প্রতিবেদন : আবারও যুদ্ধ। আবারও বিপদে বাংলার মানুষেরা। আবারও উদ্ধারকর্তার ভূমিকায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইজরায়েল যুদ্ধের জেরে বিপাকে পড়া বঙ্গবাসীদের রাজ্যে ফেরানোর ব্যবস্থা করলেন তিনি। শুধু তাই নয়, ইজরায়েল থেকে দেশে ফেরার পর তাঁদের দিল্লিতে থাকা-খাওয়া সহ যাবতীয় বন্দোবস্ত করেছেন। সব ঠিকঠাক আছে কি না তার নিরন্তর তদারকি করে গিয়েছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইজরায়েল থেকে দেশে ফিরেছেন ২১২ জন ভারতীয়। যার মধ্যে ৫৩ জন বঙ্গবাসী।
আরও পড়ুন-সুপ্রিম ধাক্কায় রাজ্যপাল আরও নমনীয়, ৭১ বন্দিমুক্তি
শুক্রবার সকালেই ফিরেছেন তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাঁদের দিল্লির বঙ্গভবনে বিনামূল্যে থাকা-খাওয়া-সহ যাবতীয় বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এই ৫৩ জন বঙ্গবাসীকে রাজ্যে ফেরাতে ট্রেনের ভাড়াও বহন করছে রাজ্য। একইসঙ্গে যে-কোনওরকম সমস্যা সমাধানে নবান্নে ও দিল্লিতে খোলা হল কন্ট্রোল রুম। শুক্রবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলেই এ-কথা লিখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ভারতীয়রা ইজরায়েল ছেড়ে দেশে ফিরেছেন। আমি মুখ্যসচিব এবং দিল্লির আবাসিক কমিশনারকে ইজরায়েল-ফেরত দেশবাসীদের বিনামূল্যে সমস্ত সম্ভাব্য সরকারি সহায়তা প্রদানের কথা বলেছি। ৫৩ জন বাংলার মানুষও ইজরায়েল থেকে আজ সকালে দিল্লি পৌঁছেছেন। তাঁদের বাংলায় ফিরিয়ে আনতে রেলের টিকিটের ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। দিল্লিতে বঙ্গভবনে বিনামূল্যে থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে তিনি জানান, দিল্লি এবং কলকাতায় ২৪৭ কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। দিল্লির কন্ট্রোল রুমের নম্বর : ০১১-২৩৭১-০৩৬২/০১১-২৩৭২-১৯৯১ এবং নবান্নের কন্ট্রোল রুমের নম্বর : ০৩৩-২২১৪-৩৫২৬। প্রসঙ্গত, ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়া ইজরায়েলে সমস্ত যাত্রীবাহী বিমান পরিষেবা বন্ধ। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ব্যবস্থাপনায় খুশি তাঁরা সকলেই। আতঙ্কের রেশ কাটিয়ে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইজরায়েল ফেরত পড়ুয়ারা।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
এমনই এক বাঙালি পড়ুয়ার মধ্যে রয়েছেন নদিয়ার কল্যাণীর সঞ্জীব মণ্ডল। শুক্রবার সকাল ৬টায় বিশেষ বিমানে দিল্লি বিমানবন্দরে এসে পৌঁছন সঞ্জীব। সেখান থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সহায়তায় সরকারি অতিথিশালায় এসে ওঠেন। ম্যাটারিয়াল কেমিস্ট্রির উপরে পিএইচডি করতে গত ২ অক্টোবর ইজরায়েল গিয়েছিলেন। তবে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ফিরে আসতে হল তাঁকে। সঞ্জীবের কথায়, ইজরায়েল সরকারের তরফে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের থাকার জায়গায় আলাদা শেল্টার হোম তৈরি করা আছে। যুদ্ধ পরিস্থিতি বা কোনওরকম হামলা হলে সেখানে চলে যেতে হয়। নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে সঞ্জীব বলেন, একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে, যার মাধ্যমে বিপদ সঙ্কেত পাওয়া যায়। মাঝে মধ্যে মিশাইল হানা হয়েছে।
আরও পড়ুন-পুজোর আগে ডায়মন্ড হারবারে টানা কর্মসূচি অভিষেকের
তিনি আরও জানান, পরিস্থিতি জটিল হতেই ইজরায়েলে ভারতীয় দূতাবাসের তরফে যোগাযোগ করা হয় পডুয়াদের সঙ্গে। দক্ষিণ কলকাতার মুকুন্দপুরের বাসিন্দা শ্রেয়সী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ছিলেন। যাদবপুর থেকে পিএইচডি করার পর পোস্ট ডক্টরেট করতে ইজরায়েল পাড়ি দেন তিনি। একই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়ে শুক্রবার ইজরায়েল ছেড়ে দেশে ফিরতে হয় তাঁকেও। শুক্রবার সকালে ইজরায়েল থেকে ভারতে এসে পৌঁছনো ছাত্র কুন্তল। পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, দিল্লিতে পৌঁছনোর পর পশ্চিমবঙ্গ সরকার আমাদের বিমানবন্দর থেকে বঙ্গভবনে এনেছে। আমরা এখানেই রয়েছি, আমাদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য বঙ্গভবনে দেখাশোনা করা হচ্ছে।