সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী পাসপোর্ট, আধার কার্ড, ভোটার কার্ডে শুধু মায়ের নাম দিলেই চলবে। অর্থাৎ আইন একাকী মায়েদের স্বীকৃতি দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তবুও আমাদের সমাজে একা মায়ের লড়াইটা সহজ নয়। একজন মাকে নিয়ে আমরা যতটা গর্ববোধ করি সন্তানের জীবনে তার ভূমিকাকে যতটা স্বীকৃতি দিই একজন সিঙ্গল মাদারের ক্ষেত্রে চিত্রটা কিন্তু ঠিক তার উল্টো। তাঁর সন্তানপালনের লড়াইকে স্বীকৃতি দিতে আজও সমাজের প্রবল অনীহা। ফলে সন্তানকে সুন্দরভাবে বড় করে তুলতে পদে পদে বাধা নিয়ে চলেন তিনি। আর্থিক এবং সামাজিক নিরাপত্তা ছাড়াই সন্তানদের জন্য জানপ্রাণ লড়িয়ে দেন। তাই পৃথিবীর কোনও মা-ই শক্তিহীন নন। সমাজের বিছিয়ে দেওয়া কাঁটাগুলোকে পেরিয়ে গিয়ে হয়ে ওঠেন একজন ‘সুপার মম’।
আরও পড়ুন-আপনি কাপুরুষ! পার্লামেন্টে তোপের মুখে পাক প্রধানমন্ত্রী
কুসুমিতার কথা
কলকাতার একটি নামকরা স্কুলের শিক্ষিকা কুসুমিতা। প্রেম করেই বিয়ে করেছিল কল্যাণের সঙ্গে। কল্যাণ একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কর্মরত ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে একদিন অফিসেই তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। অফিস থেকে হাসপাতাল আর হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ ফিরেছিল বাড়িতে। কুসুমিতার মেয়ে পমপমের বয়স তখন মাত্র দেড় বছর। হঠাৎ করে স্বামীহারা হয়ে মানসিকভাবে প্রচণ্ড ভেঙে পড়েছিল কুসুমিতা। তার তখন মনে হয়েছিল একা হাতে কীভাবে মেয়েকে মানুষ করবে। কিন্তু সেই দিনের ভাবনার সঙ্গে আজকের ভাবনার কোনও মিল খুঁজে পায় না সে। কারণ সে একজন সফল মা, একা হাতে সমস্ত বাধাবিঘ্ন উপেক্ষা করে মেয়েকে মানুষ করে তুলছে। স্বামীর কথা আজও প্রতিক্ষণে মনে করে সে, কিন্তু মেয়েকে বাবার অভাব বুঝতে দেয়নি কোনও সময়ই। প্রথম দিন থেকে ওর বাবা-মা মানসিক ভাবে সমর্থন করেছিল ওকে এবং আজও করে চলেছে। কিন্তু মেয়ের ব্যাপারে সমস্ত সিদ্ধান্ত আজও একা হাতেই সামলায় কুসুমিতা। প্রচুর প্রলোভন হাতছানি দিয়েছিল কুসুমিতাকে, কিন্তু মেয়ের জন্য সমস্ত কিছু উপেক্ষা করেছে ও।
আত্রেয়ীর কথা
আত্রেয়ী মুখার্জি, রেল পুলিশে কর্মরত। ছেলে যখন ছোট তখনই ওর সঙ্গে ওর বরের ডিভোর্স হয়ে যায়। ওর বর ছেলের সামনেও ওর গায়ে হাত তুলতে পিছপা হত না। বাধ্য হয়েই ছেলেকে সুস্থ পরিবেশে মানুষ করার জন্য ওই সংসার ছেড়ে বেরিয়ে আসে আত্রেয়ী। ছেলেকে মানুষ করতে গিয়ে আর কোনও দিকে তাকায়নি ও, আমাদের সমাজে একটা ডিভোর্সি মেয়েকে নিয়ে বহু ধরনের কথা চর্চিত হয়। সেই কথাগুলোর হাত থেকে