সোনম ওয়াংচুর পরিবেশ-প্রেমের গল্প

সদ্য উদযাপিত হল বিশ্ব পরিবেশ দিবস৷ সেই সুবাদে যাঁর কথা অবধারিত মনে আসে তিনি সোনম ওয়াংচু৷ পরিবেশ বাঁচিয়ে রাখার জন্যে পুরো লাদাখের মানুষ তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। যাঁরা বিশ্বাস করেন পরিবেশ বাঁচলে লাদাখ বাঁচবে। লাদাখ বাঁচলে সোনম ওয়াংচুরা। লাদাখের সেই পরিবেশপ্রেমীর লড়াইয়ের গল্প শোনালেন বিশ্বজিৎ দাস

Must read

সাজো-সাজো রব। চারদিক থেকে মানুষজন আসবেন। লাদাখ বাঁচাও আন্দোলনে শামিল হবেন। নেতৃত্বে রিল জগতের র্যানচো। বাস্তবের সোনম ওয়াংচু। প্রথমে ভেবেছিলেন অনশনে বসবেন খারদুংলা পাসে। সেখানকার -৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরে অবশ্য তুষারপাতের কারণে স্থান পরিবর্তন করার কথা ভাবেন। কিন্তু তাতেও প্রশাসন বাদ সাধে। প্রযুক্তিবিদ, উদ্ভাবক এবং পরিবেশবিদ সোনম ওয়াংচুকে গৃহবন্দি থাকতে হয়। প্রশাসন জীবনহানির আশঙ্কায় তাঁর খারদুংলা যাওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু কিছুতেই পিছু হটতে রাজি নন। কথা দিয়ে কথা না রাখার গল্পে অভ্যস্ত হয়েছেন সোনম। তবু তাঁর বিজ্ঞানীসত্তা টানা ১৫ দিন ধরে চলছে অনশনের আবহে। তাঁর সঙ্গে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন শ’য়ে শ’য়ে লাদাখবাসী।

আরও পড়ুন-বৈঠক শেষে এক নজরে তৃণমূলের সংসদীয় কমিটি

পথে এবার নামো সাথী
সিনেমার হিরো র্যানচো হার মানায় রিয়াল লাইফের র্যানচোকে। সিনেমার মতো আসলে লাইফের সে চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসে। চ্যালেঞ্জ নেওয়া এবং তাকে জয় করাই র্যানচোর অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৯ সালের সরকারি আশ্বাস উপেক্ষা করে পথে নেমেছেন লাদাখের পরিবেশপ্রেমী বিজ্ঞানী সোনম ওয়াংচু। লাদাখের প্রাকৃতিক সম্পদ এবং প্রকৃতিকে রক্ষা করার জন্যেই তাঁর পথে নামা। চার দফা দাবিকেই সামনে রেখে সোনম হাঁটতে চাইছেন। তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ লাদাখের পরিবেশ রক্ষা করা।
জিরো ডিগ্রির নিচের তাপমাত্রায় টানা ১৫ দিন অনশনে থেকেছেন। সারা পৃথিবীর পরিবেশপ্রেমীরা সোনমের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। পাশাপাশি স্থানীয়দের দাবি, কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলের স্বীকৃতি নয় বরং পূর্ণ রাজ্যের তকমা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সোনম আজও বিশ্বাস করেন স্রেফ বেঁচে থাকার থেকে ভাল আছি তবে দারুণ ভাল থাকার থেকে একটু কম।

