সংবাদদাতা, হুগলি : রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘তাল গাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে, উঁকি মারে আকাশে’…। সেই তালগাছ বসানোর নেশা পেয়ে বসেছে পাণ্ডুয়ার স্কুল শিক্ষক ভাস্কর মণ্ডলকে। ইতিমধ্যেই ৭৫ হাজার তালগাছ লাগানো হয়ে গিয়েছে। এরপর বাঁকুড়ার জয়পুর জঙ্গলেও তালগাছ রোপণের পরিকল্পনা করেছেন ভাস্করবাবু। তবে শুধু তালগাছ নয়, যেকোনও গাছকেই পরিবেশের সবচেয়ে বড় বন্ধু মনে করেন তিনি। তাই ছাত্রদের নিয়ে সেই বন্ধুদের রক্ষা করেন।
আরও পড়ুন-সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী-তে ফোন ৩৬ দিনমজুরের কর্মসংস্থান
পাণ্ডুয়ার রানাগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভাস্কর মণ্ডল। সুন্দরবনে আদিবাড়ি হলেও প্রায় ৩২ বছর আগে পাণ্ডুয়ার উত্তরায়ণ এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। প্রায় ২২ বছর ধরে গাছ লাগানো একটা নেশা ভূগোলের শিক্ষক ভাস্করবাবুর। প্রতি বছর জুন থেকে অক্টোবরের মধ্যে গোটা পাণ্ডুয়া জুড়ে তিনি তাল, বট, অশ্বত্থ, খেজুর, বেল, আম-সহ বিভিন্ন গাছ লাগান। আর তাঁকে এই কাজে সাহায্য করে তাঁরই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা। প্রায় ২০০ জন পড়ুয়াদের নিয়ে ‘নেচারস লাভার ক্লাব’ নামে একটি সংগঠনও করেছেন ভাস্করবাবু।
আরও পড়ুন-বিমান টেকঅফ ও ল্যান্ডিংয়ের সময় জানলা বন্ধ রাখতে হবে যাত্রীদের
পাণ্ডুয়ার অধিকাংশ এলাকা কৃষিপ্রধান। পাণ্ডুয়ার আত্তি মোড় থেকে রানাগড় যাওয়ার পথে সবুজে ঘেরা রাস্তায় অধিকাংশ গাছই ভাস্করবাবু বহুদিন আগে লাগিয়েছিলেন। এখন তীব্র দাবদহে মানুষ সেইসব গাছের শীতল ছায়ায় আশ্রয় নেন। স্থানীয়দের কাছে ভাস্করবাবুর পরিচয় শুধু প্রধান শিক্ষক হিসেবেই নয়, একইসঙ্গে পরিবেশপ্রেমী ও সমাজসেবী হিসেবেও বটে। তবে সব গাছের মধ্যে তালগাছের এত আধিক্য কেন? ভাস্করবাবুর মতে, পাণ্ডুয়ার মতো কৃষিপ্রধান এলাকায় মূল সমস্যা হল, মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে মৃত্যু। গবেষণায় বলছে, মাঠের মাঝে বা আশপাশে যদি তালগাছ থাকে, তাহলে বাজ পড়ে মৃত্যুর আশঙ্কা কমে যায়। এটাই আমার তালগাছ বেশি লাগানোর মূল উদ্দেশ্য।