ছোট্ট ছেলেকে বাঁচানোর জন্য সমস্ত কষ্ট বুকে চেপে দেরাদুনের বোর্ডিং স্কুলে ছেলেকে ভর্তি করে দেয় ও। এরপর শনি-রবি কাজ করে ছুটি জমিয়ে ছেলের কাছে মাসে দু’মাসে দেখা করতে যেত আত্রেয়ী। এছাড়াও বাচ্চার কথা চিন্তা করে নিজের সব শৌখিনতাও বাদ দিয়ে দিয়েছিল ও। কারণ ছেলের ভবিষ্যতের কথা ওকেই চিন্তা করতে হয়েছে। সন্তানের উচ্চশিক্ষা থেকে শুরু করে সবকিছুর ভাবনাটা একার ওপর এসে যখন বর্তায় তখন আস্তে আস্তে জীবনটা ক্লান্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু এর মাঝেও সন্তানের জন্য সমস্ত স্বার্থ ত্যাগ করে কিছু করার যে অনুভূতি, যে আনন্দ সেটাকে আত্রেয়ীর ঈশ্বরের দান বলেই মনে হয়।
ছোট থেকেই ছেলেকে সামাজিক হতে শিখিয়েছে আত্রেয়ী। সমাজের জন্য কিছু করা, যেটুকু দরকার সেটুকুই নিজের জন্য কেনা, অতিরিক্ত চাহিদা না থাকা, যতটুকু পারবে ততটুকু অপরকে সাহায্য করা এসব কিছুই আত্রেয়ীর ছেলে শিখেছে তার মায়ের কাছেই। আত্রেয়ীর কথায়, এটাই তার সবথেকে বড় জয়। একা হাতে ছেলেকে সঠিকভাবে সঠিক পথে চালনা করতে পেরেছে সে।
সঙ্গীতার কেশরীর কথা
মা হওয়ার স্বপ্ন ছিল সঙ্গীতার। কিন্তু বারবার চেষ্টা করে তাঁর সেই স্বপ্ন সফল হচ্ছিল না। স্বামী-স্ত্রী উভয়েই স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং আইভিএফ পদ্ধতিতে মা হওয়ার স্বপ্ন বুনেছিলেন। কিন্তু কোভিডের সময় সঙ্গীতার স্বামী মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁর সযত্নে রেখে যাওয়া শুক্রাণুর সাহায্যে আইভিএফ পদ্ধতিতে মা হন সঙ্গীতা। সুস্থ সবল এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি। স্বামীর মৃত্যুর পরেও মা হওয়া নিয়ে প্রচুর কথা শুনতে হয়েছে সঙ্গীতাকে। তাঁর পাশে শ্বশুরবাড়ি এবং বাপের বাড়ির কেউই দাঁড়ায়নি। তবুও তিনি সকল বাধা উপেক্ষা করে মা হয়েছেন। আগামী দিনে সন্তানকে মানুষ করতে আরও কঠিন লড়াইয়ের সম্মুখীন হবেন তিনি, কিন্তু তিনি জানেন মা হওয়ার জন্য সমস্ত বাধাকেই অতিক্রম করতে সক্ষম হবেন তিনি।
আরও পড়ুন-খাদ্যশস্যের দর নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রকে আর্জি জানাল রেশন ডিলার সংগঠন
আমাদের সমাজও একাকী মা
একজন মেয়ে যে এককভাবে একজন সন্তানের দায়িত্ব সামলাতে পারে এটা এখনও অবধি আমাদের সমাজ মেনে নিতে নারাজ। তারা ভাবতে পারে না ঘরে-বাইরে দু’দিকেই একটা মেয়ে সমান পারদর্শী হতে পারে। কিন্তু আমাদের সমাজে একটা সন্তান জন্মানোর পর বাবা উপস্থিত থাকলেও সেই সন্তানের বেশিরভাগ দায়িত্বভার কিন্তু একটা মায়ের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। সন্তানের দেখাশোনা, সন্তানকে লালন-পালনের