সোমনাথ বিশ্বাস : শুভেন্দু অধিকারীকে চোর, তোলাবাজ বলার পর দল বহিষ্কারের চিঠি ধরিয়েছে হাওড়ার সদরের বিজেপি জেলা সভাপতি সুরজিৎ সাহাকে। কিন্তু তাতে না দমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফের বোমা ফাটালেন সুরজিৎ। অভিযোগের সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন…
১. দলের রাজ্য সহ সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে বসিয়ে যখন দলের সাধারণ কর্মী শতরূপা চড় মারেন দলের রাজ্য সম্পাদকের মতো শীর্ষ নেতৃত্বকে, তখন শাস্তির কথা মনে পড়ে না? জবাব দিন দলের নেতারা।
২. তথাগত রায় যা খুশি তাই ট্যুইটে লিখতে পারেন কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় সম্বন্ধে। তোলাবাজ, মহিলা-সংসর্গ নিয়ে সরাসরি অভিযোগ সকলে পড়েন, শোনেন। কিন্তু পার্টির সেসব জিনিস চোখে পড়ে না। বহিষ্কারের চিঠি তখন টাইপ করার জন্য বোধহয় টাইপিস্ট খুঁজে পাওয়া যায়নি! চাইলে আমরা কিন্তু পাঠিয়ে দিতাম।
৩. দলের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ প্রকাশ্যে সাংসদ তথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে গালাগালি করতে পারেন। কারণ, যাঁরা শাস্তি দেবেন, তাঁরা সকলে বোধহয় দিলীপ-বিরোধী। সকলে কি কানে তুলো গুঁজে বসেছিলেন? তাই শুনতে পাননি।
এরপরই সুরজিতের প্রশ্ন, এদের বিরুদ্ধে কিছু করবে না দল। কেন করবে না? কারণ, এরা বিজেপি করে। এরা কোন বিজেপি? নব্য বিজেপি। এই নব্য বিজেপিদের বিরুদ্ধে যদি কিছু বলা হয়, তাহলে আমার মতো অনেক কার্যকর্তাকে সাসপেন্ড করা হবে।
হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র এবং দলের বর্তমান চেয়ারম্যান রথীন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধেও এদিন সরাসরি আক্রমণ করেছেন সুরজিৎ। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বললেন,
১. মেয়র থাকার সময় উনি বছরের পর বছর অডিট করেননি। খরচের কোনও হিসাব নেই।
২. এবার বিধানসভা ভোটে বিজেপির প্রার্থী হওয়ার পর ব্যানার-ফেস্টুন প্রচুর ছাপতে দিয়েছিলেন। যাঁদের দিয়েছিলেন, তাঁদের প্রাপ্য অর্থ পর্যন্ত দেননি।
৩. ওঁর বাড়ির ওয়ার্ডে উনি জিততে পারেন না। তাই বাড়ির সামনে লাগানো ‘গদ্দার’ ব্যানার আমাকে গিয়ে নামাতে হয়েছে।
৪. ওঁর আলাদা কোনও ওজন নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে জিততেন। এবার সেটা নেই, তাই গোহারা হেরেছেন।
এরপরেই সুরজিৎ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, শুভেন্দুর জন্য আমাকে সাসপেন্ড হতে হয়েছে। কতদিন সে বিজেপিতে থাকবে, তার নিশ্চয়তা নেই। যেদিন সে দলে থাকবে না, সেদিন দলকে আত্মবিশ্লেষণ করে বলতে হবে সুরজিৎ সাহাকে সাসপেন্ড করা ঠিক হয়েছিল কি না!