প্রতিবেদন : ডাক্তার-আন্দোলন নিয়ে কথা বলতে আমাদের চিঠি দিয়ে বৈঠকে ডেকেছিল যখন, তখন ওই ঘরে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন সরকারের সমর্থক কিছু ডাক্তার। ওঁদের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুললে মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু বলেন, ওরা কাজ করেছে তাই এখানে বসে আছে, আপনারা খুনি। বক্তা প্রাক্তন এসইউসিআই বিধায়ক ও সাংসদ ডাক্তার তরুণ মণ্ডল। বাম জমানার থ্রেট কালচার নিয়ে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য সামনে এনেছেন তিনি। তাঁর কথায়, সেই সময় বৈঠকে যাওয়া ডাক্তারের মধ্যে ২ জন বেরিয়ে এসে বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর করা মন্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। স্বাস্থ্য দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী রামনারায়ণ গোস্বামী বলেন, আমি সিপিএমের বাচ্চা। আন্দোলন কাকে বলে জানি, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের শখ ঘুচিয়ে দেব। এখানেই শেষ নয়, তরুণ মণ্ডল বলেন, আমরা বেআইনি নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুকে বলেছিলাম, যোগ্যদের বঞ্চিত করে ৮৭ জন ডাক্তারকে নিয়োগ করা হয়েছে। তখন জ্যোতিবাবু বলেছিলেন, দলের এত লোক থাকলে কি আপনারা স্ট্রাইক করতে পারতেন? সিপিএম হোক আর যাই হোক, আমি নিয়োগ করব। আমি মনে করি স্ট্রাইক আনজাস্টিফায়েড। আমার হাতে তো কিছু লোক রাখতেই হবে! প্রাক্তন বিধায়ক বলেন, যখন আমরা চাকরির দাবি করেছিলাম, তখন জ্যোতিবাবু বলেছিলেন, সবাইকে চাকরি দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় সবাইকে চাকরি দেওয়া সম্ভব না। আমাদের দাবি ছিল, জীবনদায়ী অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ সরবরাহ করতে হবে। পাশ করা ডাক্তারদের গ্রাম পর্যন্ত চাকরি দিতে হবে। জুনিয়র ডাক্তারদের সামান্য ভাতা বাড়াতে হবে। সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টার ডিউটি নিশ্চিত করতে হবে।
কংগ্রেস আমলে বিল আনা হয়, হাসপাতাল-চত্বরে ধর্মঘটের অধিকার নেই। কিন্তু বাম সরকার বলেছিল, কেন্দ্রের এই বিল মানতে পারব না। কারণ, কারও ধর্মঘট করার অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না। আবার বাম সরকার বলেছে, বাংলায় প্রচুর ধর্মঘট হলেও হাসপাতালকে বাদ রাখা হয়েছে। কোনও হাসপাতালে ধর্মঘট মানা যায় না, থ্রেট কালচারের নমুনা তুলে ধরলেন তরুণ মণ্ডল।
আরও পড়ুন- দুর্গমতম মাউন্ট ভানোতি জয় করলেন শিলিগুড়ির দুই যুবক