আরও পড়ুন-বৃক্ষরোপণের প্রক্রিয়া শুরু করলেন দেব

ফেল করলেই এই স্কুলে
সোনমকে দেখে শুধু বিশ্ববাসী শিখছে না শিখছে ৩৭০-হীন ভারত, শিখছে ধর্মনিরপেক্ষ ভারত, শিখছে বাংলা, শিখছে কলকাতাও। পরিবেশই যে কারওর শুধু প্রেম হতে পারে, পরিবেশকে শুধু ভালবেসে নিজের জীবনকে যিনি বাজি রাখতে পারেন। তিনিই সোনম ওয়াংচু। তিব্বতীয় ভাষায় সোনম শব্দের অর্থ ভাগ্যবান আর ওয়াংচুর অর্থ শিব বা শক্তি। থ্রি ইডিয়টস্-এর শেষ দৃশ্যে সেই গাঢ় নীল হ্রদের কাছেই জন্মেছিলেন সোনম। লেহ জেলার উলেটে কপো গ্রামে। সময়টা ছিল ১৯৬৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর। লেহ ছেড়ে শ্রীনগরে পাড়ি দেন সোনম শুধু পড়াশোনার জন্য। যৌবনের চটকদার রঙিন দুনিয়া তাঁকে স্পর্শ করেনি। বরং বিবর্ণ বাস্তব তাঁর ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বারবার হতাশ হয়েছেন নিজের প্রদেশের শিক্ষার অবনতি দেখে। তাঁর পাহাড়ি গ্রামের এলাকায় প্রায় প্রত্যেকেই দশম শ্রেণির ম্যাট্রিকে ফেল করেছেন। ফলে একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রসংখ্যা প্রায় শূন্যে দাঁড়িয়েছে। সোনম অবশ্য ছাত্র-ছাত্রীদের ফেল করাননি ফেল করিয়েছেন ওই শিক্ষাব্যবস্থাকে। জোর করে হিন্দি শেখানো, বিদেশি ভাষা শেখা সব কিছুর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নিজেই হয়ে উঠেছেন ব্যতিক্রমী এক সিলেবাস। কাশ্মীরের এনআইটি শ্রীনগর থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছেন সোনম। লাদাখ এবং ভারতবাসীকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার নয় বরং লাদাখের দরকার পরিবর্তিত আধুনিক শিক্ষাপদ্ধতি। যেমন ভাবনা তেমন কাজ সঙ্গীসাথীদের নিয়ে তৈরি করে ফেললেন সেকমল অলটারনেটিভ স্কুল। পাশে পেলেন সরকার এবং স্থানীয় মানুষদের। নতুন এই প্রকল্পের নাম দিলেন অপারেশন নিউ হোপ। গড়ে তুললেন সামাজিক এবং অর্থনৈতিক আন্দোলন। সোনম ওয়াংচু হয়ে উঠলেন লাদাখের আশা-জাগানিয়া। দুঃসাধ্যকে সাধন করলেন। দেড় দশকের লাদাখের পাশের হার ৫ থেকে ৭৫-এ পৌঁছাল। সোনম অবশ্য তাঁর স্কুলকে ভাবনায় এবং আঙ্গিকে অন্যন্য করতে চেয়েছেন। স্কুলের ভর্তির জন্য প্রাইমারি শর্ত ম্যাট্রিকে ফেল। পাশ করে যদি কেউ আবেদন করেন তবে তাঁকে থাকতে হবে ওয়েটিং লিস্টে।
তবে এই স্কুল তৈরির ক্ষেত্রেও তিনি প্রকৃতি এবং পরিবেশের বন্ধু হয়ে উঠেছেন। স্কুলের ঘরগুলি তৈরি করেছেন মাটি দিয়ে। এমন জায়গায় স্কুল তৈরি করেছেন যেখানে বিদ্যুৎ বা গ্যাস কিছুই পৌঁছয়নি, তাই জীবাশ্ম জ্বালানির বদলে সৌরশক্তিতে নির্ভরশীল ক্যাম্পাস বানিয়েছেন। প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে -১৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট থেকে -২০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের তাপমাত্রা বজায় রেখেছেন ক্যাম্পাসের অন্দরমহলে।

আরও পড়ুন-অমিত মালব্যর বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ বিজেপির রাহুল সিনহার ভাইয়ের

