কাবুল: তালিবান বদলে গিয়েছে। এবার গোটা বিশ্ববাসী দেখবে তালিবান-২ সরকারকে। ক্ষমতা দখলের পর তারা কারও উপর প্রতিহিংসা দেখাবে না, এমনটাই জানিয়েছিল তালিবান। কিন্তু বাস্তবে ঠিক উল্টোটা ঘটছে। বরং ক্রমশ সামনে আসছে তালিবানের নৃশংস চরিত্র। সোমবার পঞ্জশীর অবজারভার নামে এক সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, জঙ্গিগোষ্ঠীকে সমর্থন না করার কারণে তালিবান এক শিশুকে তার বাবার সামনে খুন করেছে। তালিবানের ধারণা ওই শিশুটির বাবা নর্দান অ্যালায়েন্সের সদস্য। সে কারণেই প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে এভাবে বাবার সামনে এক ছোট্ট শিশুর মাথা কেটে ফেলে জঙ্গিরা।
আরও পড়ুন : কংগ্রেসে কানহাইয়া, জিগনেশ
কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ঘটনার ভিডিও পোস্ট হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, রাস্তার উপর পড়ে আছে একটি শিশুর মূণ্ডুহীন দেহ। গোটা রাস্তা ভেসে যাচ্ছে রক্তে। আশপাশে আরও কয়েকটি শিশু বসে জোরগলায় কাঁদছে। নর্দান অ্যালায়েন্সের হাত থেকে পঞ্জশির কেড়ে নিতে দীর্ঘদিন রাস্তা অবরোধ করে রেখেছিল তালিবান। সেসময় পঞ্জশিরের অনেকেই এলাকা ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। মহম্মদ গোলাম রসুল নামে পঞ্জশিরের বাসিন্দা এক যুবক জানিয়েছেন, তালিবানরা পথচলতি প্রতিটি মানুষকে থামিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে। তারা জানতে চাইছে যে, নর্দান অ্যালায়েন্সের সঙ্গে ওই সমস্ত মানুষের কোনও যোগাযোগ আছে কিনা।
আরও পড়ুন : বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত, দুর্যোগ মোকাবিলায় তৈরি প্রশাসন
নিশ্চিত হতে তারা সকলেরই মোবাইল পরীক্ষা করে দেখছে। কারও মোবাইলে সন্দেহজনক কোনও ছবি বা তথ্য পেলে সঙ্গে সঙ্গেই রাস্তার উপরেই তাকে গুলি করে মারছে। নিজের নাম গোপন করে পঞ্জশিরের আর এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়িতে ৫বার হামলা চালিয়েছে তালিবান। ঘরের সমস্ত বাসনপত্র তছনছ করা হয়েছে। ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে সব আসবাবপত্র। নর্দান অ্যালায়েন্সের সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগ আছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হতেই তালিবানরা এই কাণ্ড করেছে।
পঞ্জশির অবজারভারে বাবার সামনে ছেলে খুন হওয়ার ওই খবর প্রকাশিত হতে গোটা দুনিয়া তার নিন্দা করেছে। তবে নিহত ওই শিশুর বাবা এবং এলাকার কোনও মানুষই ঘটনার পর মুখ খুলছেন না। সকলের চোখেমুখে তীব্র আতঙ্ক। তালিবানের নৃশংসতায় তাঁরা কথা বলার শক্তিটুকুও হারিয়েছেন। তাই আফগানিস্তানের বহু মানুষ অবিলম্বে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন।