প্রতিবেদন : ডিভিসির ছাড়া জলে জলভাসি উদয়নারায়ণপুর। শুক্রবার উদয়নারায়ণপুরের ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত জলের তলায়। ডিভিসি একতরফা জল ছাড়ায় কুর্চি-শিবপুর, হরালি, সিংটি, কানুপাঠ-মুনশুকা, আরডিএ পঞ্চায়েতের অধিকাংশ গ্রামই জলমগ্ন। জলমগ্ন মানুষদের উদ্ধারে নেমেছে সেনা। এদিন সকাল থেকে উদয়নারায়ণপুরের বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছে ২ কলাম (১১০ জন) সেনা। এছাড়াও এনডিআরএফ ও এসডিআরএফও উদ্ধারকাজে নেমেছে। জলমগ্ন এলাকার মানুষদের দ্রুত উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে আসা হচ্ছে। উদয়নারায়ণপুরের বিভিন্ন এলাকায় মোট ৮০টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে উদয়নারায়ণপুর হাসপাতাল, বিডিও অফিসও। পরিস্থিতি নিয়ে এদিন বিডিও অফিসে একটি প্রশাসনিক বৈঠক হয়।
সেখানে বিধায়ক সমীর পাঁজা, জেলাশাসক মুক্তা আর্য, পুলিশ সুপার সৌম্য রায়-সহ প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কীভাবে উদ্ধারকাজ চলবে এবং ত্রাণসামগ্রী বিলি করা হবে এবং পরিস্থিতির মোকাবিলায় কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বিধায়ক সমীর পাঁজা জানান, ‘‘পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সবরকমের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জলমগ্ন মানুষদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডিভিসি আগাম কোনও কিছু না জানিয়ে হঠাৎ করে এইরকম জল ছেড়ে দেওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’’ এদিকে উদয়নারায়ণপুরের পাশাপাশি এই জল শনিবার আমতারও অধিকাংশ এলাকাকে জলভাসি করবে। এর জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগাম সবরকমের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বিধায়ক সুকান্ত পাল বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিচ্ছেন। আমতা বিডিও অফিসেও প্রশাসনিক বৈঠক করে কীভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন :পরমবীরের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ
এদিকে ঝাড়খণ্ডে সরে যাওয়ার পথে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা অবধি ধারাবর্ষণ হল পুরুলিয়ায়। বৃহস্পতিবার সকাল আটটা অবধি চব্বিশ ঘণ্টায় বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ২২৬ মিলিমিটার, সন্ধ্যায় সেটা দাঁড়ায় ২৪৬ মিলিমিটার। শুক্রবার বৃষ্টি না হলেও আকাশ পুরোপুরি পরিষ্কার হয়নি। জেলার বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে প্রচুর বাড়ি ভেঙে পড়েছে। শহর থেকে জল নেমে গেলেও কংসাবতী, দ্বারকেশ্বর, শিলাবতী, সুবর্ণরেখা, দামোদর এখনও টইটম্বুর।
আবার বীরভূমের নানুরে বাসাপাড়া এলাকায় বহু গ্রাম প্লাবিত। বাসাপাড়া বাজার এলাকায় বাড়ি-ঘর, দোকান জলমগ্ন। এই পরিস্থিতিতে ওই এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। প্লাবিত এলাকায় দুর্যোগ উপেক্ষা করে পৌঁছে যান নানুুরের বিধায়ক বিধান মাজি। দুর্গতদের হাতে তুলে দেন খাবার, ত্রিপল-সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী। পাশাপাশি কংসাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে পটাশপুর ভগবানপুর প্লাবিত হতে, বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। তারপর এল গুলাব ও নিম্নচাপের অতিবৃষ্টি। হাওয়া অফিস যখন ঘোষণা করল বৃষ্টি আর হবে না, তখনই মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো জল ছাড়ছে কংসাবতী-সহ বিভিন্ন ব্যারেজ। যার ফলে নতুন করে পুজোর মুখে ফের জলমগ্ন পটাশপুর, ভগবানপুর, এগরা, কাঁথির একাংশ। ডুবেছে ঘাটালও।