মণীশ কীর্তনিয়া: সেতুবন্ধনের বাজেট। উন্নয়নের বাজেট (State Budget 2025-26)। মানুষকে সুরক্ষিত রাখার বাজেট। সর্বোপরি বাংলায় কথা দিয়ে কথা রাখার বাজেট। এভাবেই রাজ্য বাজেটকে ব্যাখ্যা করে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বিধানসভায় অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য যে বাজেট পেশ করেছেন তাকে মানুষের কল্যাণে তৈরি করা জনমুখী বাজেট হিসেবেই ব্যাখ্যা করলেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু কথা রাখে না। আমাদের সরকার কথা দিলে কথা রাখে। তাই এককথায় এই বাজেটকে (State Budget 2025-26) বাংলার কথা রাখার বাজেট হিসেবেও বলা যেতে পারে। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের জন্য ৩ লক্ষ ৮৯ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা নিট বাজেট বরাদ্দ প্রস্তাব৷ এর মধ্যে ৪৪ হাজার কোটি টাকা গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতে, বিদ্যালয় শিক্ষায় ৪১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ, স্বাস্থ্যে বরাদ্দ ২১ হাজার ৩৫৫ কোটি টাকা, পথশ্রী প্রকল্পে ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ, বাংলার বাড়ি আরও ৯৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ৷ ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের জন্য এই বাজেটে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ১৮ শতাংশ ডিএ বরাদ্দ হল সরকারি কর্মীদের জন্য। আগামী ১ এপ্রিল থেকে বর্ধিত ডিএ কার্যকর হবে। এছাড়া কৃষি, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং সামাজিক সুরক্ষায় জোর দিয়ে বাজেটে আর্থিক বরাদ্দ ধার্য করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বঞ্চনা সত্ত্বেও যেভাবে ৯৪টি সামাজিক প্রকল্পকে সামনে রেখে বাংলার মানুষের কল্যাণের জন্য বাজেটে আর্থিক বরাদ্দ করা হয়েছে তা এককথায় অভূতপূর্ব বলেই অভিমত রাজনৈতিক মহলের। বাজেট পেশের পর বিধানসভার প্রেস কর্নারে অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্রকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই বাজেটে কোথায় কেন কতটা বরাদ্দ রাখা হয়েছে তার পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা দেন তিনি। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়াও বরাদ্দ রয়েছে গঙ্গাসাগর সেতুর জন্যও। সব থেকে বেশি বরাদ্দ হয়েছে পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন দফতরের জন্য। প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা। কারণ বাংলার গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করাই এই বরাদ্দের অন্যতম উদ্দেশ্য। নিঃশব্দে বাংলাকে উন্নয়নের জোয়ারে ভরিয়ে দেবে এই আর্থিক বরাদ্দ। এককথায় এই বাজেট জনমুখী। চার শতাংশ ডিএ বাড়ায় বিধানসভার অন্দরেই আপ্লুত সরকারি কর্মচারীরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে ধন্যবাদ জানালেন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ স্লোগান তুললেন।
আরও পড়ুন- স্বপ্নপূরণের পথে গঙ্গাসাগর সেতু ও ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান

