুরুবায়ুরাপ্পন, গণেশ, ধন্বন্তরী এবং অঞ্জনেয়ার দেবতাও রয়েছে।
অষ্টলক্ষ্মী মন্দির, হায়দরাবাদ
অষ্টলক্ষ্মী মন্দির হল ভারতের হায়দরাবাদের কোঠাপেটের রামকৃষ্ণপুরমে অবস্থিত একটি হিন্দু মন্দির। শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত মন্দিরটি দক্ষিণ ভারতীয় স্থাপত্যের রীতিতে নির্মিত এবং দেবী লক্ষ্মীকে তাঁর আটটি রূপে উপস্থাপন করে। এই মন্দিরের নকশা এবং স্থাপত্য চেন্নাইয়ের মন্দির থেকে ধার করা হয়েছিল। তবে নির্মাণ শুরু হওয়ার সময় বেশ কিছু পরিবর্তন করা হয়। মন্দিরটি সম্মিলিত প্রচেষ্টার এক চমৎকার উদাহরণ। বিভিন্ন মহল থেকে মানুষ উদারভাবে দান করার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। মন্দিরটিকে বর্তমান রূপ দিতে পাঁচ বছরের অবিরাম পরিশ্রম এবং মোট ১ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। বালি এবং সিমেন্ট দিয়ে তৈরি হলেও, অষ্টলক্ষ্মী মন্দিরটি শিল্পীদের দক্ষতা প্রকাশ করে। ভিতরে আদিলক্ষ্মী, ঐশ্বর্যলক্ষ্মী, সান্ত্বনালক্ষ্মী, ধনলক্ষ্মী, ধান্যলক্ষ্মী, গজলক্ষ্মী, বিজয়লক্ষ্মী এবং বরলক্ষ্মীর মূর্তি স্থাপিত রয়েছে। মূর্তিগুলি সোনা এবং কসুল পেরু নেকলেস এবং অন্যান্য নেকলেস দিয়ে সজ্জিত। মন্দিরটি কোথাপেটের কাছে ভাসাভি কলোনিতে দিলসুখ নগর এবং এলবি নগরের মধ্যে অবস্থিত।
মহালক্ষ্মী মন্দির, মুম্বই
মুম্বইয়ের বিখ্যাত মহালক্ষ্মী মন্দিরের বয়স প্রায় ৩০০ বছর। বলা হয়, ১৮৩১ সালে মন্দির নির্মাণ করেন ঢাকজি দাদাজি নামে এক বণিক। দেশের বাণিজ্য নগরী মুম্বইয়ের অন্যতম বিখ্যাত এই মহালক্ষ্মী মন্দিরে পূজিত হন ত্রিদেবী। মহাকালী, মহালক্ষ্মী এবং মহাসরস্বতী। কিংবদন্তি, এই মন্দিরের মূর্তি নাকি কখনও খোদাই করে তৈরি করা হয়নি। এটা নাকি নিজে থেকেই পাথরের উপর আবির্ভূত হয়েছিল। কথিত আছে যে, ঔপনিবেশিক শাসন আমলে হর্নবি ভেলার্ড নির্মাণের সময় সমুদ্র থেকে মূর্তিটি উঠে আসে। দেবীর জন্য মন্দির তৈরি করে দেন সেই বণিক। বর্তমানে এই লক্ষ্মী মন্দির অত্যন্ত জনপ্রিয়। বিশেষ করে নবরাত্রির সময় এখানে ভক্তরা জড়ো হন দলে দলে।
আরও পড়ুন-বিসর্জনের পথে মহিলার মৃত্যু
কৈলা দেবী মন্দির, করৌলি
রাজস্থানের করৌলি জেলায় অবস্থিত কৈলা দেবী মন্দিরে মা লক্ষ্মী বা দুর্গা পূজিত হন কৈলা দেবী রূপে। স্কন্দপুরাণ অনুযায়ী, দেবী জানান যে, কলিযুগে কৈলা বা কৈলেশ্বরী রূপে তিনি পূজিতা হবেন। আবার বেদ অনুযায়ী, কলিযুগে কৈলা দেবীর পূজা করলে অবিলম্বে সিদ্ধি মিলবে। আবার আরেকটি মতে, নন্দ-যশোদার যে কন্যাসন্তানের সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণকে বদলে নেওয়া হয়েছিল, তিনিই ছিলেন দেবী