তনয় ঘোষ, সিডনি: মাঠভরা কাশফুল মধ্যেখানে ছোট্ট কাপড়ের প্যান্ডেল। আড়ম্বর বা জাঁকজমক নয়। উত্তর ২৪ পরগনায় আমার গ্রামের দুর্গাপুজোয় আন্তরিকতাই ছিল বিশেষত্ব। পুজো এলেই তাই মনে পড়ে পাড়ার প্যান্ডেলে মাইকে বাজা পুরনো দিনের গান। কর্মসূত্রে এখন বিদেশে। তবে প্রবাসে থেকেও বাঙালিয়ানাকে লালন করি আমরা। বাংলার নানা রীতি-রেওয়াজকে আঁকড়ে থাকি। আর দুর্গাপুজোতে প্রবাসী বাঙালির আবেগ ও রোমাঞ্চ অপরিসীম। সিডনিতে দুর্গাপুজো হয় জমিয়ে।
আরও পড়ুন –আজ মহাসপ্তমী, নবপত্রিকার স্নান
এখানে প্রায় ১৮টি দুর্গাপুজো হয়। ঢাকের বোল, ধুনুচি নাচ, খাওয়া-দাওয়া আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জাঁকজমকপূর্ণভাবে হয় পুজো। আমার নিজের গ্রামে পাড়ার ক্লাবের পুজোয় যেমন দায়িত্ব নিতাম, এখানেও একইভাবে সামলাতে হয়। বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন নিউ সাউথ ওয়েলসের পুজোর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আমাকে। সবাই মিলে একসঙ্গে পুজোর জোগাড়, অন্যান্য আয়োজন করি আমরা। ৪৮ বছর ধরে আমাদের এই বাঙালি অ্যাসোসিয়েশনের পুজো হচ্ছে। প্রতিবছর উইকএন্ডে পুজো হয়। তবে এবছর এখানে পুবলি হলিডে চলায় চারদিনই পুজো। আমাদের পুজোর বিশেষত্বই হল পুজোর আগের দিন আনন্দমেলা হয়।
আরও পড়ুন –ছোট্ট ‘উমা’ অমাত্রার হাতে মশা বধ
মেলায় প্রায় ২০-২৫টি বাঙালি খাবারের স্টল থাকে। যেখানে একেবারে অথেন্টিক বাঙালি খাবার পাওয়া যায়। সিডনিতে বসে শুক্তো থেকে চচ্চড়ি কিংবা চিতল মাছের মুইঠা চেটেপুটে উপভোগ করি আমরা। আমাদের সঙ্গে যোগ দেন এখানকার নাগরিকরাও। প্রায় ২০০০ মানুষের সমাগম হয় এই পুজোয়। তাই হল ভাড়া করে আমরা গুছিয়ে উঠতে পারি না। একটি স্কুল ভাড়া নিতে হয় আমাদের। সেখানেই হয় আয়োজন। পুজো ক’টা দিন যাঁরা আসেন প্রত্যেককেই দুপুর এবং রাতে খাওয়ানো হয় একেবারে বিনামূল্যে। বাংলা গানের অনুষ্ঠান, কবিতা আবৃত্তি আর প্রাণখোলা আড্ডায় ভরে ওঠে আমাদের পূজাপ্রাঙ্গণ।