সোমনাথ বিশ্বাস, আগরতলা: ত্রিপুরার সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে (Biplab Deb) কটাক্ষ তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়ের (MP Sougata Roy)। ত্রিপুরা উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর প্রচারে এসেছেন তৃণমূল সাংসদ। সেখানেই তিনি বলেন, “এই বিপ্লব দেবকে (Biplab Deb) আমি (Sougata Roy) অনেক আগে থেকে চিনি। বিপ্লব গণেশ সিংয়ের ফরমাস খাটতো। ও গণেশের টাকা তুলতো। আর পার্লামেন্ট জিম ট্রেনার ছিল অনেকের। বেশি ব্যায়াম করে মাথা মোটা হয়ে যায়। তাই বিপ্লব দেবের মাথাও মোটা। একটা গুন্ডা ছিল। এই মূর্খ বলতো ৫ হাজার বছর আগে নাকি ইন্টারনেট ছিল। আর তাকেই দেখলাম হঠাৎ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী করে দিয়েছে বিজেপি। আবার চেয়ারও কেড়ে নেওয়া হয়েছে এখন।”
এদিন ৬, আগরতলা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী পান্না দেবের সমর্থনে একটি সভা থেকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন সৌগত রায়। বিজেপি প্রার্থীকে নিয়ে তিনি বলেন, “শুনেছি আগরতলার বিজেপি প্রার্থী ডাক্তার। কোনওদিন রাজনীতি করেননি। উনি জিতলে নিজে থেকে কোনও কাজ করতে পারবে না। আমাদের প্রার্থী পান্না দেব আগে কাউন্সিলর ছিলেন। ভালো কাজ করেছেন। ওনাকে জয়ী করুন। বিজেপির বিরুদ্ধে দেশজুড়ে লড়াই চলছে। মোদি হঠকারী সিদ্ধান্ত নেয়। নোটবন্দি করে। বায়ুদোষে কুপিত। পেট ঠিক হচ্ছে না। এখন অগ্নিপথ করেছে। গোটা দেশে ট্রেন জ্বলছে। আগুন জ্বলছে মোদির জন্য। তাই আপনারা ত্রিপুরায় বিজেপিকে হারিয়ে দিন। ধর্মের উপর ভিত্তি করে ওরা রাজনীতি করে। এই বিজেপিকে হারিয়ে দিন। বিজেপি পাগলের দল। ওদের ত্রিপুরা থেকে হটিয়ে দিন। আমরা আগরতলার চেহারা বদলে দেব। বিপ্লব আর তার বন্ধুরা কেন্দ্রের টাকা মেরে দিয়েছে। আর এখানে গুন্ডামি করছে। আরে বাবা, সিপিএমের মতো বড় গুণ্ডাদের বাংলা থেকে হটিয়ে দিয়েছি। আর বিজেপি তো সেখানে বাচ্ছা ছেলে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি তৃণমূল কংগ্রেস না করতেন, তাহলে এখনও পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম শাসন করতো।”
সুরমার গেরুয়া সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ তুলে এদিন সৌগত রায় বলেন, “সুরমায় আমাদের কর্মী-সমর্থকদের উপর নির্মম আক্রমণ হয়েছে। আমরা তখন দিল্লিতে। আভিষেকের নির্দেশে দিল্লির জাতীয় নির্বাচন কমিশনে গিয়ে গোটা ঘটনা জানিয়ে অভিযোগ করি। আমরা জানতে চাই, ত্রিপুরায় কী এভাবেই সন্ত্রাস চলবে? মুখ্য নির্বাচন কমিশন রাজীব কুমার আমাদের বলেন, এবার কিছু হলে সরাসরি তাঁকে ফোন করতে। তাই বিজেপির গুন্ডারা শুনে রাখুন। ভোট পর্যন্ত গন্ডগোল করলে কেন্দ্রীয় বাহিনী আপনাদের পেটাবে। আপনাদের নেতারাও কিন্তু বাঁচাতে পারবে না।”
ত্রিপুরায় দাঁড়িয়ে কংগ্রেস ও বামেদেরকেও আক্রমণ করেন সৌগত রায়। তাঁর কথায়, “আগরতলার কংগ্রেস প্রার্থী সুদীপ রায় বর্মনের বাবাকেও চিনতাম। সমীর বর্মন। সুদীপ আমার সঙ্গে বাংলাদেশ গিয়েছিল। ও খুব মানসিক অবসাদে ছিল। আমি বললাম তৃণমূলে এসো। কিন্তু ও চলে গেল কংগ্রেসে। কংগ্রেস গোটা দেশজুড়ে অপ্রাসঙ্গিক। রাহুল গান্ধীকে ইডি জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আমরা তার বিরুদ্ধে। ওদের নেতা শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ। তাই কংগ্রেস আপনাদের ত্রিপুরায় রক্ষা করতে পারবে না। রক্ষা করতে পারবে একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক। আবার সিপিএমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার ফুস হয়ে গিয়েছেন। বিরাট নেতা পলিটব্যুরোর। ১০৩২৩ জন শিক্ষকে চাকরি খেয়েছেন মানিক সরকার বামেরা তাঁদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে। তারপর বিজেপিও বিশ্বাস ঘাতকতা করল।”