প্রতিবেদন: স্তনে হাত, কিংবা পাজামার দড়ি ধরে টানা ‘ধর্ষণ নয়’৷ এলাহাবাদ হাইকোর্টের এই বিতর্কিত রায়ে এবার স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি এই রায়কে অসংবেদনশীল ও অমানবিক বলে মন্তব্য করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। সম্প্রতি এলাহাবাদ হাইকোর্টের এই রায় প্রকাশ্যে আসতেই প্রবল সমালোচনা শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে তৎপর হয় শীর্ষ আদালতও৷ বিচারপতি বিআর গাভাই এবং অগাস্টিন জর্জ মাসিহর বেঞ্চে এই ঘটনার শুনানি হয় বুধবার৷ বিচারপতি গাভাই এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় সম্পর্কে বলেন, এটা অত্যন্ত গুরুতর একটা বিষয়৷ সংশ্লিষ্ট বিচারপতির তরফে চূড়ান্ত অসংবেদনশীল মত ব্যক্ত করা হয়েছে৷ আমরা দুঃখিত যে কোনও বিচারপতির বিরুদ্ধে এত কড়া শব্দ আমাদের ব্যবহার করতে হচ্ছে৷ কেন্দ্র এবং উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে এই বিষয়ে জবাব তলব করেছে শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন-আমেরিকার নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বড় বদল আনার পথে ট্রাম্প
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাও সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণের সঙ্গে সহমত হন। তিনি বলেন, কিছু রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর ১১ বছরের এক কিশোরীকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল পবন এবং আকাশ নামে দু’জনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তারা নির্জন কালভার্টে কিশোরীর বুকে হাত দিয়েছিল। তার পাজামার দড়ি খোলার চেষ্টা করেছিল। সেই মামলার শুনানিতে এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি রামমনোহর নারায়ণ মিশ্রের বেঞ্চ জানায়, দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তাতে ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টার মামলা খাটে না। তবে এটি অবশ্যই যৌন হেনস্থার ঘটনা। ধর্ষণের চেষ্টার মামলা দায়ের করতে গেলে সরকারি আইনজীবীকে প্রমাণ করতে হবে যে, ঘটনাটি নিশ্চিতভাবে ধর্ষণের দিকেই এগোচ্ছিল। ঘটনার পরে পবন ও আকাশের বিরুদ্ধে পকসো ধারায় ধর্ষণের অভিযোগ আনে মেয়েটির পরিবার৷ ‘উই দ্য উইমেন অফ ইন্ডিয়া’ নামে একটি সংগঠন এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করার পর সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলার শুনানি করে। নির্যাতিতার মা হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন। আপাতত হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়ে এ-ব্যাপারে অসন্তোষ ব্যক্ত করেছে দেশের শীর্ষ আদালত।