পরিবেশ এক প্রেমকথা
সোনম ওয়াংচু স্কুলের পাশেই বরফ ব্যবহার করে বানিয়েছেন আইস হকি মাঠ। লাদাখে ছয় দশক ধরে ছেলেদের হকিখেলার যে মনোপলি ছিল সেকমল স্কুল তাও ভেঙে দিয়েছে। (এরপর ২০ পাতায়)
(১৯ পাতার পর)
শুধু তাই নয়, লাদাখের প্রথম প্রিন্ট ম্যাগাজিন লাদাগস মেলং-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সম্পাদক ছিলেন সোনম ওয়াংচু। সোনম টানা একুশ দিন হাড়হিম-করা ঠান্ডা উপেক্ষা করে রাজধানী লেহতে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছেন। তাঁর বিশ্বাস প্রতিশ্রুতি পূরণ না হলে লাদাখের পরিবেশ আন্দোলন চলতেই থাকবে। তাঁর বিশ্বাস— ইস দেশকে লিয়ে আব জান নেহি, জিন্দেগি দেনে কি জরুরত হ্যায়। এখন রক্ত নয়, দেশ বরং চায় সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা। সেলুলয়েডের সোনমকে বাস্তবের সোনম বলতেন— এপারে লাদাখ আর ওপারে (পাকিস্তান) বালতিস্তান। মাঝখানে এক টুকরো বরফের ভূমি সিয়াচেন। এই নিয়ে দুই সীমান্তে এত লড়াই, এত বিবাদ। এত খরচ। এই টাকা যদি শিক্ষাখাতে ঢালা হত, কী চমৎকার পরিবর্তনই না আমরা দেখতে পেতাম! শিক্ষার চেয়ে বড় সুরক্ষা আর কী হতে পারে?

আরও পড়ুন-জামাই ষষ্ঠীতে অর্ধদিবস ছুটি রাজ্য সরকারি কর্মীদের

লাদাখ বাঁচলে ভারত বাঁচবে
পরিবেশকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে পুরো লাদাখের মানুষ তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেকের বিশ্বাস পরিবেশ বাঁচলে লাদাখ বাঁচবে, লাদাখ বাঁচলে সোনম ওয়াংচুরা বাঁচবে। লাদাখের এই পরিবেশ-প্রেমের আন্দোলন শুরু হয়েছে অনেক আগেই সময়টা ২০১৩ সালের শেষের দিক। সোনম ওয়াংচুর সবচেয়ে যুগান্তকারী আবিষ্কার পরিবেশপ্রেমীদের মধ্যে ভাবনার জন্ম দিয়েছে। সোনম ওয়াংচু তৈরি করেছেন ‘বরফ–স্তূপা’ শীতে লাদাখের জমাট বাঁধা বরফ গ্রীষ্মে গলে গিয়ে ওই এলাকার কৃষকদের জলের জোগান দেয়। কিন্তু সেই বরফ গলতে গলতে পেরিয়ে যায় জুন-জুলাই মাস। এমনকী এর ফলে বন্যাও হয়। ঠিক তার আগেই এপ্রিল-মে মাসে চাষের কাজের জন্যে তৈরি হয় তীব্র জলের সংকট। এই সংকটের কথা মাথায় রেখেই সোনম তৈরি করলেন ‘বরফ-স্তূপা’। শীতের বরফ অপচয় না করে গ্রীষ্ম পর্যন্ত সংরক্ষণ করে রাখার কথা ভাবলেন। এই সংরক্ষণের কাজে লাগালেন বিজ্ঞানের নিতান্ত সাধারণ একটা পদ্ধতি, একটা হেলানো পাইপ দিয়ে উৎস থেকে জলচালনা শুরু করলেন। পাইপ দিয়ে জল যখন শেষ মুহূর্তে বের হবে তখন পাইপের ভিতরের চাপের কারণে একটা ফোয়ারার মতো বের হবে। তখন যেহেতু লাদাখে বাইরের তাপমাত্রা -২০ থেকে -৫০ ডিগ্রি থাকবে সেহেতু জল বের হতেই বরফ হতে শুরু করবে। এভাবে ফোয়ারার আকারে জল বাড়তে বাড়তে ওপরের দিকে উঠতে থাকবে এবং সমগ্র বরফের স্তূপটি একটি কোণের আকার ধারণ করবে। এভাবে স্তূপীকৃত বরফের মধ্যে জল অনেক দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করে রাখা যাবে।
সোনমের ‘বরফ-স্তূপা’
২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তৈরি হল প্রথম বরফের আধার বা স্তূপা। দোতলা বাড়ির সমান সেই স্তূপাতে জল ধরে রাখা যায় প্রায় দেড় লাখ লিটার। এগুলো দেখতে অনেকটা তিব্বতীয় বৌদ্ধ মঠগুলোর বৃত্তাকার পিরামিডের মতো তাই একে মন্দির না বলে স্তূপা বলা হয়। সোনম ওয়াংচু এই স্তূপার নাম দিলেন ‘বরফ স্তূপা’।

