তাপপ্রবাহকে (Heat Wave) রাজ্যভিত্তিক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করল নবান্ন। ফলে এখন থেকে হিটওয়েভের কারণে রাজ্যে কারও মৃত্যু হলে মৃতের পরিবার দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন। গত ১৯ অগাস্ট মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের নেতৃত্বাধীন স্টেট এগজিকিউটিভ কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা ও সিভিল ডিফেন্স দফতর।
কেন্দ্রীয় স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স গাইডলাইন অনুযায়ী বন্যা, সাইক্লোন, খরা, ভূমিকম্প, সুনামি ইত্যাদি ঘটনাকে সাধারণত প্রাকৃতিক বিপর্যয় ধরা হয়। তবে ওই গাইডলাইনেই রাজ্যভিত্তিক প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘোষণা করার ক্ষমতা দেওয়া রয়েছে রাজ্য সরকারকে। সেই বলেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার হিটওয়েভ, নদীভাঙন, ভারী বৃষ্টি, বন্য পশুর আক্রমণ, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু, জঙ্গলে আগুন-সহ মোট ১৪টি ঘটনাকে রাজ্যভিত্তিক প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন-উত্তম-স্মরণ বছরভর, জন্মশতবর্ষে শ্রদ্ধা
এতদিন বজ্রাঘাত, দুর্ঘটনাজনিত অগ্নিকাণ্ড, নৌকাডুবি, গাছ ভেঙে বা দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দিত রাজ্য। কিন্তু হিটওয়েভ বা নদী ভাঙনের ক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট নীতি ছিল না। মাঝে মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলেও তা নিয়মের আওতায় ছিল না। এবার সরকারি সিদ্ধান্তে এই ঘটনাগুলিও অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফান্ড (এসডিআরএফ) থেকে। বার্ষিক বরাদ্দের ১০ শতাংশ অর্থ এই খাতে ব্যবহার করা যাবে।
তবে রাজ্যের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আবশ্যিক। বিশেষজ্ঞদের মতে, হিটওয়েভে (Heat Wave) মৃত্যু নির্ণয়ের ক্ষেত্রে পরিবেশগত প্রমাণের পাশাপাশি শরীরের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন—যেমন মাংসপেশি ফেটে যাওয়া এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গ লাল হয়ে যাওয়া—গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে বিবেচিত হয়। এসব মিললেই মৃত্যুর কারণ হিসেবে হিট স্ট্রোক বা সান স্ট্রোক ধরা হয়। রাজ্যের এই সিদ্ধান্তে গ্রীষ্মকালে তাপপ্রবাহের মতো প্রাণঘাতী দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ানো সহজ হবে বলে প্রশাসনিক মহল মনে করছে।