প্রতিবেদন : রাজ্যের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে বড়সড় পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্য সরকার। গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলির সংরক্ষণ ও পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য এবার কেন্দ্রের কাছে তহবিল চাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর। ইতিমধ্যেই একটি প্রাথমিক পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে এবং শীঘ্রই তা কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকে পাঠানো হবে।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রাচীন ও ঐতিহাসিক স্থান—যেমন, উত্তর ২৪ পরগনার চন্দ্রকেতুগড়, দক্ষিণ ২৪ পরগনার দেওলপোতা, মালদার আদিনা মসজিদ ও সুলতান আমলের হাম্মাম। এই সকল স্থানে প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্বের পাশাপাশি পর্যটন সম্ভাবনাও রয়েছে বিস্তর।
এই সমস্ত স্থানের বর্তমান অবস্থা, ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে একটি বিশদ প্রস্তাব কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হচ্ছে। প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী, এই প্রকল্পের জন্য প্রয়োজন ১০০ কোটিরও বেশি টাকা।
আরও পড়ুন-কৃষ্ণনগরে সমবায় সোসাইটি আট বছর পর পেল তৃণমূল
এর আগেও কেন্দ্রের তরফে বাংলার কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, পুরুলিয়ার বেগুনকোদরে রাসমন্দির এবং দেওলঘাটের শিবমন্দির ও পাকবিরার প্রত্নস্থানের জন্য কেন্দ্র থেকে প্রায় ৬.৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। এইবারের প্রস্তাব আরও বহু প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানকে একত্রিত করা হয়েছে, যার মধ্যে অনেকগুলিই পর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২২ সালে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল-এর একটি রিপোর্টে দেশের বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্যের অব্যবস্থা ও সংরক্ষণের ঘাটতির কথা তুলে ধরা হয়েছিল। সেই প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন ঐতিহাসিক মহল। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে একদিকে যেমন রাজ্যের ঐতিহাসিক ঐতিহ্য রক্ষা পাবে, তেমনি বাড়বে পর্যটনের সম্ভাবনাও, যা অর্থনীতির ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।