বেশিটা মায়েরাই করে থাকে। তবুও যখন একটা মা একাকী হয়ে যায় এবং একা একাই একটা সন্তানকে মানুষ করে তখন হামেশাই সমাজের আশপাশ থেকে নানা ধরনের কু-বাক্যবাণ ছুটে আসে। সমাজ বারবার সেই একাকী মাকে বোঝাতে চায় একজন পুরুষ ছাড়া বাচ্চাকে বড় করে তোলা যায় না। আসলে সমাজ আজও মনে করে নারীরা সর্বক্ষেত্রে পুরুষদের ওপর নির্ভরশীল। যখন একাকী মা তার বাচ্চাকে একাই মানুষ করে অর্থাৎ দ্বিতীয়বার আর বিয়ে না করে তাহলেও সমাজ তাদের ছেড়ে কথা বলে না। এখন অনেক মেয়ে বিয়ে না করেই একাকী আইভিএফ পদ্ধতি অবলম্বন করে মা হচ্ছে। এই আইবুড়ো মায়েদের আইন স্বীকৃতি দিলেও সমাজ এখনও মেনে নিতে পারে না। আসলে সমাজ ভাবে একজন মায়ের জীবনে একজন পুরুষসঙ্গী তথা স্বামী অবশ্যই দরকার। আর সমাজের বিরুদ্ধে গিয়ে একা বাচ্চাকে মানুষের মতো মানুষ করে তোলার এটাই সবথেকে বড় লড়াই একাকী মায়েদের।
এছাড়াও একাকী মায়েদের ব্যক্তিগত জীবন অনেকের কাছেই মুখরোচক বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে। আর ডিভোর্সি মায়েদের ক্ষেত্রে তো আরও এককাঠি ওপর দিয়ে চলে সমাজ। কেন ছাড়াছাড়ি হল, কী জন্য হল, সেটাই থাকে আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তু। অনেক সময় একাকী মায়েদের বাড়ি ভাড়া দিতেও অনেকে অস্বীকার করেন, আবার কিছু কিছু পুরুষ মানুষ একাকী মেয়েদের দেখলেই কুরুচিকর মন্তব্যে তাদের বিদ্ধ করে।
মা যখন একা
কারও জীবনে হঠাৎ করেই একক অভিভাবকত্ব নেমে আসে আবার কেউ বাধ্য হয়েই একক অভিভাবকত্ব পালন করে। আবার আজকের দিনে কেউ কেউ স্ব-ইচ্ছাতেই আইভিএফ পদ্ধতির প্রয়োগ করে অবিবাহিত অবস্থাতেই মা হওয়ার মতো দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন। আর এইসব ক্ষেত্রেই বহু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন তাঁরা। আসলে মাতৃত্ব জিনিসটা কারও জন্যই সহজ নয়। আর দুর্ভাগ্যবশত একক মায়েদের জন্য এটি আরও কঠিন— এটাই মনে হতে পারে। তবে একক মায়েদের সন্তান মানুষ করার শক্তি সত্যিই প্রশংসনীয়। একক মায়েদের মধ্যে রয়েছে লড়াকু মনোভাব কারণ যে সমস্ত মা চাকরিজীবী হন তাঁদের কর্মজীবন ও অবসর জীবনের ভারসাম্য সঠিকভাবে বজায় রাখা খুবই কঠিন হতে পারে কারণ সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব যেমন তাঁকে নিতে হয় ঠিক তেমনি কাজ থেকে ফিরে এসে সেই সন্তানের অতিরিক্ত যত্নও নিতে হয় আর সেই কারণে তাঁদের নিজের কথা ভাবার সময় থাকে না। একক মায়েরা সর্বদা মানসিক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়েও যান। অনেক সময় তাঁরা তাঁদের একাকিত্ব এবং হতাশার অনুভূতি কারও সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারেন