প্রতিবেদন : আইনসভা ও প্রশাসনের পর এবার বিচারবিভাগকেও কুক্ষিগত করতে মরিয়া নরেন্দ্র মোদি সরকার। সেই কারণে বিভিন্ন হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগের ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে সংঘাত জিইয়ে রেখেছে কেন্দ্র। উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগকে ঘিরে এই দ্বন্দ্ব আরও তীব্র হয়েছে। প্রচলিত কলেজিয়াম ব্যবস্থা বদলানোর লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিচারবিভাগের সঙ্গে দড়ি টানাটানিতে নেমেছে মোদি সরকার। সুপ্রিম কোর্টের এক্তিয়ার নিয়ে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলছেন দেশের আইনমন্ত্রী ও শীর্ষ পদাধিকারীরা। এই প্রেক্ষাপটে দেশের সংবিধানের ক্ষমতা সম্পর্কে স্পষ্টভাবে কেন্দ্রকে বার্তা দিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় (DY Chandrachud।) বুঝিয়ে দিলেন, কোনও অবস্থাতেই সংবিধানের মূল কাঠামোকে পরিবর্তন করা যাবে না। এক অনুষ্ঠানে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, সংবিধানের মূল কাঠামো তাঁদের কাছে ধ্রুবতারার মতো। একে বদলানোর চেষ্টা করে লাভ নেই।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে জীবন সিং? বাংলা ভাগের গভীর চক্রান্ত
মুম্বইয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী ননী পালকিওয়ালা স্মারক বক্তৃতায় দেশের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় (DY Chandrachud) বলেন, সংবিধানের ‘বেসিক স্ট্রাকচার’ বা মূল কাঠামো তাঁদের কাছে ধ্রুবতারার মতো। অন্ধকারে যখন চলার পথ ঢেকে যায় তখন সংবিধানের মূল কাঠামোই দিকনির্দেশ করে। সংবিধানের মূল কাঠামোকে কেন্দ্র করেই যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা, ধর্মনিরপেক্ষতা, ক্ষমতার বিভাজনের মতো বিষয় নির্ধারিত হয়। সংবিধানের মূল কাঠামোকে কখনওই বদলানো যায় না।
প্রসঙ্গত, বিচারবিভাগে হস্তক্ষেপের চেষ্টায় মোদি সরকারের কৌশল অনুসারে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় সংবিধানের মূল কাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। ১৯৭৩ সালে এক মামলায় সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছিল, সরকার সংবিধান সংশোধন কিংবা পরিবর্তন করতে পারলেও তার মূল কাঠামো কখনওই বদল করতে পারবে না। বিজেপির রাজনৈতিক লক্ষ্যে পরিচালিত ধনকড় সুপ্রিম কোর্টের ওই নির্দেশ মানতে রাজি নন। তিনি ঘুরিয়ে প্রশ্ন তোলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠতায় নির্বাচিত সরকার কেন সংবিধান সংশোধন করতে পারবে না? তবে ধনকড়ের বক্তব্য উড়িয়ে দিয়ে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় স্পষ্টই বুঝিয়ে দিয়েছেন, সরকারের যতই সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকুক, সংবিধানের মূল কাঠামোয় হাত দেওয়ার অধিকার তাদের নেই।