ভোটে হারতেই শুরু বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি, বাংলা ভাগের চক্রান্ত

শুধু তাই নয়, বাংলা ও বিহারের কয়েকটি জেলা নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে এনআরসি চালু করে সংখ্যালঘুদের আলাদা করার কথাও বলেছেন।

Must read

প্রতিবেদন : ভোটে গোহারা হেরে নির্লজ্জ চক্রান্ত শুরু করেছে বিজেপি। বঞ্চনা তো ছিলই। সিবিআই-ইডির হামলা হচ্ছে যখন-তখন। তা সত্ত্বেও লোকসভা ভোটে মুখ থুবড়ে পড়ার পর নতুন করে চক্রান্ত শুরু করেছে বাংলা বিজেপির নেতারা, সঙ্গে দোসর দিল্লির কেউকেটা মন্ত্রী-সাংসদরা। শুরু করেছিলেন বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ জন বার্লা। তারপর তাঁকে সমর্থন করেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। এরপর একই কথা শোনা যায় বিজেপি সাংসদ অনন্ত মহারাজের মুখেও। তাতে এই দাবিকে আরও উসকে দেয় বিজেপির ট্রেনি সভাপতি ও মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। বৃহস্পতিবার সংসদে দাঁড়িয়ে বিজেপির নিশিকান্ত দুবে সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে সরাসরি সংখ্যালঘুদের টার্গেট করে বাংলা ভাগের কথা বলেছেন। শুধু তাই নয়, বাংলা ও বিহারের কয়েকটি জেলা নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে এনআরসি চালু করে সংখ্যালঘুদের আলাদা করার কথাও বলেছেন।

আরও পড়ুন-বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত পুণে-মুম্বই, মৃত্যু ৬, লাল সতর্কতা, জলবন্দিদের উদ্ধারে এয়ারলিফ্‌ট

এই চক্রান্ত, এই উসকানি যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলায় হেরে গিয়ে বাংলার সর্বনাশ করার বিজেপি নেতারা দিল্লি নেতাদের সঙ্গে নিয়ে চক্রান্ত শুরু করেছে। সুকান্তর উসকানির প্রতিবাদে তৃণমূল কংগ্রেস জবাব দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার আরও কড়া ভাষায় এর বিরোধিতা করেন তৃণমুল সাংসদরা। বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় বলেন, খুবই খারাপ। নির্বাচনে হেরে গিয়ে বিজেপি এই ধরনের অবান্তর কথা বলছে। এভাবে তো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে দেবে। লড়াই বেধে যাবে। এই প্রস্তাব মেনে নেওয়ার প্রশ্নই নেই। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোপ, বিজেপির কোন নেতা আছে বাংলায় গিয়ে বলুক না বাংলা ভাগ করতে। তারপর ফিরতে পারবে কি না দেখুক! দেড় বছরের মধ্যে সরকার পড়ে যাবে আবার বড়বড় কথা বলছে। আইন বলছে, আগে রেজোলিউশন পাশ করতে হয়। তারপর কেন্দ্রীয় সরকার এটাকে কনসিডার করবে। কেন্দ্র সুয়োমোটো করতে পারে না। এরা আইন জানে না। সবাই জানে বিজেপি বাংলা বিরোধী, বাঙালি বিরোধী।
লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিজেপি বাংলা ভাগের কথা বলছে। উত্তরবঙ্গে ওদের যেটুকু অস্তিত্ব রয়েছে, এরপর সেটাও থাকবে না।

আরও পড়ুন-‘স্টুপিড’-এর জের, লোকসভায় প্রথম ভাষণেই স্পিকারের ভর্ৎসনার মুখে অভিজিৎ

প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, পশ্চিমবঙ্গ শান্তি-সম্প্রীতির রাজ্য। এর একটা আলাদা ঐতিহ্য আছে। বাংলায় আলাদাভাবে হিন্দু, আলাদাভাবে মুসলিম, আলাদাভাবে খ্রিস্টান এভাবে চলে না। এখানে ইদ-দুর্গোৎসব সকলে মন থেকে পালন করেন। উদাহরণ দিতে গিয়ে কুণাল বলেন, ধরা যাক, মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্র। সেখানে গোটাটাই হিন্দু। এক পার্সেন্ট তো সংখ্যালঘু ভোট ছিল না। তাহলে হারল কেন? হিন্দুদের ভোটেই বিজেপি হারছে। ৬২ হাজার ৩১২ ভোটে হেরেছে মানিকতলা। ওরা ভেজাল হিন্দু। হিন্দুত্বের বিকৃত মার্কেটিং করতে গিয়ে বিজেপি সমাজের ক্ষতি করছে। ভারতীয় জনতা পার্টি হিন্দু-মুসলমান-খ্রিস্টান কারওর বন্ধু নয়।
আসলে বিজেপির রাজনীতির কোনও লক্ষ্য নেই। বাংলায় দাঁত ফোঁটাতে না পেরে ধ্বংসাত্মক রাজনীতি বেছে নিয়েছে। যেখানেই ভোটে হেরে যাচ্ছে সেই রাজ্যগুলিকে ভাঙচুর করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করে দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে। যেখানে এসব কাজ করছে, বুঝতে হবে সেখানে ওদের কোনও সংগঠন নেই। আসলে বাংলায় বিজেপি হেরে যাওয়ার পর নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এই উসকানির কাজ শুরু করেছে।
একইভাবে সিপিএম জমানায় পাহাড় উত্তপ্ত থাকত। মানুষ শৈলশহরে যেতে পারতেন না। এই সময় উসকানি দিয়ে গিয়েছে বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেস আসার পর পাহাড়ের পরিস্থিতি ৩৬০ ডিগ্রি বদলে গিয়েছে।

Latest article