আরও পড়ুন-ছত্তিশগড়ে ফের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে খতম ৭ মাওবাদী

যেখানে পরিবেশ বিপদসংকেত দিয়েছে সেখানেই সোনম হয়ে উঠেছে একমাত্র ভরসা। সময়টা ২০১৫ সাল। লাদাখের ফুগটাল নদীর অববাহিকা। এল নতুন বিপদ। নতুন ভূ-ভাগের পাড়ে নদীর হঠাৎই গতি রোধ হল। তৈরি হল পনেরো কিলোমিটার দীর্ঘ হ্রদ। ফলে ব্যাহত হতে থাকে চাষের কাজ এবং বাড়তে থাকে বন্যার ঝুঁকিও। এবারও মাঠে নামতে হল সোনমকে। কর্তৃপক্ষ পরামর্শ দিলেন গাড়ি থেকে পেট্রোল চুরির পুরনো ‘সাইফন পদ্ধতি’ অনুসরণ করতে। হ্রদের জল নিষ্কাশন করে ফুগটালের অন্য প্রান্তে ফেলতে বললেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাঁর কথা রাখেনি। রাখল ভুট্টো সাহেবের কথা। মাইন বিস্ফোরণ করে হ্রদ খালি করা হল। একাজ করতে গিয়ে প্লাবিত হল গোটা এলাকা। ধ্বংস হল প্রায় এক ডজন সেতু। নিজের এলাকার লোকেরা সোনমকে ভুল চিনলেও সিকিম সরকার কিন্তু ভুল করল না। কারণ এই হ্রদের সমস্যা তাদেরই বেশি। তারা ডেকে নিল সোনমকে। সাইফোন পদ্ধতিতে কাজ শুরু করলেন পরিবেশের চিকিৎসক সোনম ওয়াংচু। এদিকে নিজের এলাকা লাদাখে স্তূপা তৈরির কাজ চলছে। ২০১৫ সালে তৈরি করলেন ৬৪ ফুটের স্তূপা। তবু গ্রিনিজ বুকে নিজের নাম লেখালেন না। স্বপ্ন দেখলেন ১০০ ফুটের স্তূপা তৈরির এবং সেই জল দিয়ে লাদাখে ৫০০০ গাছ লাগানো।
কৃত্রিম হিমবাহ তৈরি
২০১৬ সালে তাক লাগিয়ে দিলেন সোনম। কৃষির চেয়েও বৃহৎ কর্মপরিকল্পনায় ব্যবহার করলেন বরফ স্তূপাকে। তখন জলবায়ুর পরিবর্তনের দরুণ বিশ্বের তাপমাত্রা বাড়ছে। মেরু অঞ্চল-সহ হিমালয়ের বরফ গলতে শুরু করেছে। ফলে শুধু তাপমাত্রা বৃদ্ধিই নয়। প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় আছে পুরো বিশ্ব। এমন সময় বরফ স্তূপার প্রযুক্তিকেই কাজে লাগাতে চাইলেন সোনম। কৃত্রিম বনাঞ্চল মতো তৈরি করলেন কৃত্রিম হিমবাহ।

