প্রতিবেদন : প্রবল অর্থ সঙ্কটে ভুগছে শ্রীলঙ্কা। বিদেশি মুদ্রার অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে জ্বালানি, ওষুধ-সহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের আমদানি। এই অবস্থায় শ্রীলঙ্কার (Srilanka) এই সঙ্কট মেটাতে ছয় মাসের মধ্যে ৩০০ কোটি ডলার বিদেশি সাহায্য প্রয়োজন বলে জানালেন সে দেশের অর্থমন্ত্রী আল সাবরি। ইতিমধ্যেই শ্রীলঙ্কা মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করেছে। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবিতে দেশজুড়ে চলছে উত্তাল বিক্ষোভ। যদিও পদত্যাগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন গোতাবায়া। প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করতে রাজি না হওয়ায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করতে চলেছে বিরোধীরা। দেশের প্রধান বিরোধী দলনেতা সাজিথ প্রেমদাসা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে তাঁরা অনাস্থা প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর প্রধানমন্ত্রী ভাই দেশবাসীর স্বার্থ ও প্রত্যাশা পূরণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। সব বিরোধী দলের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁরা প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনবেন।
গত সপ্তাহে দেশের অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপক্ষেকে সরিয়ে দিয়ে মন্ত্রকের দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন আল সাবরির হাতে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তিনি পদত্যাগ করেন। কিন্তু শুক্রবার ফের অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্ব সাবরিকেই দিয়েছেন গোতাবায়া। এরপরই শনিবার আল সাবরি বলেন, দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে ছয় মাসের মধ্যে প্রায় ৩০০ কোটি ডলার প্রয়োজন। তবে এটা পাওয়া অত্যন্ত কঠিন কাজ। কিন্তু এই মুহূর্তে এটাও ঠিক বিদেশি সাহায্য ছাড়া শ্রীলঙ্কার (Srilanka) পক্ষে আর বাঁচা সম্ভব নয়। বিদেশি সাহায্য পেলে তাঁরা প্রথমে জ্বালানি, গ্যাস ও ওষুধ সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা করবেন। একই সঙ্গে সাবরি বলেন, ১৮ এপ্রিল আইএমএফের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার আধিকারিকরা বৈঠক করবেন। এখন আমরা ওই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছি। পাশাপাশি সাবরি জানিয়েছেন, জ্বালানির জন্য তাঁরা ভারতের কাছে অতিরিক্ত ৫০ কোটি ডলার চাইবেন। এই সাহায্য পেলে দেশে পাঁচ সপ্তাহের জ্বালানির চাহিদা মেটানো যাবে। পাশাপাশি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের থেকেও তাঁরা সাহায্য চাইবেন। একই সঙ্গে ব্রিটেন, আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির কাছ থেকেও তাঁরা আর্থিক সহযোগিতা চাইবেন। দেশের চলতি সংকট থেকে মুক্তি পেতে আগামী ছয় মাসে সরকারকে করের হার এবং জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি করতে হবে বলেও সাফ জানিয়েছেন সাবরি। যদিও সেটা মানুষ কতটা বহন করতে পারবে তা নিয়েও তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে ঋণ পরিশোধের উপর স্থগিতাদেশ চাওয়া হবে বলেও সাবরি জানিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী এদিন বলেন, বড় ধরনের ঋণখেলাপ ঠেকাতে তাঁরা চেষ্টা চালাচ্ছেন। ঋণখেলাপের পরিণতি কী সেটা তাঁরা ভালই বোঝেন। আর্থিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, চলতি বছরেই শ্রীলঙ্কার মোট ঋণের পরিমাণ ৭০০ কোটি ডলারে পৌঁছতে পারে।