চিত্তরঞ্জন খাঁড়া: আইপিএলে ধারাভাষ্যের কাজে বিভিন্ন শহরে ঘুরতে হচ্ছে। প্রচণ্ড ব্যস্ততার মধ্যেও মোহনবাগান কর্তাদের কথা দিয়েছিলেন চুনী গোস্বামীর নামাঙ্কিত ক্লাবের প্রধান প্রবেশদ্বারের উদ্বোধন করতে আসবেন। কারণ, চুনীর সঙ্গে সুনীল মনোহর গাভাসকরের (Sunil Gavaskar- Mohun Bagan) দারুণ সম্পর্ক ছিল। পরস্পরের বিরুদ্ধে খেলেছিলেন দুই কিংবদন্তি। পয়লা বৈশাখের সকালে গাভাসকর প্রথমবার মোহনবাগান ক্লাবে পা রেখেই জানিয়ে দিলেন, তাঁর চুনীদা ভারতীয় ফুটবলের ডন ব্র্যাডম্যান।
ক্লাবের প্রবেশদ্বারের বাইরে অপেক্ষারত রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, গায়ক-মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, মোহনবাগান সভাপতি টুটু বোস, সচিব দেবাশিস দত্ত, ফুটবল সচিব স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, সহসচিব সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়, চুনীর স্ত্রী বাসন্তী গোস্বামী সহ আমন্ত্রিত প্রাক্তনরা স্বাগত জানান গাভাসকরকে। ফিতে কেটে প্রয়াত চুনীর নামাঙ্কিত মোহনবাগান ক্লাবের প্রধান প্রবেশদ্বারের উদ্বোধন করেন ’৮৩-বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের তারকা।
বারপুজোর দিন অত সকালেও অগণিত সদস্য, সমর্থকদের উপস্থিতি ও তাঁদের মুখে জয় মোহনবাগান ধ্বনি শুনে অভিভূত ভারতীয় ক্রিকেটের কিংবদন্তি। গাভাসকরকে নতুন মোহনবাগান তাঁবু ঘুরিয়ে দেখান ক্লাব সচিব। তাঁবুর সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ সানি। নতুন ট্রফি ক্যাবিনেট, সিলিং থেকে ঝুলন্ত নৌকা, স্পোর্টস লাইব্রেরির প্রশংসাও করেন তিনি। লাইব্রেরিতে রাখা তাঁর লেখা একটি বইয়ে স্বাক্ষর করেন। এরপর ক্লাব লনে তৈরি মঞ্চে গাভাসকরের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। বলাই দে, জেভিয়ার পায়াস, দীপেন্দু বিশ্বাসদের মতো প্রাক্তনদের উপস্থিতিতে সেখানে প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের হাতে তুলে দেওয়া হয় বিশেষ স্মারক, মিষ্টির হাঁড়ি। একটি ফুটবলে স্বাক্ষর করার পাশাপাশি ক্রিকেট ব্যাটের উপর অটোগ্রাফ দেন লিটল মাস্টার।
আরও পড়ুন- পয়লা বৈশাখের তীব্র গরমে কালীঘাট–দক্ষিণেশ্বর–তারাপীঠে মানুষের ঢল
সকলকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে চুনী গোস্বামীর স্মৃতিচারণ করেন গাভাসকর (Sunil Gavaskar- Mohun Bagan)। তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় ফুটবলের আইকন চুনীদার নামাঙ্কিত গেটের উদ্বোধন করতে পারাটা আমার কাছে পরম সৌভাগ্যের। ওঁর বিরুদ্ধে আমার রঞ্জি ট্রফিতে ম্যাচ খেলার সৌভাগ্য হয়েছিল। কলকাতায় এলে চুনীদার সঙ্গে আড্ডা দিতাম। আমাকে এই সুযোগটা দেওয়ার জন্য মোহনবাগান ক্লাবের সকলকে ধন্যবাদ।” ব্র্যাডম্যানের সঙ্গে নিজের এক সাক্ষাতের প্রসঙ্গ টেনে প্রয়াত চুনীকে ভারতীয় ফুটবলের ব্র্যাডম্যান আখ্যা দেন গাভাসকর। বললেন, ‘‘বিশ্ব একাদশের হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে গিয়ে স্যার ডনের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছিল। অ্যাডিলেড বিমানবন্দরে আমাকে আর জাহির আব্বাসকে পাশে নিয়ে ছবি তুলেছিলেন ব্র্যাডম্যান। বলেছিলেন, আমার একপাশে মুম্বইয়ের ডন, আর একপাশে করাচির ডন। মাঝখানে আমি আসল ডন। আর ভারতীয় ফুটবলের ডন ব্র্যাডম্যান একজনই। তিনি চুনীদা।”
মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফির একটি ম্যাচের স্মৃতিরোমন্থন করে এতদিন পর গাভাসকর স্বীকার করলেন, ৯৬ রানে ব্যাট করতে থাকা চুনীর যে ক্যাচ তিনি স্লিপে দাঁড়িয়ে নিয়েছিলেন, সেটি ক্যাচ ছিল না। সানি বলেন, ‘‘ড্রপ ক্যাচ ছিল। কিন্তু আমার সতীর্থরা চুনীদার উইকেট নিতে মরিয়া ছিল। পরে চুনীদা আমার কাছে আক্ষেপ করেছিলেন মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে একটিও সেঞ্চুরি না থাকায়।”