অনন্ত গুছাইত, নয়াদিল্লি : লখিমপুর খেরিতে গাড়ি চাপা দিয়ে কৃষক হত্যা মামলার শুনানিতে বুধবার সুপ্রিম কোর্ট উত্তরপ্রদেশ সরকারের প্রতি তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। এদিন সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ যোগী সরকারকে বলে, “পা ঘষে ধীরে চলার অনুভূতিটা বাদ দিন।”
উত্তরপ্রদেশ সরকারের পক্ষে এদিন আদালতে উপস্থিত আইনজীবী হরিশ সালভে, সিল করা খামে মামলার স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা আদালতকে জানান। তখন প্রধান বিচারপতি এনভি রামান্না অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘এখন আমরা এটা দিয়ে কী করব! শুনানির আগের মুহূর্তে সিল করা খামে রিপোর্টটি আমরা পেয়েছি। আপনাকে আগের দিন জমা দিতে বলা হয়েছিল। আমরা মঙ্গলবার রাত একটা পর্যন্ত রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করেছি।’’ বিচারপতি সূর্যকান্ত মন্তব্য করেন, সিল করা খামে রিপোর্ট দিতে হবে, এমন কথা তো আমরা বলিনি। এরপর সালভে শুনানি শুক্রবার পর্যন্ত স্থগিত করার আর্জি জানান৷ যদিও আদালত এই আর্জি খারিজ করে দেয়৷
আরও পড়ুন : বৈঠকে বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধির তীব্র প্রতিবাদ ডেরেকের
উল্লেখ্য, লখিমপুর খেরিতে ৩ অক্টোবর যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে, তার তদন্ত আদালতের তত্ত্বাবধানে করার আবেদন জানিয়ে একটি মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। ওই ঘটনায় ৪ জন কৃষক, একজন সাংবাদিক-সহ ৮ জনের মৃত্যু হয়৷ জখম হয়েছিলেন ১৬ জন৷ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রামান্না, বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হচ্ছে।
আরও পড়ুন : স্বাভাবিক হচ্ছে আর জি কর
এদিনের শুনানিতে সালভে বলেন, অভিযুক্তদের সকলকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দুটি অপরাধ নথিভুক্ত হয়েছে। প্রথমটি কৃষকদের গাড়ি চাপা দিয়ে মারা৷ দ্বিতীয়টি হল গাড়িতে থাকা দুই ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা। সালভে আদালতকে জানান, ১০ জন অভিযুক্তের মধ্যে চারজন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
সঙ্গে সঙ্গে আদালত জানতে চায়, অন্য ছয়জনের কী হবে? আপনারা হেফাজত চাননি তাই তাদেরকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। কী অবস্থা এই মামলার? এরপর সালভে বলেন, লখিমপুরের ঘটনার ৩৪ জন সাক্ষীর মধ্যে চারজনের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। অন্য সাক্ষীদের বক্তব্যও রেকর্ড করা হচ্ছে৷ আদালত বন্ধ থাকায় সকলের বক্তব্য রেকর্ড করা শেষ হয়নি৷ এই কথায় বিচারপতি হিমা কোহলি জিজ্ঞাসা করেন, সাক্ষীদের বয়ান কেন ১৬৪ ধারার অধীনে রেকর্ড করা হয়নি। উত্তরপ্রদেশ সরকারের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, অপরাধের দৃশ্য পুনর্গঠন করা হচ্ছিল। আদালত বলে, কিন্তু ১৬৪ ধারার অধীনে বিবৃতি রেকর্ড করা তো ভিন্ন বিষয়! এটা বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হয়। অভিযোগ প্রমাণের ক্ষেত্রে এটা অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, ১৬৪ ধারার অধীনে সকলের বয়ান রেকর্ড করতে হবে। সালভের অনুরোধে আদালত ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি রাখে৷ ওইদিনই যোগী সরকার লখিমপুরের ঘটনায় পরবর্তী রিপোর্ট দাখিল করবে৷