প্রতিবেদন: শিক্ষকদের সত্যিকারের সম্মান দিন। শুধু মন্ত্রোচ্চারণে লাভ নেই। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পি এস নরসিমহা এবং জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ এক মামলার শুনানির সময় গুজরাত সরকারকে কটাক্ষ করে বলেছে, কেবলমাত্র অনুষ্ঠানমঞ্চে “গুরুব্রহ্মা গুরুর্বিষ্ণু গুরুর্দেবো মহেশ্বরঃ” মন্ত্র উচ্চারণ করলেই চলবে না, বরং শিক্ষকদের প্রতি দেশের দৃষ্টিভঙ্গিতেও এর প্রতিফলন ঘটাতে হবে।
আরও পড়ুন-হিসাব চাইলে হিসাব নাও, মিথ্যে কথা ছড়িও না
গুজরাতের সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে চুক্তিভিত্তিক সহকারী অধ্যাপকদের বেতন সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে বেতন কাঠামো পুনর্বিন্যাস করার নির্দেশ দিয়েছে। আদালত মন্তব্য করে, শিক্ষকদের সম্মানজনক বেতন না দেওয়া মানে জ্ঞান ও বুদ্ধিবৃত্তিক মূলধনের অবমূল্যায়ন করা। একটি জাতি তার জ্ঞানচর্চাকে কতটা মূল্য দেয়, তা নির্ভর করে শিক্ষকদের কীভাবে সম্মান জানানো হচ্ছে, তার উপর। এই প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালত উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, এই পরিস্থিতি গভীরভাবে উদ্বেগজনক যে সহকারী অধ্যাপকরা মাত্র ৩০,০০০ টাকা মাসিক ভাতা পাচ্ছেন। রাজ্য সরকারকে অবিলম্বে এই বিষয়ে উদ্যোগ নিয়ে শিক্ষকদের দায়িত্ব ও কাজের পরিপ্রেক্ষিতে উপযুক্ত বেতন কাঠামো নির্ধারণ করতে হবে। ‘সমান কাজের জন্য সমান বেতন’ নীতির উপর জোর দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে গুজরাত হাইকোর্টের নির্দেশকে সমর্থন জানিয়েছে। বলা হয়েছে, যাতে চুক্তিভিত্তিক সহকারী অধ্যাপকদের জন্য অন্ততপক্ষে নির্ধারিত বেতন কাঠামো অনুযায়ী বেতন দেওয়া যায় তা দেখুক রাজ্য সরকার। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১২ সাল থেকে চুক্তিভিত্তিক সহকারী অধ্যাপকদের বেতন অপরিবর্তিতভাবে ৩০,০০০ টাকাই রয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন-সাইকোপ্যাথি ও অক্সিটোসিন
অন্যদিকে, অস্থায়ী পদে নিযুক্ত অন্যদের বেতন ২০১২ সালে ৩৪,০০০ টাকা থেকে বেড়ে ২০২৫ সালে হয়েছে ১,১৬,০০০ টাকা এবং স্থায়ী পদে নিযুক্তরা ২০১২ সালে ৪০,৪১২ টাকা যে বেতন পেতেন তা ২০২৫ সালে বেড়ে হয়েছে ১,৩৬,৯৫২ টাকা। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে শিক্ষাবিদ, প্রভাষক ও অধ্যাপকদের জাতির ‘বুদ্ধিবৃত্তিক মেরুদণ্ড’ হিসেবে অভিহিত করে বলা হয়েছে, তাঁরা শুধু পাঠদানই করেন না, বরং সমাজে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা গড়ে তোলা এবং মূল্যবোধ গঠনের মাধ্যমে জাতি গঠনে বিশাল ভূমিকা রাখেন। সর্বোচ্চ আদালতের মন্তব্য, আমরা শিক্ষকদের ভূমিকাকে যথাযথ সম্মান জানাই
এবং তাঁদের প্রতি যাতে প্রকৃত সম্মান দেখানো হয় তা নিশ্চিত করার
নির্দেশ দিচ্ছি।