না। আবার সন্তানের জীবনের অনেক বড় বড় সিদ্ধান্ত তাঁদেরকে একাই নিতে হয়। সন্তানের জীবন নিয়ে আলোচনা করার অথবা পরামর্শ নেওয়ার কেউ থাকে না তাঁদের সঙ্গে। আর এটা একাকী মায়েদের ক্ষেত্রে অনেক সময় প্রচুর চাপের এবং ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। একাকী মায়েদের সব থেকে বড় আতঙ্ক হচ্ছে তাঁর সন্তানকে সমাজ খারাপ বুদ্ধি না দিয়ে ফেলে! আর সেই কারণেই অনেক একাকী মা তাঁদের থেকে তাঁর বাচ্চাকে দূরে কোনও বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি করে দেন।
একাকী মা যখন বাচ্চাদের বড় করে তুলছেন তখন তাঁদের অনেকগুলো বিষয় মাথায় রাখতে হবে। প্রথমেই যে বিষয়টা মাথায় রাখা দরকার সেটি হল আর্থিক বিষয়গুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। অর্থাৎ আয় আর ব্যয়ের ভারসাম্য বজায় রাখা। সন্তানদের সঙ্গেও বন্ধুর মতো ব্যবহার করা দরকার, পরিবারে কী কী পরিবর্তন এল, কেন এল তার সবটাই শান্তভাবে সন্তানের পাশে বসে তাকে জানানো দরকার। এছাড়াও সন্তানদের ইচ্ছে-অনিচ্ছে সব ধরনের অনুভূতি সম্পর্কেও কথা বলতে দেওয়া দরকার। এছাড়াও সব সময় সবকিছু একা সামলাব এই মনোভাব না রেখে পরিবার এবং বন্ধু যারা যথার্থই একজন একাকী মাকে সম্মান প্রদান করে তাদের কাছে সহায়তা নিলে অনেকটাই নিজেকে ভারমুক্ত মনে হবে। এছাড়াও সন্তানদের কাছে নিজেদের অবস্থান সবসময় পরিষ্কার থাকলে সন্তান ভাল-মন্দের সঠিক বিচার নিজেই করতে পারবে। খেয়াল রাখতে হবে সন্তানরা যেন ছোট থেকেই তাদের মায়েদের সংগ্রাম, একাকিত্ব এবং আত্মত্যাগ বুঝতে পারে। আর সন্তানরা যদি এগুলো বোঝে তাহলে সেও আস্তে আস্তে তার মায়ের সহমর্মী হয়ে উঠবে।
একাকী মা অর্থাৎ সিঙ্গল মাদাররা প্রতিনিয়ত সমাজের সঙ্গে, নিজেদের সঙ্গে সংগ্রাম করে তাদের সন্তানকে বড় করে তুলছে। সমস্ত সিঙ্গল মায়েরই আর্থিক নিরাপত্তার জন্য অনেকটাই কায়িক শ্রম যেমন করতে হয় ঠিক তেমনি মানসিক শ্রমও করতে হয় আর এর সঙ্গে থাকে ত্যাগ। আর এই একাকী মায়েদের জন্য রইল অনেক শ্রদ্ধা।
আরও পড়ুন-নাগরিকদের উপর পাক হামলা, সম্প্রীতি নষ্টে টার্গেট ধর্মস্থান, সাহায্য বন্ধ করুক আইএমএফ, বলল ভারত
কথায় আছে যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। আমাদের সমাজে এমন অনেক সেলিব্রেটি মা আছেন যাঁরা স্বেচ্ছায় সমাজের সমস্ত বাধাবিঘ্ন পেছনে ফেলে সফল ভাবে সংসারের সাথে সাথে একা হাতে তাঁদের সন্তানদেরকেও মানুষ করেছেন। যাঁদের এককথায় সুপার মমের তকমা সহজেই দেওয়া যায়।
