ডবল ইঞ্জিন প্রশাসনের সিদ্ধান্তে নারকীয় যন্ত্রণার শিকার কিশোরী। ভয়ঙ্কর নারী নির্যাতনের অভিযোগ উঠল বিজেপির মধ্যপ্রদেশ (Madhya Pradesh) থেকে। মধ্যপ্রদেশের পান্না জেলাতে ১৫ বছরের কিশোরীকে জোর করে ধর্ষকের বাড়িতে পাঠাল প্রশাসন। কিন্তু তার পরিণতি হল ভয়ানক। সেখানে ফের ওই কিশোরীকে অভিযুক্ত ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্বাভাবিকভাবেই এমন এক নির্মম ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আরও পড়ুন-”বাড়ির পোমেরেনিয়ান কুকুর”, মহিলা পুলিশ সুপারকে কুকথা বিজেপি বিধায়কের, নিন্দার ঝড়
পান্না জেলার শিশুকল্যাণ দফতর দায়িত্ব নিয়ে মেয়েটিকে অভিযুক্ত ধর্ষকের বাড়িতে পাঠায় এবং তারপরেই নির্যাতনের চরম সীমায় পৌঁছয় অভিযুক্তের আচরণ। ছতরপুর পুলিশের তরফে ১০ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এফআইআর দায়ের হয়েছে শিশুকল্যাণ কমিটির চেয়ারম্যান, সদস্য এবং শীর্ষ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে। এই বছরের ১৬ জানুয়ারি ১৫ বছরের ওই কিশোরী স্কুল যাওয়ার পথে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায়। অনেক রাত পর্যন্ত খুঁজে না পেয়ে মেয়ে নিখোঁজ বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। এক মাস কেটে যায় তারপর। ১৭ ফেব্রুয়ারি হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে মেয়েটির সন্ধান পাওয়া যায় এবং অন্য গ্রামের এক যুবকেরও সন্ধান পায় পুলিশ।
আরও পড়ুন-‘প্রাক্তন শিক্ষিকা’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সম্মাননা ভবানীপুর মডার্ন স্কুলের, আপ্লুত মুখ্যমন্ত্রী
অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন থেকে শিশু-সুরক্ষার POCSO ধারায় মামলা দায়ের হয়েছিল। সাথে অপহরণ এবং ধর্ষণের মামলাও যুক্ত করা হয়। প্রথমে পান্নার কোতোয়ালি থানায় তাঁকে রাখা হলেও পরে জেল হয়। এরপর জাঝর নগরের জেলে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী ওই কিশোরীকে শিশুকল্যাণ কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হয়। হোমে রেখে কাউন্সেলিং করানোর কথা হয়। প্রথমে পান্নার ওয়ান স্টপ সেন্টারে রাখা হয় কিশোরীকে কিন্তু হঠাৎ করেই নিয়ম-কানুন এর তোয়াক্কা না করে কিশোরী মেয়েটিকে এক দিদির বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। জানা যায়, সেই মহিলা সম্পর্কে অভিযুক্ত ধর্ষকের বৌদি। সেখানে থাকাকালীন অভিযুক্ত ধর্ষক জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরে আবার ওই কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। ফের গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, নির্যাতিতাকে কারও বাড়িতে পাঠানোর আগে সবদিক খতিয়ে দেখা হয় কিন্তু বিজেপি রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ দফতর থেকে রিপোর্ট পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয় নি। প্রশাসনের এই চূড়ান্ত গাফিলতির কারণে নারকীয় অত্যাচারের শিকার হতে হয় ওই কিশোরীকে।
আরও পড়ুন-বিজেপি দেশের লজ্জা! বিধানসভায় গেরুয়া বিধায়কদের বিশৃঙ্খলায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী
ঘটনার কথা জানতে পেরে মেয়েটির পরিবারের তরফে তাঁকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হয়। তবে তাতেও কাজ হয় নি। অবশেষে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। জেলাশাসক বিষয়টি জানতে পেরে শিশুকল্যাণ কমিটিকে নিজেদের সিদ্ধান্ত বিবেচনা করতে বলেন। বিপদ বুঝে নিজেদের গাফিলতি ঢাকতে ২৯ এপ্রিল শিশুকল্যাণ সমিতি মেয়েটিকে আগের হোমে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। কাউন্সেলিং এর সময় মনোবিদকে নির্যাতনের কথা বলেন ওই কিশোরী। তখনই এই দ্বিতীয় দফায় ধর্ষণের ঘটনা জানা যায়। কিন্তু এতকিছুর পরেও বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।