যোগীরাজ্য, উত্তরাখণ্ড, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা : ক্যাপসুলে ট্যালকম ভরে জালিয়াতি, জাল ওষুধের বেনজির চক্র ৪ বিজেপি রাজ্যে

তদন্ত রিপোর্ট বলছে, মুম্বই থেকে যোগীরাজ্যের সাহারানপুরে কোটি কোটি টাকা পাঠানো হত এই জাল অ্যান্টিবায়োটিক সংগ্রহের জন্য।

Must read

প্রতিবেদন: ভয়ঙ্কর কাণ্ড! দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে অবাধে সরবরাহ করা হচ্ছে নকল অ্যান্টিবায়োটিক। ট্যালকম পাউডারের সঙ্গে স্টার্চ বা শর্করা মিশিয়ে চালানো হচ্ছিল অ্যান্টিবায়োটিক বলে। সম্প্রতি এক বিস্তারিত তদন্ত রিপোর্টে উঠে এসেছে এই ভয়াবহ তথ্য। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, জাল ওষুধ উৎপাদন থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে সরবরাহের জাল ছড়িয়ে পড়েছে উত্তরাখণ্ড শুরু করে মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ এবং হরিয়ানার মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতেই। এইসব গেরুয়া রাজ্যেই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই অশুভচক্র। ডবল ইঞ্জিন সরকারের ভূমিকা নীরব দর্শকের। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, জাল অ্যান্টিবায়োটিক চক্রের নেপথ্যে কি গেরুয়া হাত? বিজেপি সরকারের প্রশ্রয়েই কি এই বিশাল চক্রের এমন রমরমা? নাগপুরের গ্রামীণ পুলিশ কয়েকদিন আগে এই নিয়ে ১২০০ পাতার একটি চার্জশিট পেশ করেছে আদালতে। এই চার্জশিটেই বেআব্রু হয়েছে এই বিপজ্জনক জাল অ্যান্টিবায়োটিক চক্র। হরিদ্বারের একটি ভেটেরিনারি মেডিসিন ল্যাবরেটরি এই জাল অ্যান্টিবায়োটিকের উৎস বলে দাবি করা হয়েছে চার্জশিটে। এই ঘটনা দেশের চিকিৎসাব্যবস্থাকে নিঃসন্দেহে দাঁড় করিয়ে দিল এক বড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে। সাধারণ মানুষের মনে তুলে দিল উদ্বেগের ঝড়।

আরও পড়ুন-বদলাপুর, এনকাউন্টার কি আসলে সাজানো গল্প?

তদন্ত রিপোর্ট বলছে, মুম্বই থেকে যোগীরাজ্যের সাহারানপুরে কোটি কোটি টাকা পাঠানো হত এই জাল অ্যান্টিবায়োটিক সংগ্রহের জন্য। টাকা পাঠানো হত হাওলাচক্রের মাধ্যমে। তারপরে সেই নকল ওষুধ গোপন চ্যানেলের মাধ্যমে ঢুকিয়ে দেওয়া হত উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র-সহ বিভিন্ন রাজ্যের নানা সরকারি হাসপাতালে।

আরও পড়ুন-কড়া নিরাপত্তার চাদরে মোড়া হল ভূস্বর্গকে, রাত পোহালেই দ্বিতীয় দফার নির্বাচন

কেমন করে জানা গেল এই জাল অ্যান্টিবায়োটিক চক্রের কথা? গত ডিসেম্বরে কল্মেশ্বরের একটি গ্রামীণ হাসপাতালে প্রথম ধরা পড়ে এই জাল অ্যান্টিবায়োটিক। নীতিন ভান্ডারকর নামে এক হেলথ ইনস্পেক্টর চিহ্নিত করেন এই নকল অ্যান্টিবায়োটিক। রীতিমতো হুলস্থুল পড়ে যায় তা নিয়ে। এরই ভিত্তিতে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সংশ্লিষ্ট ওষুধ সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে দায়ের করে এফআইআর। এরপরেই নাগপুরের গ্রামীণ পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে তদন্তে নামে পুলিশের একটি বিশেষ টিম। ওয়ারধা, থানে সহ মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় একে একে প্রকাশ্যে আসে নকল ড্রাগ চক্র। চিহ্নিত করা হয় চক্রের পান্ডাদের। প্রথমে গ্রেফতার করা হয় হেমন্ত মুলে নামে এক কিংপিনকে। নাগপুরে সরকারি হাসপাতালে ওষুধ সরবরাহের টেন্ডার পেয়েছিলেন এই হেমন্ত। এরপরে পুলিশের জালে পড়ে আরও দু’জন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে হরিয়ানা এবং সাহারানপুরের জাল অ্যান্টিবায়োটিক চক্রের মাথাদেরও পাকড়াও করে পুলিশ।
গেরুয়া শাসিত ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলোতে এই জাল অ্যান্টিবায়োটিক চক্রের রমরমা নিঃসন্দেহে আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল বিজেপির অপদার্থতাকে।

Latest article