আশির দশকে বিয়ের স্বীকৃতি ছাড়াই ভিভিয়ান রিচার্ডের সন্তান গর্ভে ধারণ করেছিলেন অভিনেত্রী নীনা গুপ্তা। জন্ম হয়েছিল মাসাবার। তাঁর মেয়ে মাসাবা গুপ্তাকে একাই বড় করেছেন তিনি। অনেকে তাঁর কন্যাকে নিজের নাম দেওয়ার জন্য বিয়ে করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাবগুলোকে নাকচ করেন নীনা। সমাজকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তাঁর কন্যাকে তিনি মানুষের মতো মানুষ করে তুলতে পেরেছেন। তাঁর কন্যা মাসাবা আজ একজন সফল ফ্যাশন ডিজাইনার হতে পেরেছেন।
বর্তমানে বিয়ে না করেই আইভিএফ পদ্ধতিতে অনেকেই একাকী মা হচ্ছেন। এঁদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন ইলিনা বণিক। ইলিনা বণিক একজন বড় মাপের চিত্রকর। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন একক মা হওয়ার। আর সেই কারণে আইভিএফ পদ্ধতিতে ২০১২ সালে মা হয়েছেন। সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়া সত্ত্বেও নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাঁকে। কারণ আইন স্বীকৃতি দিলেও এখনও সমাজ এক্ষেত্রে নানারকম বাধার সৃষ্টি করে। তাঁর স্বামীর পরিচয় নিয়ে একটা তো ফিসফিসানি ছিলই কিন্তু সেইসব বাধা কাটিয়ে ওঠার জন্য চিকিৎসকেরা তাঁর পাশে থেকেছেন। বাচ্চাকে স্কুলে ভর্তি করার বাধাটুকুও ভেঙেছেন তিনি। আসলে একটা সমাজ কিছুতেই মানতে পারে না যে পুরুষ ছাড়া একজন মেয়ে একাকী মা হতে পারেন।
সঞ্জয় কাপুরের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর কারিশ্মা কাপুর তাঁর দুই সন্তান সামাইরা এবং কিয়ানকে বড় করেছেন একাই। দুই সন্তানের পুরো দায়িত্ব তাঁর। এবং তিনি সেটা যথার্থ ভাবেই পালন করে থাকেন।
ব্যবসায়ী ফারহান ইব্রাহিমের সাথে বিচ্ছেদের পর পূজা বেদী তাঁর দুই সন্তান আলায়া এবং ওমরকে একাই লালনপালন করেছেন। তাঁর কন্যা আলায়া বর্তমানে বলিউডের অভিনয় জগতে পা রেখেছেন।
অভিনেত্রী রবিনা ট্যান্ডন ব্যবসায়ী অনিল খাটনিকে বিয়ে করার আগেই দুটি সন্তান দত্তক নিয়েছিলেন। বিয়ের পর তিনি আরও দুই সন্তানের জন্ম দেন। ২০০৬ সালে তাঁদের ছাড়াছাড়ির পর চার সন্তানকে একা হাতেই মানুষ করছেন তিনি।
দু-দু’বার বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন শ্বেতা তিওয়ারি। আর দুটো বিয়ে থেকেই সন্তানের মা হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দুটো বিয়েই তাঁর সুখের ছিল না আর তাই একা হাতেই অত্যন্ত সংগ্রাম করে তাঁর দুই ছেলে-মেয়ে পলক আর রেয়াংশকে বড় করে তুলেছেন।
এছাড়াও বহু সেলিব্রিটি আছেন যাঁরা বিবাহবিচ্ছেদের পর তাঁদের সন্তানকে একা হাতেই মানুষ করেছেন, অথবা আইভিএফ পদ্ধতিতে কুমারী অবস্থাতেই মা হয়েছেন এবং তাঁদের সন্তানদের একাকী মানুষ করছেন। এই সমস্ত একাকী মায়েদের কুর্নিশ।