নিটে দুর্নীতি নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক। সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষায় বাড়তি নম্বর কেন দেওয়া হল এই নিয়ে এবার পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি-কে নোটিস পাঠিয়ে জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। ৮ জুলাইয়ের মধ্যে এই নোটিসের জবাব দিতে বলা হয়েছে। নিটে দুর্নীতি এবং বাড়তি নম্বরের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একটি ‘লার্নিং অ্যাপ’-এর তরফে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়েছে। মামলাকারীর দাবি, ১৫০০ জন পরীক্ষার্থী বাড়তি নম্বর পেয়েছেন। যার জেরে পরীক্ষার্থীদের র্যাঙ্কিংয়ে প্রভাব পড়েছে। শুধু তা-ই নয়, পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তারা। মামলাকারীর আরও অভিযোগ, পরীক্ষার যে ওএমআর শিট দেওয়া হয়েছিল, তা অনেক পরীক্ষার্থীই পাননি। ওএমআর শিট সংক্রান্ত বিষয়েও এনটিএ-র কাছে জবাব চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
নিট কেলেঙ্কারির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চার রাজ্য থেকে গ্রেফতার ২৬ জন। তার মধ্যে বিহার থেকে গ্রেফতার ১৩, ঝাড়খণ্ডে ৬, গুজরাতে ৫ এবং মহারাষ্ট্রে ২ জন গ্রেফতার হয়েছেন। নিটের প্রশ্নফাঁসকাণ্ডের তদন্তভার নেওয়ার পর সিবিআইয়ের হাতে প্রথম গ্রেফতার হলেন ২ জন। বৃহস্পতিবার পাটনা থেকে ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতেরা হলেন, মণীশ কুমার এবং আশুতোষ কুমার। সিবিআই সূত্রে খবর, মণীশ নিজের গাড়িতে করে পরীক্ষার্থীদের নিয়ে যেতেন। তারপর তাঁদের জন্য ঘরের ব্যবস্থাও করতেন। আর এ কাজে তাঁকে সহযোগিতা করতেন আশুতোষ। মূলত পরীক্ষার্থীদের গাড়ি নিয়ে আসার কাজ করতেন মণীশ। আর নিজের বাড়িতে পরীক্ষার্থীদের থাকা, খাওয়ার বন্দোবস্তের ভার ছিল আশুতোষের উপর।
আরও পড়ুন- রাষ্ট্রপতির দৃষ্টি আকর্ষণ স্পিকারের, মেয়েরা তো রাজভবনে যেতেই ভয় পায় এখন
নিটে একসঙ্গে ৬৭ জন প্রথম স্থানাধিকার করায় দেশজুড়ে শুরু হয় বিতর্ক। পরে জানা যায়, প্রশ্নপত্র এবং কিছু পরীক্ষাকেন্দ্রে সময়জনিত সমস্যার জন্য বাড়তি নম্বর দেওয়া হয়েছিল ১৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীকে। কিন্তু র্যাঙ্কিং নিয়ে বিতর্ক প্রকাশ্যে আসতেই এই বাড়তি নম্বরের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদ জানায় বিভিন্ন মহল। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। মামলা হয় দেশের সর্বোচ্চ আদালতে। সেই মামলাতে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল। একটি হলফনামা দিয়ে কেন্দ্র তাদের বক্তব্যও জানায়। সুপ্রিম কোর্টকে (Supreme Court) কেন্দ্র জানায়, ১৫৬৩ জন নিট পরীক্ষার্থীকে দেওয়া বাড়তি নম্বর বাতিল করা হবে। বদলে তাঁদের নতুন করে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেবে কেন্দ্র। যাঁরা এই পরীক্ষা দিতে চান, ২৩ জুন এই পরীক্ষা দিতে হবে তাঁদের। কেন্দ্র আরও জানায়, পরীক্ষার স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২৩ জুন সেই পরীক্ষা নেওয়া হয়। এনটিএ-র তরফে জানানো হয়, ১৫৬৩ জনের মধ্যে মাত্র ৮১৩ জন পরীক্ষায় বসেছিলেন। পরীক্ষায় বসেননি বাকি ৭৫০ জন পড়ুয়া।