প্রতিবেদন : জরিমানার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল প্রথম থেকেই। হাইকোর্টের সেই জরিমানার আদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টেও। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানার হাইকোর্টের সেই নির্দেশের উপরে শুক্রবার স্থগিতাদেশ দিল দেশের শীর্ষ আদালত। সেইসঙ্গে তলব করা হয়েছে সব পক্ষের জবাব। দেওয়া হচ্ছে নোটিশও। সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চে এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়ের করা স্পেশাল লিভ পিটিশনের শুনানি হয়।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
বিচারপতি জে কে মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি পি এস নরসিমার বেঞ্চ স্থগিতাদেশ দেয় হাইকোর্টের একক বেঞ্চের নির্দেশের উপর। পরবর্তী শুনানি ১০ জুলাই। যাওয়া যাক একটু গভীরে। বিতর্কের সূত্রপাত হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিষেক সম্পর্কে আপত্তিকর, পক্ষপাতদুষ্ট মন্তব্য এবং আইন ও এক্তিয়ার বহির্ভূত নির্দেশকে ঘিরে। গত ২৯ মার্চ জনসভায় অভিষেকের ভাষণে ইডি এবং সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিয়োগ মামলায় অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষের সঙ্গে তাঁর গোপন বোঝাপড়া রয়েছে বলে বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান। তারই ভিত্তিতে আদালতের নির্দেশ, সিবিআই-ইডির তদন্তের বাইরে থাকা উচিত নয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
আরও পড়ুন-ভগবতী গঙ্গে
১৩ এপ্রিল দেওয়া হাইকোর্টের এই নির্দেশকে অযৌক্তিক, ভিত্তিহীন এবং এক্তিয়ার বহির্ভূত বলে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল লিভ পিটিশন দায়ের করেন অভিষেক। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই রায় ব্যক্তিগত পক্ষপাতিত্বের প্রতিফলন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যকে মান্যতা দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর মনোভাব দেখায়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারের প্রেক্ষিতেও তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করে শীর্ষ আদালত এবং তাঁকে সংশ্লিষ্ট মামলার বিচারপতির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে সেই দায়িত্ব অর্পণ করে অন্য বিচারপতির হাতে। বিস্ময়করভাবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের জায়গায় এই মামলার দায়িত্বে আসা কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই এক্তিয়ার বহির্ভূত, আইনবহির্ভূত এবং পক্ষপাতদুষ্ট নির্দেশই বহাল রাখেন।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রী আজ এগরায় মৃতদের পরিবারের পাশে
শুধু তাই নয়, শীর্ষ আদালতের দেওয়া স্বাধীনতার অপব্যবহার করে ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানার আদেশ দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। এরই সুযোগে গত ২০ মে মাত্র কয়েক ঘণ্টার নোটিশে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে অযৌক্তিকভাবে, নীতিবহির্ভূতভাবে এবং অবশ্যই আইনবহির্ভূতভাবে টানা সাড়ে ৯ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। সাংসদ হিসেবে তাঁর আইনগত অধিকার এবং রক্ষাকবচকে মর্যাদা না দিয়ে এই কাজ করে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। সিবিআইয়ের ডাকে সাড়া দিলেও বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই আবারও সুপ্রিম কোর্টে স্পেশাল লিভ পিটিশন দায়ের করেন অভিষেক। সেই মামলাতেই এদিন নির্দেশ এল অভিষেকের পক্ষে। স্থগিতাদেশ দেওয়া হল ২৫ লক্ষ টাকার জরিমানার নির্দেশে।