প্রতিবেদন : জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে গত দু’বছরে রাজ্যের যত রেশন কার্ড বাদ দেওয়া হয়েছে, তার থেকে প্রায় ৬ লক্ষ বেশি নতুন কার্ড রাজ্য খাদ্য দফতর নতুন গ্রাহকদের জন্য ইস্যু করেছে। জাতীয় প্রকল্পের গ্রাহকদের কার্ড বাতিল এবং নতুন গ্রাহকদের কার্ড প্রদানের বিষয়ে বিশদ পরিসংখ্যান সম্প্রতি দিল্লিকে পাঠিয়েছে রাজ্য। তার থেকেই এই তথ্য জানা গিয়েছে। বাংলার রেশন গ্রাহকদের জাতীয় প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিতে রাজ্যের ক্ষমতাসীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যে তৎপর, এটা তারই প্রমাণ। পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে কত মানুষ জাতীয় প্রকল্পে থাকবে, তার কোটা কেন্দ্র ঠিক করে দিয়েছে।
আরও পড়ুন-টোটোপাড়ায় অরেঞ্জ ট্যুরিজমের উদ্যোগ জেলা প্রশাসনের
প্রকল্পটি চালু হয় ২০১৩ সালে। তারপর থেকে এই কোটা পাল্টায়নি। জাতীয় প্রকল্পে রাজ্যের কোটা নির্দিষ্ট আছে প্রায় ৬ কোটি ২ লক্ষ। রাজ্যের বর্তমান পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলায় এখন প্রায় ৬ কোটি জাতীয় প্রকল্পের কার্ড আছে। অর্থাৎ আরও ২ লক্ষ গ্রাহককে জাতীয় প্রকল্পের আওতায় আনার সুযোগ আছে।
অন্ত্যোদয় ও স্পেশ্যাল প্রায়োরিটি হাউসহোল্ড এই দুই শ্রেণির কার্ড দেওয়া হয় জাতীয় প্রকল্পে। তুলনামূলকভাবে দরিদ্রতর নাগরিকের অন্ত্যোদয় কার্ড পাওয়ার কথা। এতে কিছুটা বেশি খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়। রাজ্যের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে এই দুই শ্রেণিতে মোট ১৪ লক্ষের মতো কার্ড বাতিল হয়েছে। সেখানে দুটি অর্থবর্ষ মিলিয়ে নতুন কার্ড ইস্যু হয়েছে প্রায় ২০ লক্ষ। অর্থাৎ ৬ লক্ষ কার্ড অতিরিক্ত ইস্যু করা হয়েছে। রাজ্যের খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, মূলত গ্রাহকের মৃত্যুতেই কার্ড বাতিল হয়। এক্ষেত্রেও দুটি অর্থবর্ষে দুই ধরনের মোট ১৪ লক্ষ কার্ড সেই কারণেই বাতিল হয়েছে। পরিবর্তে নতুন কার্ড পেয়েছেন নয়া ২০ লক্ষ গ্রাহক।
আরও পড়ুন-ধসে ক্ষতিগ্রস্ত লাইন, ৬ দিন বন্ধ থাকবে টয়ট্রেন পরিষেবা
এই প্রসঙ্গে রেশন ডিলারদের সর্বভারতীয় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু জানিয়েছেন, কার্ডের শূন্যস্থান দ্রুত পূরণ করার পদক্ষেপটি খুবই প্রশংসনীয়। কিন্তু অনেক গ্রাহক নতুন কার্ড হাতে পাননি। এতে কিছু সমস্যা হচ্ছে। অনলাইনে নতুন কার্ড দেওয়া হলেও গ্রাহকরা বুঝতে পারছেন না। প্রসঙ্গত, যেসব গ্রাহকের জন্য জাতীয় প্রকল্পের নতুন কার্ড দেওয়া হচ্ছে তাঁদের কাছে রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের কার্ড ছিল। পারিবারিক আর্থিক অবস্থা খতিয়ে দেখে জাতীয় প্রকল্পের নতুন গ্রাহক বাছাই করার কথাও বলেছে ডিলার সংগঠন। যদিও রাজ্যের খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের দাবি, অগ্রাধিকার যাচাই করেই নতুন কার্ড দেওয়া হচ্ছে।