হিংসা-হুমকি এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে উপেক্ষা করে ত্রিপুরায় (Tripura) প্রচারে এসেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhisekh Banerjee)। সোমবার প্রবল বৃষ্টির জেরে পূর্বনির্ধারিত প্রচারে যেতে না পারলেও আগরতলা থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন, ত্রিপুরা তৃণমূলের প্রদেশ সভাপতি সুবল ভৌমিক (Subal Bhowmik), সাংসদ সুস্মিতা দেব (Sushmita Dev), পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh), ও ত্রিপুরার তৃণমূল পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। এদিনের সাংবাদিক বৈঠক থেকে তৃণমূলকে রুখতে বিজেপির একের পর এক হামলার বিরুদ্ধে সরব হয়ে ওঠেন নেতৃত্বরা। পাশাপাশি বাংলার মডেলে ত্রিপুরায় উন্নয়নের জোয়ার আনতে তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থনের জন্য ত্রিপুরাবাসীকে আবেদন জানান তাঁরা (Subal Bhowmik- Kunal Ghosh)। দেখে নেওয়া যাক সাংবাদিক বৈঠক থেকে কী বললেন নেতৃত্বরা…
সুবল ভৌমিক (তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্য সভাপতি ত্রিপুরা): নির্বাচনী প্রচারের শেষ লগ্ন চলছে।
আমরা বিশ্বাস করি যেভাবে রাজ্যের মানুষ তৃণমূলের ডাকে সাড়া দিয়েছেন।
তৃণমূলের প্রতি তাঁদের ভরসা ও ভালোবাসায় আমরা অভিভুত। ৪ টে আসনে তৃণমূল জয় পাবে।
বিজেপি সন্ত্রাস চালাচ্ছে যাতে যাতে রাজ্যবাসীর দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়া যায়।
যে সরকারের নিজের কোনও একটি প্রকল্প নেই সে কীভাবে ভোট চাইছে মানুষের কাছে।
ত্রিপুরা নির্বাচনে বাংলা আমাদের মডেল, সেখানে ৭০ টির বেশি প্রকল্প রয়েছে তৃণমূল সরকারের।
রাজ্যবাসী চাইছে বাংলার মতো সরকার হোক ত্রিপুরায়। যেখানে শান্তি রয়েছে, সম্প্রীতি রয়েছে এবং উন্নয়ন রয়েছে।
ত্রিপুরায় বেকারত্বের সংখ্যা ১৭ শতাংশ। গোটা দেশের মধ্যে রাজ্যভিত্তিক জনসঙ্খ্যার নিরিখে বেকারত্বে ত্রিপুরা প্রথম।
গ্রামীন অর্থনীতি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। ডবল ইঞ্চিনের সুফল আমাদের দেখা হয়ে গিয়েছে।
এখানে জুমলাবাজীর সরকার করছে। এর থেকে রাজ্যবাসীকে মুক্তি দিতে পারে একমাত্র তৃণমূল। মানুষ সেই মুক্তি চাইছে। ভোট নষ্ট না করে আপনাদের মুল্যবান ভোট তৃণমূলের পক্ষে দিন।
আরও পড়ুন: ত্রিপুরা উপনির্বাচন: বিজেপি বিরোধী সমস্ত ভোট তৃণমূল কংগ্রেসে দেওয়ার ডাক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
কুণাল ঘোষ (সাধারণ সম্পাদক পশ্চিমবঙ্গ): বিজেপির অপশাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জারি রেখে চার কেন্দ্রে উপনির্বাচনে লড়ছে তৃণমূল।
পুরসভা নির্বাচনে মাত্র ২ মাসে যে লড়াই তৃণমূল লড়েছে এবং ২০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে তাতে আমরা ত্রিপুরাবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ।
এই বিজেপিকে ভোট নয়।
বাম-কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার অর্থ ভোট নষ্ট। বিকল্প শক্তি তৃণমূল।
বাংলায় দেখুন বিজেপির এত কুৎসা, প্রতিহিংসার রাজনীতি তারপরও ৩ বার তৃণমূলকে ভোট দিয়ে সরকার গড়েছে মানুষ।
বাংলায় যে সব প্রকল্প রয়েছে সেগুলো দেখুন এবং তা ত্রিপুরা রাজ্যে নিয়ে আসার জন্য তৃণমূলকে ভোট দিন।
ত্রিপুরাতে কী পরিমাণ সন্ত্রাস হয়েছে তা আপনারা দেখেছেন। লাগাতার সমর্থক কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে বিজেপি। কারণ তাঁরা তৃণমূলকে ভয় পাচ্ছে। তৃণমূলকেই প্রধান শত্রু হিসেবে ধরেছে। সুরমাতে আমাদের কর্মীদের বিভৎসভাবে মারা হয়েছে।
অভিষেক ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিতে যাচ্ছিলেন সেই সময় থেকে হামলাটা শুরু হয়।
আমাদের কর্মীদের আটকে রাখা হয় থানায়। এরপর অভিষেক ত্রিপুরায় এসে যেভাবে তাদের জামিনের ব্যবস্থা করে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে গেছেন সেই স্পিরিটটাকে ভয় পাচ্ছে বিজেপি।
এতদিন এখানে সরকার বদল হয়নি। অভিষেক পা রাখার পর সরকার বদলে গেছে ত্রিপুরায়।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়(ত্রিপুরা তৃণমূল পর্যবেক্ষক): ত্রিপুরার সার্বিক অবস্থা মানুষ জানেন। এ রাজ্যে অনেক কিছু করার ছিল।
বাম অপশাসনে পর বিজেপির শোষণ। যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তার একটাও মানা হয়নি।
পর্যটন, শিল্প নিয়ে অনেক কিছু করার ছিল। স্মার্ট সিটি জলের নীচে।
নতুন ত্রিপুরা গড়তে হবে। এই উপনির্বাচনে সরকার পরিবর্তন হবে না। তবে বিজেপিকে ধাক্কা দেওয়া যাবে।
আগামিদিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে পরিবর্তন আসবে।
বিজেপি বিরোধী মূল শক্তি তৃণমূল। তাই তৃণমূলকে টার্গেট করা হচ্ছে।