আরও পড়ুন-জামাইবরণ

লাদাখের উঁচু পাহাড়ি ঢালে যে নদী আর হ্রদগুলি আছে সেগুলো জল দিয়ে স্তূপা তৈরি করে প্রাকৃতিক সুরক্ষা দেওয়াল বানাতে চাইলেন। জলের প্রাচুর্যের কারণে এখানকার স্তূপাগুলো এতটাই বড় আর টেকসই ভাবে করা হল যে গলে যাওয়া ছাড়াই স্থায়ীভাবে সেগুলো টিকে যেতে পারে। বিশ্ব উষ্ণায়নের যুগে উন্নত দেশগুলো যখন কার্বনের নিঃসরণ বাড়িয়ে হিমবাহ ধ্বংস করছে, সেখানে র্যানচো ভাবছেন হিমালয়কে নতুন হিমবাহ উপহার দেওয়ার কথা। অথচ প্রাকৃতিকভাবে হিমবাহ তৈরি শেষ হয়েছিল সেই দশ হাজার বছর আগে।
আল্পসে সোনমের হিমবাহ
সোনমের এই পরিকল্পনা মুগ্ধ করেছে সুইজারল্যান্ডের সরকারকেও। তারাও লাদাখের মতো সুইজ আল্পসেও চালু করতে যাচ্ছে এই কৃত্রিম হিমবাহের প্রযুক্তি। তত্ত্বাবধানে সেই সোনম ওয়াংচুই। সোনম অবশ্য ভারতকে ভালবাসেন। ভালবাসেন লাদাখকেও তাই স্বপ্ন দেখেন লাদাখের ৬৫ একর জায়গা নিয়ে তৈরি হচ্ছে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়। পার্বত্য এবং শীতল মেরুর এলাকায় ভূপ্রকৃতি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রযুক্তি তার পাঠক্রমের বিষয়।
সোনমের স্বপ্নমিছিল
সোনমের স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয় পাঠক্রমে কলকাতা স্থান পেয়েছে কি না জানা নেই কিন্তু প্রতিনিয়ত পরিবেশের হুংকার এবং উষ্ণায়নের প্রভাব আতঙ্কিত করছে শহরবাসীকে। দিন দিন বাড়ছে উষ্ণতা, দেখা নেই বৃষ্টির। কিছু দিন আগেও ভূবিজ্ঞানীরা গবেষণায় জানিয়েছেন প্রকৃতিকে ভাল না বাসলে প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নেবেই। তাই শহরের মানুষকে দেখতে হয়েছে ভূকম্পনের কলকাতাকে। আবার শহরবাসীও আশঙ্কায় রয়েছেন হিমালয়ের বরফ গলতে শুরু করলে জলের নিচে চলে যাবে না তো শহর কলকাতা? কলকাতা শহরে কোনও র্যানচো নেই। নেই জল সংরক্ষণের ব্যবস্থা তাই কেউ স্বপ্ন দেখছে না কলকাতাকে সবুজে মুড়ে ফেলার বরং কংক্রিটে সেজে উঠছে কলকাতা। লাদাখের পরিবেশ রক্ষা করতে এবং তাদের জমি চিন কতটা দখল করে রেখেছে তাদের তা দেখতে সোনম নিয়ন্ত্রণরেখায় মিছিল করে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। সেই স্বপ্নে শুধু লাদাখ নয়, ভারতের যেকোনও প্রান্তের পরিবেশপ্রেমীরা পায়ে পায়ে হেঁটে চলেছেন নিয়ন্ত্রণরেখায় দিকে সেই মিছিলে স্লোগান নেই, পতাকা নেই, আছে শুধু অন্ধকার নামার আগে একহাতে মাটির প্রদীপ আর অন্য হাতে একটা করে চারা গাছ। সবার মন্ত্র এক লাদাখ বাঁচলে ভারত বাঁচবে। ভারত বাঁচলে কলকাতা বাঁচবে। কলকাতা বাঁচলে বাংলা বাঁচবে। কিন্তু প্রশ্ন একটাই, আমরা সবাই র্যানচোর নেতৃত্বে এই মিছিলে হাঁটব কবে?

Latest article