পার্থসারথি রায়, জলপাইগুড়ি: নজির! একের পর এক বেসরকারি হাসপাতাল ফিরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু জীবন ফেরাল সরকারি হাসপাতাল। একটা সময় ভুল চিকিৎসার দিকেও চলে যাচ্ছিলেন ডাঙাপাড়ার গদাধর রায়। বাড়ছিল খরচের বহরও। শেষ পর্যন্ত জলপাইগুড়ি স্পেশালিটি হাসপাতাল তাঁর প্রাণ ফেরাল। রোগীর পরিবার এজন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন চিকিৎসক সৌমেন মণ্ডলকে। সেই সঙ্গে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কারণ মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই জলপাইগুড়িতে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন-বিরোধী শিবিরে ভাঙন অব্যাহত, বাম-কং ভেঙে তৃণমূল কংগ্রেসে
জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে দীর্ঘ চার ঘন্টার জটিল অস্ত্রোপচার করে রোগীকে নতুন জীবন দিলেন শল্য চিকিৎসক সৌমেন মণ্ডল। প্রায় ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিরল রোগে ভুগছিলেন ময়নাগুড়ি রোড এলাকার বাসিন্দা উত্তর ডাঙাপাড়ার গদাধর রায়। পেশায় দিনমজুর। নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসারে চিকিৎসায় চলে গিয়েছে সর্বস্ব। এক চিলতে জমিও বিক্রি করতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু দীর্ঘদিন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল চিকিৎসা করেও লাভ হয়নি। অবশেষে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। শল্য চিকিৎসক সৌমেন মণ্ডল তাঁর চিকিৎসা শুরু করেন।
তিনি জানিয়েছেন, গত ১০-১২ বছর ধরেই পেটের সমস্যায় ভুগছিলেন গদাধর রায়। টিউমার সন্দেহে চিকিৎসা চলে বেসরকারি হাসপাতালে কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। পরে তিনি আসেন জলপাইগুড়ি সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে। বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করে জানা যায় তিনি রাইট সাইডেড প্যারা ডুয়োডেনাল হার্নিয়ায় আক্রান্ত। হার্নিয়া সাধারণত শরীরের বাইরে হলেও গদাধর রায়ের ক্ষেত্রে তা ছিল শরীরের ভেতরের ডানদিকে। ক্ষুদ্রান্তের সমস্ত অংশ দলা পাকিয়ে একটি থলের আকার নিয়েছিল। বছর ষাটের গদাধরবাবুর অস্ত্রোপচার করা হয়। চিকিৎসক সৌমেন মন্ডল বলেন, ‘উত্তরবঙ্গে এধরণের অস্ত্রোপচার সম্ভবত প্রথম।’
আরও পড়ুন-বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের বিরুদ্ধে ৪ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
অস্ত্রপচারের পর বর্তমানে সুস্থ গদাধরবাবু। শল্য চিকিৎসক শৌভিক দেবনাথ, অ্যানাস্থেটিস্ট সুব্রত বর্মন ও দু’জন নার্স সহ মোট পাঁচ জনের একটি দল এই অস্ত্রোপচারে ছিলেন। স্বামীর সফল অস্ত্রোপচার হওয়ায় চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী জোৎস্না রায়। খুব শীঘ্রই হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বাড়ি ফিরবেন গদাধর। দীর্ঘদিন পর তাঁর সুস্থতায় খুব খুশি রোগীর পরিজনেরা।