শুক্রবারই দেশে ফিরেছিলেন। আর তখন থেকেই মেয়ের ঘরে ফেরার জন্য অধীর উৎকণ্ঠায় অপেক্ষা করছিল অন্তঃসত্ত্বা সোনালি খাতুনের (Sunali Khatun) পরিবার। শনিবার বেলায় নিজের নাবালক ছেলেকে নিয়ে পাইকরের বাড়িতে পৌঁছলেন সোনালি। শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে তাঁর বাড়িতে পৌঁছানোর সব ব্যবস্থা যেমন করা হয়, তেমনই এরপর অন্তঃসত্ত্বা সোনালির চিকিৎসার জন্য তাঁকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজেও নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, জানান তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলাম।
শনিবার সকালে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে ছাড়া পান সোনালি খাতুন। শুক্রবার রাতে নাবালক ছেলেকে নিয়ে সেখানেই ছিলেন তিনি। সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন তাঁর বাবা ভুদু শেখও। হাসপাতালে বসে দেশে ফেরানোর জন্য সোনালি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানান। এরপরই তাঁকে ও তাঁর ছেলেকে বীরভূমের মুরারইয়ে নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে নিয়ে রওনা হন তৃণমূল নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন-বালুরঘাট আদালতে ৫ বছরে ১৫-র বেশি দোষীর যাবজ্জীবন, বিরোধীদের অভিযোগ ধোপে টিকল না
মুরারইয়ের পাইকর গ্রামে সোনালিকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য অপেক্ষা করছিল কার্যত গোটা গ্রাম। পরিবারের মানুষের উষ্ণ অভ্যর্থনায় চোখে জল সোনালির। আনন্দাশ্রু দেখা যায় পরিবারের অন্যান্যদেরও। তবে একদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অন্যদিকে দায়বদ্ধতা থেকে সোনালির (Sunali Khatun) চিকিৎসার সব দায়িত্ব নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। সাংসদ সামিরুল ইসলাম জানান, সোনালিকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে নিয়ে যা সিদ্ধান্ত নেবেন তেমন নির্দেশ মেনে চলা হবে সোনালির স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখে। সেই মতো গ্রামে সামান্য অপেক্ষার পর সেই একই অ্য়াম্বুল্যান্সে সোনালিকে রামপুরহাট হাসপাতালে এদিন নিয়ে যাওয়া হয়।
মালদহ মেডিক্য়াল কলেজেই সোনালিকে প্রশ্ন করা হয়, যেভাবে পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে দিল্লিতে গিয়ে সপরিবারে তাঁরা কাজ করতেন, সেই পরিস্থিতি কী আবার হতে পারে? তাঁরা কী দিল্লিতে আবার ফিরে যাবেন? সোনালির স্পষ্ট জবাব, না। তাঁরা আর দিল্লিতে কাজের জন্য যাবেন না।
যেখানে রাজ্যেই তাঁদের কর্মসংস্থানের জন্য ব্যবস্থা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে বাংলার মানুষ ক্রমশ ভিন রাজ্যে গিয়ে পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করা বন্ধ করে দিচ্ছেন। সোনালিদের ক্ষেত্রেও যে তেমন হলে সমস্যা নেই, স্পষ্ট করে দেন সামিরুল। তিনি জানান, রাজ্য সরকারের সব রকম প্রকল্পের সুবিধা পাবেন সোনালি। সেই সঙ্গে রাজ্য সরকারের শ্রমশ্রী প্রকল্পের অধীনে কাজের ব্যবস্থা করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর যে সব সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প রয়েছে, সব ক্ষেত্রেই সুবিধা পাবেন সোনালি।

