প্রতিবেদন : শুধু অবিজেপি রাজ্যগুলিকে টার্গেট করা হচ্ছে। সেখানে ইডি, সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখিয়ে বিরোধীদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে। শনিবার গার্ডেনরিচে ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হওয়ার পর এমনই মন্তব্য করলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
আরও পড়ুন-ঐতিহাসিক চা-বাগান কর্মী সম্মেলন, আজ অভিষেকের সভা
তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির তৎপরতার পিছনে দু’টি কারণ, প্রথমত, ভয় দেখানো, যাতে কেউ বিজেপির বিরুদ্ধে কোনও লড়াই করতে না পারে। দ্বিতীয়ত, বাংলার অর্থনীতিকে ভেঙে দেওয়ার চক্রান্ত। কিন্তু এসব করে তৃণমূল কংগ্রেসকে ভয় পাওয়ানো যাবে না। আইটি রেইড, ইডি রেইড করে বিজেপি সরকার বোঝাতে চাইছে, বাংলায় ব্যবসা কোরো না। ব্যবসা করতে গেলে আমাদের রাজ্যে চলে এসো। এখানে থাকলেই ব্যবসায়ীরা এই ভাবে আক্রান্ত হবে। এভাবেই বাংলার অর্থনীতিকে ভেঙে দেওয়ার চক্রান্ত হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন ফিরহাদ হাকিম। এদিন ফিরহাদ হাকিম প্রশ্ন তোলেন, কোনও বিধানসভা এলাকা থেকে ইডি বা কেউ টাকা উদ্ধার করলে তার জবাব কেন ওই বিধায়ককে দিতে হবে? তিনি পালটা প্রশ্ন করেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তো বহু টাকা উদ্ধার হচ্ছে। তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখ বন্ধ কেন? ব্যাঙ্ক প্রতারণায় অভিযুক্ত নীরব মোদির প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, নীরব মোদি হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পালিয়ে গেলেন। দেশের প্রধানমন্ত্রী কি কোনও জবাব দিয়েছেন? আর পরিবহণ ব্যবসায়ী বলেই কি সব আমাকে বলতে হবে? আমার আগেও তো অনেকে পরিবহণমন্ত্রী ছিলেন, তাঁরাও বলুন না। শনিবার সকাল থেকে শহরের একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। তল্লাশিতে শহরের এক পরিবহণ ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে মেলে প্রায় ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা। বাড়ির খাটের তলায় রাখা ছিল টাকার বান্ডিল। টাকার পরিমাণ দেখে তাজ্জব ইডি কর্তারাও। টাকার অঙ্ক জানতে প্রথমে দু’টি, পরে আরও ছ’টি মেশিন নিয়ে এসে শুরু হয় টাকা গোনার কাজ।
আরও পড়ুন-নিরামিষ দেবতা
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে এখনও টাকা গোনা শেষ হয়নি। সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। ঘটনার পর থেকে এখনও নিখোঁজ অভিযুক্ত ব্যবসায়ী আমির খান। তাঁর তিনটি মোবাইল ফোনই সুইচড অফ। অভিযুক্ত আমিরের বাবা নিসার আলি এলাকায় পরিবহণ ব্যবসায়ী বলেই পরিচিত। গার্ডেনরিচের শাহী আস্তাবল রোডে তাঁর সাদামাটা বাড়ি। সেই বাড়ির খাটের তলায় লুকানো ছিল এই বিপুল অঙ্কের টাকা। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের অভিযোগের ভিত্তিতে এই তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। এছাড়াও শহরের আরও কয়েকটি জায়গাতেও তল্লাশি চালায় ইডি। পার্ক স্ট্রিটের কাছে ম্যাকলয়েড স্ট্রিটে এক আইনজীবীর বাড়িতেও চলে তল্লাশি। আমির খানের নিউটাউনের ফ্ল্যাট থেকে বিপুল টাকা মিলেছে। সন্ধ্যার পর টাকার বান্ডিল ১০টি ট্রাঙ্কে ভরে একটি ট্রাকে করে নিয়ে যান ইডি আধিকারিকরা।