দেশ ছাড়লেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদ বিদ্রোহীদের দখলে রাজধানী দামাস্কাস

দামাস্কাস ছেড়ে পালালেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। রবিবার সকালেই শহরের দখল নেয় বিদ্রোহীরা। ‘স্বাধীন’ ঘোষণা করে রাজধানী দামাস্কাসকে।

Must read

প্রতিবেদন : দামাস্কাস ছেড়ে পালালেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। রবিবার সকালেই শহরের দখল নেয় বিদ্রোহীরা। ‘স্বাধীন’ ঘোষণা করে রাজধানী দামাস্কাসকে। সিরিয়ার সরকারি টেলিভিশনের এক ভিডিও বার্তায় বিদ্রোহীদের দাবি, ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন আসাদ। কিন্তু তিনি রাজধানী ছেড়ে ঠিক কোথায় গিয়েছেন তা এখনও অজানা। সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, একটি বিমানে উঠতে দেখা গিয়েছে আসাদকে। কিন্তু রয়র্টাস বলছে, খুন করা হয়েছে আসাদকে। তবে এর সত্যতা সম্পর্কে কোনও নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি। আসাদের ঘনিষ্ঠ রাশিয়া জানিয়েছে, ইস্তফা দিয়ে সিরিয়া ছেড়েছেন আসাদ। তাঁর বিমান কোনও দুর্ঘটনায় পড়েনি। এদিন দামাস্কাস দখলের পরেই আসাদের বাসভবনে ঢুকে লুঠপাট-ভাঙচুর চালায় বিদ্রোহীরা। এই পরিস্থিতিতে তাৎপর্যপূর্ণভাবে অত্যন্ত নরম ভূমিকা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী গাজি জালালি। তিনি দ্বিধাহীনভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, ক্ষমতা হস্তান্তর করতে তিনি প্রস্তুত। তবে তাঁর ইচ্ছা, সবকিছু হোক শান্তিপূর্ণভাবে। সিরিয়ার বিদ্রোহীদের নেতা আহমেদ আল-শাহার ঘোষণা, যতক্ষণ না পর্যন্ত ক্ষমতার আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর দেখভাল করবেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীই। এদিকে সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের সফল আগ্রাসনে খুশির বন্যা বইছে কাতারের দোহায়। চলছে স্বাধীনতা উদযাপন। দোহায় সিরিয়ার দূতাবাস এক বিবৃতিতে এই ঘটনাকে আখ্যা দেওয়া হয়েছে, স্বাধীনতার ভোর। মন্তব্য করা হয়েছে, স্বৈরাচারের কবল থেকে মুক্ত হয়েছে সিরিয়া। তবে আসাদের অন্তর্ধান এবং বিদ্রোহীদের আগ্রাসন—এই দু’টি ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীতে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরেই সেদেশের একটার পর একটা গুরুত্বপূর্ণ শহরের দখল যেভাবে বিদ্রোহীরা নিচ্ছিল তাতে দামাস্কাসের পতন কিন্তু খুব একটা অপ্রত্যাশিত ছিল না। লক্ষণীয়, ১৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে সিরিয়ায়। ঝুঁকি না নিয়ে ভারতীয়দের অবিলম্বে দেশে ফেরার জন্য বার্তা পাঠিয়েছে দিল্লি। এদিকে ইজরায়েলও সিরিয়ায় মিসাইল ছুঁড়েছে বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন-রাজ্যপালের আমন্ত্রণে রাজভবনে আজ মুখ্যমন্ত্রী

রবিবার সকালে দামাস্কাসের দখল নেয় সশস্ত্র বিদ্রোহীদের দু’টি গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম এবং তাদেরই সমমনোভাবাপন্ন জইশ আল-ইজ্জার যৌথবাহিনী। প্রথমদিকে তাদের রুখতে প্রাণপণ চেষ্টা করে সিরিয়ার সেনাবাহিনী। বেশকিছু জায়গায় তাদের সংঘর্ষও হয় বিদ্রোহীদের সঙ্গে। বিশেষ করে হামা, হোমস এবং ডেরায় বিদ্রোহীদের পথ আটকানোর চেষ্টা করে সিরীয়-সেনা। কিন্তু তারপরের হঠাৎ সব চুপচাপ। সেনার পক্ষ থেকে আর কিছুই বলা হয়নি। তবে সেখানকার সংবাদমাধ্যম বলছে, প্রায় বিনা প্রতিরোধেই দামাস্কাসে ঢুকে পড়ে রাজধানী শহরের দখল নিয়েছে বিদ্রোহীরা। সকালেও শোনা যাচ্ছিল গুলির শব্দ। আসাদের দামাস্কাস ত্যাগের পরে তাঁর সমর্থকদের মধ্যেও হুড়োহুড়ি পড়ে যায় পালানোর জন্য। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী গাজি জালালি বলেছেন, আমি কোথাও যাচ্ছি না। এটা আমার দেশ, এখানেই থাকছি। প্রতিদিনের মতো সকালে অফিস যাব।

Latest article