প্রতিবেদন : লোকসভার প্রচারপর্বে তিনি যেখানেই গিয়েছেন জনসমুদ্রে ভেসে গিয়েছেন। শনিবারও তার ব্যতিক্রম হল না। এদিন গোয়ালপোখরের জনসভার পর বালুরঘাটের ইটাহারে রোড-শোয়ে কার্যত জনসুনামি দেখল বাংলা। দলীয় প্রার্থী বিপ্লব মিত্রের সমর্থনে এদিন ইটাহারে রোড-শো করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রবল দাবদাহ উপেক্ষা করেই ইটাহারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোড-শোয়ে জনসুনামি।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
শনিবার বালুরঘাটের দলীয় প্রার্থী বিপ্লব মিত্রের সমর্থনে সরাইদিঘি মোড় থেকে পাইকপাড়া মোড় পর্যন্ত রোড-শো করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। আর প্রতিবারের মতো এবারও জনসুনামিতে ভাসল ইটাহারের রাস্তা। প্রার্থী বিপ্লব মিত্র ও মন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে সঙ্গে নিয়ে হুডখোলা ট্যাবলোতে র্যা লি করেন অভিষেক। যতই রোড-শো এগিয়েছে ততই বেড়েছে ভিড়। রোড-শো শেষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সাফ জানিয়ে দেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ১০০ দিনের কাজের টাকা না দিলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা-মাটি-মানুষের সরকার দিয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে আবাসের বাড়ির টাকাও তৃণমূলের সরকারই দেবে, এটা দিদির গ্যারান্টি। মোদির মিথ্যা প্রতিশ্রুতির গ্যারান্টি নয়।
আরও পড়ুন-বাংলার শিক্ষাবিদদের অপমান করলেন আচার্য, তোপ ব্রাত্যর
বালুরঘাটের বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদারকে তুলোধোনা করে অভিষেক বলেন, এখান থেকে জিতেছেন কিন্তু কোনও কাজ করেননি। শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু বালুরঘাটবাসী তাঁকে আর খুঁজে পায়নি গত পাঁচ বছরে। জেতার পর দিল্লিতে গিয়ে বাংলার মানুষের টাকা আটকেছেন। আগামী ২৬ তারিখ বালুরঘাটের ভোট। আপনারা আপনাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে বিপ্লব মিত্রকে জেতান। এরপরই তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এখানে এসেছিলেন সভা করতে। তিনি বাংলার কৃষ্টি, কালচার জানেন না। বেলুড়ঘাট বলে গেছেন। তিনি না হয় বাইরের লোক কিন্তু বাংলার যিনি মঞ্চে ছিলেন তিনি ভুল শুধরে দিতে পারতেন— দেননি। বাংলায় ধর্মের রাজনীতি নয়, কর্মের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। সাফ কথা অভিষেকের।
এরপরই জনসমুদ্রের উদ্দেশ্যে বলেন, যিনি স্বামী বিবেকানন্দকে অসম্মান করেন তাঁকে কি আপনারা নির্বাচিত করবেন? যারা নির্বাচিত হওয়ার পর চিঠি লিখে দিল্লিতে বাংলার টাকা বন্ধ করে তারা কি জিতবে? জনসমুদ্রের উত্তর আসে, না। বাংলা বিরোধীদের উৎখাত করতে হবে, ঘোষণা অভিষেকের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বালুরঘাটের তপন, গঙ্গারামপুর-সহ অনেক জায়গায় তৃণমূল না জিতলেও উন্নয়ন বন্ধ হয়নি, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ হয়নি। আমরা ধর্মের রাজনীতি নয়, কর্মের রাজনীতি করি। মানুষকে পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছি। আপনাদের কাছে আবেদন, এবার কানে শুনে নয়, চোখে দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এদিন বালুরঘাটের সরাইদিঘি মোড় থেকে পাইকপাড়া মোড় পর্যন্ত রাস্তা কার্যত তৃণমূলের দখলে চলে যায়। দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিপুল সংখ্যক স্থানীয় মানুষ। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে দেখতে রাস্তার দু’ধারে উপচে পড়ে উৎসাহী মানুষের ভিড়। হাত নেড়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে স্বাগত-অভিনন্দন জানান উপস্থিত জনতা। অভিষেক প্রত্যুত্তর দেন। হুডখোলা ট্যাবলোর উপর দাঁড়িয়ে গোলাপের পাপড়ি উড়িয়ে দেন উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে। উদ্বেল হয়ে ওঠে জনতা। কার্যত জনসুনামির আকার নেয় ইটাহারের রাস্তা। জনজোয়ারে ভেসেই প্রায় র্যা লি করেন অভিষেক। তৃণমূলের প্রতীক, ব্যানার, বেলুনে বর্ণাঢ্য রোড-শোয়ে উচ্ছ্বসিত তৃণমূলের কর্মী-সর্মথকেরা।