বুলডোজার নীতি নিয়ে ডবল ইঞ্জিন সরকার গর্ববোধ করে। কথায় কথায় শোনা যায়, গুঁড়িয়ে দেওয়ার নিদান। এই তালিকায় সবেচেয়ে এগিয়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি। এ নিয়ে আগেও বিজেপি সরকারকে নিশানা করেছে সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। এবার বিরোধীদের মতে কার্যত সিলমোহর দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা করে দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, কেউ অভিযুক্ত বা দোষী হলেই তার বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া যায় না। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর। নির্দিষ্ট নিয়ম জারি করা প্রসঙ্গে আদালতের পক্ষ থেকে চাওয়া হয়েছে পরামর্শও।
কেন্দ্রের ‘বুলডোজার নীতি’ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) কাছে নির্দেশিকার আবেদন জানিয়ে মামলা করেছিলেন আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভে। উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছিল কয়েকটি ঘটনা। এর মধ্যে ছিল রাজস্থানের উদয়পুরের এক পড়ুয়া তার সহপাঠীর ওপরে ছুরি চালিয়েছিল বলে ওই পড়ুয়ার বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া, দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরীতে এক বাড়ির ছেলে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হয়েছিল বলে তার বাড়ি ভেঙে ফেলার ঘটনা।
আরও পড়ুন- ‘অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড’: আগামিকাল বিধানসভায় পেশ
ওই মামলায় হলফনামা দিয়ে কেন্দ্রের সলিসেটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতে বলেন, কোনও ব্যক্তি অভিযুক্ত বা দোষী সাব্যস্ত হলেই তাঁর বাড়ি ধ্বংস করা যায় না। সম্পত্তি অবৈধ হলেই তা ভাঙা যেতে পারে। তিনি বলেন, আদালতের সামনে বিষয়টি ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি বিআর গাভাই ও বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন, কেউ ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত বা দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর বাড়ি ভেঙে ফেলা হবে কোন যুক্তিতে? এরপরে বিচারপতি গাভাই বলেন, অভিযুক্ত বা দোষী হলেই যদি বাড়ি ভাঙা না হয় তাহলে দেশ জুড়ে নির্দেশিকা দেওয়া হচ্ছে। বেঞ্চের নির্দেশ, অবৈধ নির্মাণ হলেই তা ভাঙা যেতে পারে তবে তার আগে পুরসভাকে নোটিস জারি করতে হবে। জবাব দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময় দিতে হবে। খোলা থাকবে আইনি সমাধানের রাস্তাও। এসবে কাজ না হলে ভাঙা যেতে পারে অবৈধ নির্মাণ।
এক্ষেত্রে একই নিয়ম প্রযোজ্য সমস্ত ধর্মীয় উপাসনালয়ের ক্ষেত্রেও। আদালতের মন্তব্য, কোনও বেআইনি নির্মাণ রক্ষার পক্ষে তারা নয় তবে সাধারণ নাগরিকের রাস্তা আটকে বা অন্য কোনও ভাবে অবৈধ নির্মাণ হলে তা ভাঙা যেতে পারে। কিন্তু এসবের জন্য থাকতে হবে নির্দিষ্ট নিয়ম।