কৈলা। এই দেবীই কোথাও পূজিতা হন বিন্ধ্যবাসিনী, কোথাও আবার হিংলাজ মাতা রূপে। রাজস্থানের কৈলা মন্দির নিয়ে রয়েছে এক চমকপ্রদ কাহিনি। কথিত আছে, দেবী মূর্তিকে রক্ষা করতে এক যোগী পুরুষ সেটাকে নিয়ে নাগোরকোট থেকে গরুর গাড়ি করে পালাচ্ছিলেন। এদিকে দেবী কৈলা ঋষি কেদারগিরিকে আশ্বাস দেন যে, তিনি এলাকার মানুষের কাছেই থাকবেন। ফলে যোগীর গাড়ির বলদটি যেতে যেতে পাহাড়ের মাঝে এক ঘন জঙ্গলের মধ্যে থেমে যায়। আর নড়ে না। ঐশ্বরিক আদেশে সেই স্থানেই মূর্তিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৭২৩ সালে মহারাজা গোপাল সিং জি মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করেন এবং ১৭৩০ সালে এর কাজ সম্পন্ন হয়।
মহালক্ষ্মী মন্দির, পুনে
পুনের মহালক্ষ্মী মন্দিরটি দ্রাবিড় স্থাপত্যশৈলীতে খোদাই করা। এই অসাধারণ স্থাপত্যশৈলী ইট-পাথরের বাইরেও বিস্তৃত এবং ধর্মীয় পবিত্রতাকে ফুটিয়ে তোলে এবং ভক্তের উপর এক জাদুকরী প্রভাব ফেলে। মন্দিরটি ‘বাস্তুশাস্ত্র’ মেনেই তৈরি হয়েছে। প্রাথমিক কাঠামোর উপরে একটি গম্বুজ রয়েছে, যা পিরামিড আকৃতির। মন্দিরে প্রবেশের ঠিক আগে বা মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে বেরিয়ে আসার পরে যাঁরা মন্দিরের বাইরে থেকে এটা দেখেন, তাঁদের জন্য এটা সৌভাগ্য এবং সমৃদ্ধি বয়ে আনে বলে বিশ্বাস করা হয়। মণ্ডপের বারান্দাটি ‘গর্ভগৃহ’ অর্থাৎ গর্ভকক্ষে যাওয়ার পথ নির্দেশকারী স্তম্ভ দিয়ে সজ্জিত। গর্ভগৃহ হল মন্দিরের একেবারে কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি ছোট মন্দির কক্ষ। এর ভেতরে ‘ত্রিশক্তি’, দেবী শ্রী মহাসরস্বতী, শ্রী মহালক্ষ্মী এবং শ্রী মহাকালীর প্রতীক স্থাপন করা হয়েছে। এই মূর্তিগুলি ছয় ফুট লম্বা এবং নির্মল মার্বেল দিয়ে খোদাই করা হয়েছে। এঁরাই পূজিতা হন। এই গর্ভগৃহের চারপাশে একটি পরিক্রমা পথ রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন ঋষি, মুণির মূর্তি খোদাই করা আছে। আরতি করার সময়, ছাদের মাঝখান থেকে ঝুলন্ত একটি বড় ঘণ্টা বাজানো হয়। এই ঘণ্টার দ্বারা সৃষ্ট ইতিবাচক তরঙ্গ ভক্তদের দেবতার প্রতি সম্পূর্ণ মনোযোগী হতে সাহায্য করে। কর্পূর এবং ধূপের সুবাস সমগ্র স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। প্রদীপের নরম উষ্ণতা এবং ধর্মীয় মন্ত্র জপ সমগ্র স্থানকে প্রশান্ত করে। কেবল ঘণ্টাই অনুরণিত হয় না এবং মানসিক শান্তি বয়ে আনে না, প্রতিটি সূক্ষ্ম বস্তু বা খোদাইয়ের পিছনে একটি ঐশ্বরিক বিশ্বাস থাকে, যা শেষ পর্যন্ত ভক্তকে সম্পূর্ণরূপে ধার্মিক হতে সক্ষম করে। মন্দিরের সুন্দর পরিবেশে ধ্যান করা যায়।