অপরাধ রুখতে রাজ্য পুলিশের ‘অপারেশন সাইবার শক্তি’

কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) লালবাজারে সাইবার ক্রাইম বিভাগ বা সেল আছে। প্রত্যেকটি জেলায় এবং পুলিশ কমিশনারেটে সাইবার ক্রাইম থানা আছে।

Must read

কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) লালবাজারে সাইবার ক্রাইম বিভাগ বা সেল আছে। প্রত্যেকটি জেলায় এবং পুলিশ কমিশনারেটে সাইবার ক্রাইম থানা আছে। তারপরেও সাইবার ক্রাইম অপরাধীদের মোডাস অপারেন্ডি বোঝা বেশ দুষ্কর হয়ে উঠছে। তাদের গতিবিধি বুঝতে প্রয়োজন দক্ষ সফটওয়্যার বিশেষজ্ঞ ও প্রয়োজন পৃথক সাইবার ক্রাইম উইং। পৃথক সাইবার ক্রাইম উইং গড়ে উঠলে জেলাগুলিতে এমন ঘটনা ঘটলে তাদের সাহায্য করা অনেকটাই সহজ হবে। দেশজুড়েই সাইবার ক্রাইম বাড়ছে। প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন ফাঁদ পেতে অপরাধ করেই চলেছে তারা। এর ফলে বেশ চাপে পড়ে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কৌতূহল নিয়ে লিঙ্কে ক্লিক করে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন বেশিরভাগ মানুষ। আবার ওটিপি পাঠিয়েও জালিয়াতি হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই এই নিয়ে এখন বেশ আতঙ্কে আছেন সাধারণ মানুষ।

আরও পড়ুন-‘অপরাজিতা বিল’এর দ্রুত অনুমোদনের দাবিতে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল

আজ, বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার জানান সাইবার প্রতারকরা পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলকেই নিজেদের ঘাঁটি বানাচ্ছে। সেখান থেকেই চলছে কোটি কোটি টাকার প্রতারণা চক্র। তিনি বলেন, ‘জামতাড়া থেকে বঙ্গে ঝাড়খণ্ড সংলগ্ন জেলাগুলিতে এরা আসছে। তারপর ছোট ছোট গ্যাং করে ফাঁদ পাতছে প্রতারণার। কাজ মিটলে, আবার নিজের জায়গায় ফিরে যাচ্ছে এরা। কখনও দিন পনেরো, কিংবা কখনও দিন সাতেকের জন্য জামতাড়া থেকে বঙ্গে এসে নির্দিষ্ট এলাকায় প্রথমে বাড়ি ভাড়া নিচ্ছে তারা। তারপর সেখান থেকে প্রতারণার কাজ চালাচ্ছে তারা।” তিনি আরও বলেন, ”শতাধিক ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড-সহ একাধিক জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। রাজ্যে সাইবার প্রতারণা রুখতে চলছে অপারেশন সাইবার শক্তি। ইতিমধ্যে ৪৬ জনকে গ্রেফতার হয়েছে। তবে এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে আরও অনেকেই জড়িত আছে বলেই খবর।’’

এদিন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) জানান, গত একমাসে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলি থেকে লাগাতার বিভিন্ন সাইবার সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগ এসেছে সাইবার ক্রাইম বিভাগের কাছে। প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে মূলত বীরভূম, আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট, চন্দননগর, পূর্ব বর্ধমান পুলিশ জেলা ও হুগলি জেলার কিছু অংশে। প্রায় ২৫০-এরও বেশি অভিযোগ পেয়ে ডিআইজি (সাইবার ক্রাইম) অমিতকুমার রাঠৌরের নেতৃত্বে বিশেষ দল গঠন করে তদন্তে নামে সাইবার ক্রাইম উইং। মূলত বড় কোম্পানি বা সংস্থার নামে ফোন করে ব্যক্তিগত গোপন তথ্য অসাধুভাবে হাতিয়ে প্রতারণার অভিযোগই বেশি ছিল। এর সঙ্গে ছিল ভুয়ো চাকরি ও ভুয়ো বিনিয়োগের ফাঁদ পেতে প্রতারণা, সেক্সটরশনের মতো অভিযোগও।

আরও পড়ুন-শহরের অপরাধপ্রবণ এলাকা বা জ়োন চিহ্নিত করে সিসিটিভি লাগানোর নির্দেশ নগরপালের

প্রসঙ্গত, ‘সাইবার শক্তি’ নামে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছিল। এই মর্মে ১০টি টিম গঠন করা হয়। অবশেষে সাফল্য এল। তবে এখানেই অভিযান শেষ নয়, এদিন তদন্ত চলাকালীন আরও গ্রেফতারির ইঙ্গিত দিলেন এডিজি। গত ১৫ দিনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রচুর সংখ্যক সিমকার্ড, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও ফ্রিজ করা হয়েছে। অ্যাকাউন্টগুলি থেকে পাওয়া টাকা প্রতারিতদের ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।

Latest article