সুপ্রিম কোর্টে জোর ধাক্কা মোদি সরকারের। লোকসভা ভোটের আগেই নির্বাচনী বন্ড মামলায় (Electoral bonds) রায়দান সুপ্রিম কোর্টের। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ বৃহস্পতিবার জানায় মোদি সরকারের জারি করা নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প অসাংবিধানিক। সেই কারণে এই প্রকল্প খারিজ করল দেশের শীর্ষ আদালত। নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কেন্দ্রের তরফে যুক্তি দেওয়া হয় যে রাজনৈতিক দলগুলির আর্থিক অনুদানের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনতে নগদ টাকার পরিবর্ত হিসেবে নির্বাচনী বন্ড চালু করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন সংস্থাও নির্বাচনী বন্ড কিনে রাজনৈতিক দলগুলিকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে পারে বলেও প্রস্তাব রাখা হয় প্রকল্পে। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের মামলা হয়। আজ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ জানায় বেনামি নির্বাচনী বন্ডের (Electoral bonds) ফলে সংবিধানে প্রদত্ত বাকস্বাধীনতার অধিকার লঙ্ঘিত হয়।
আরও পড়ুন- তেলের বিল বকেয়া ১৯ কোটি টাকা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আজ উত্তরে প্রতিবাদ
উল্লেখ্য, সংবিধানের ১৯ (১) (এ) ধারার আওতায় সব নাগরিকদের বাকস্বাধীনতা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু এই বন্ড সেই ধারাকে ভঙ্গ করবে। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, নির্বাচনী বন্ড তথ্য জানার অধিকার (আরটিআই) আইনকে লঙ্ঘন করছে। রাজনৈতিক দলগুলির আর্থিক অনুদানের উৎস সম্পর্কে ভোটারের কিছুই জানার অধিকার থাকতে পারে না বলে মোদি সরকার যে যুক্তি দিয়েছিল তাও খারিজ করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন ২০১৮ সালে প্রয়াত অরুণ জেটলি নির্বাচনী বন্ডের কথা ঘোষণা করেছিলেন। ২০১৭-র অর্থ বিলের মাধ্যমে আইনে একগুচ্ছ সংশোধনী এনে নরেন্দ্র মোদি সরকার ২০১৮ থেকে নির্বাচনী বন্ড চালু করে। ফলে কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে চাইলে, তাদের বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলকে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে ১ হাজার, ১০ হাজার, ১ লক্ষ, ১০ লক্ষ এবং ১ কোটি টাকা মূল্যের বন্ড পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছিল মোদি সরকার। এই প্রকল্পের নামে কেন্দ্র এবং অধিকাংশ রাজ্যে ক্ষমতায় থাকার সুবাদে গেরুয়া শিবির যে অর্থ আমদানির পাকাপাকি বন্দোবস্ত করে তুলতে চাইছিল, আজ সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক রায় দিয়ে তা নস্যাৎ করে দিয়েছে।